আখালিয়া বিজিবি মাঠে বসেছে সিলেটের সর্ববৃহৎ পশুর হাট
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ৮:০১ অপরাহ্ণ
মো. ওলিউর রহমান :
সিলেট নগরীর উপকণ্ঠ আখালিয়াস্থ বিজিবি মাঠে সিলেট বিভাগের সর্ববৃহৎ পশুর হাট বসেছে। বিজিবির সার্বক্ষণিক সহযোগিতায় এ হাটে নজর এখন পুরো সিলেটবাসীর।
পবিত্র ঈদুল আযহার এখনো ৫ দিন বাকি থাকলেও এবারই প্রথম বিজিবির বিশাল মাঠে বসেছে এ পশুর হাট। সিলেটে দু’চারটি পশুর হাট ছাড়া অধিকাংশ হাটই অবৈধ ও যত্রতত্রভাবে বসে প্রতিবছর। অনেক হয়রানির শিকারও হন ক্রেতা-বিক্রেতারা। অনেক অবৈধ হাটে জোর করে পশুবাহী যানবাহন আটকিয়ে নামিয়ে দেওয়া হতো গরু-ছাগল। কিন্তু এবার সরাসরি বিজিবি’র সহযোগিতায় আখালিয়ায় পশুর হাট বসায় নির্বিঘেœ গরু-ছাগল ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে বলে মনে করছেন অনেকে।
ইতোমধ্যে পশুর হাটে দেশি-বিদেশী পশুর সমাগম ঘটেছে। ৩০-৩৫ হাজার টাকা থেকে ৩ লাখ টাকা মূল্যের পশু এ হাটে এসেছে। ক্রেতারাও যাচাই-বাছাই করছেন দরদাম। গতকাল এমন চিত্রই দেখা গেছে সিলেটের সর্ববৃহৎ এ হাট ঘুরে।
সরজমিনে দেখা যায়- বিজিবির বিশাল মাঠে বসেছে গরু ছাগলের এ হাট। পুরো মাঠে ইট বিছিয়ে মাঠকে কাদামুক্ত করা হয়েছে। টিনশেডের ঘর তৈরিসহ পুরো মাঠে বাশ দিয়ে গরু বেঁধে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমদানিকারকরা বিশালাককৃতির গরু সারিবদ্ধভাবে বেঁধে রেখে ক্রেতাদের সাধে দরদাম করছেন। আয়োজকদের সুষ্ঠুু ব্যবস্থাপনা নিয়ে তারা সন্তুষ্ট। সরাসরি বিজিবি তত্ত্বাবধানে থাকায় হয়রানির চিন্তাও নেই তাদের। মাঠে গরু প্রবেশ করলেও দিতে হচ্ছে না কোন ধরনের টাকা।
গরু পাইকাররা জানান-কুষ্টিয়া, নাটোর, বগুড়া, দিনাজপুর, পাবনা, রাজশাহী, পঞ্চগড়, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইলসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ট্রাকভর্তি এসব গরু তারা নিয়ে এসেছেন। সিলেট অঞ্চলের সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জেরও গরু রয়েছে। আসার পথে কোন ধরনের বিপত্তির মধ্যে পড়তে হয়নি বলেও তারা জানান।
আখালিয়ার স্থানীয় বাসিন্দা লিয়াকত আলী জানান- ঘরের পাশে বিশাল এ পশুর হাট বসায় বেশ ভালো লাগছে। কারণ অনেক হাটে গিয়ে হয়রানির শিকার হতে হয়। এখানে সরাসরি যেহেতু বিজিবি তত্ত্বাবধানে থাকবে, তাই আশা করছি কোন ধরনের হয়রানির সম্মুখিন হতে হবে না। তাছাড়া যেহেতু বিশাল হাট, তাই একটু যাচাই-বাছাই করে কুরবানির জন্য গরু কেনা যাবে।
হাট ইজারাদার সৈয়দ আলতাফুর রহমান জানান-ঈদের দিন পর্যন্ত বিজিবি’র কাছ থেকে মাঠ আমরা ইজারা নিয়েছি। এখানে সরাসরি বিজিবির সহযোগিতা রয়েছে। সিলেট বিভাগের মধ্যে এ হাট সবচেয়ে বড়। আমরা ক্রেতা-বিক্রেতার যাতে কোন অসুবিধা না-হয়, তার জন্য সব ব্যবস্থা করেছি। নিরাপত্তার স্বার্থে সার্বক্ষণিক ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসিয়েছি। জালনোট সনাক্তকরণ মেশিন, লেনদেনের সুবিধার্থে ব্যাংক বুথ, বিকাশ বুথ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া আমাদের শক্তিশালী স্বেচ্ছাসেবক কর্মী রয়েছে। পুরো মাঠে ত্রিপল ও টিনের ছাউনি করা হয়েছে।
এছাড়া সার্বক্ষণিক বিদ্যুতের পাশাপাশি স্ট্যান্ডবাই জেনারেটর, পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি, বাথরুম-টয়লেট, গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আমরা চাই শান্তিপূর্ণভাবে সুলভ মূল্যে ক্রেতারা এখান থেকে পশু ক্রয় করে নিয়ে যাবেন। যেহেতু সিলেটের সর্ববৃহৎ হাট এটি, তাই ক্রেতা-বিক্রেতার কোন অসুবিধা যাতে না-হয়, সেদিকে আমরা সচেষ্ট থাকবো।