ছুটি নিয়ে ভোটকেন্দ্রে, ভোট দিতে না পেরে আক্ষেপ প্রতিবন্ধী নজরুলের
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ মে ২০২৪, ১:০৬ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্কঃ
মো. নজরুল ইসলাম। শারীরিক প্রতিবন্ধী নজরুল প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করেও ভোট দিতে পারেননি। সিঁড়ি বেয়ে দো’তলায় উঠতে না পারায় ভোট না দিয়েই বাড়ি ফেরেন তিনি। অথচ উপজেলা নির্বাচনে ভোট দেবেন বলে ছুটি নেন তিনি।
ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার সিংহেশ্বর গ্রামের বাসিন্দা মো. নজরুল ইসলাম বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় ফুলপুরের সিংহেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয় বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে ভোট দিতে যান। জন্ম থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী নজরুল কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট দিতে ছুটি নিয়ে বাড়ি আসেন তিনি। কিন্তু সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর পৌনে ১২টা পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রটির সামনে একটি অটোরিকশায় অবস্থান করেও ভোট দেওয়ার সুযোগ পাননি তিনি। তৃতীয়তলা বিশিষ্ট ভোটকেন্দ্রটির দ্বিতীয় তলায় ভোট কক্ষে ছিল তার ভোট দেওয়ার বুথ। কিন্তু ভোট কক্ষে হুইল চেয়ার নিয়ে যাওয়ার সুযোগ না থাকায় ভোট দেওয়ার সুযোগ পাননি তিনি।
নজরুল ইসলাম জানান, ভোট দেওয়ার সুযোগ চেয়ে প্রিসাইডিং অফিসার থেকে শুরু করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, কিন্তু সুযোগ মেলেনি। পৌনে ১২টার দিকে জানানো হয় আমার ভোট নেওয়া সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, ‘একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতেই এসেছিলাম। ভোট দেওয়ার চেষ্টা করলেও যথাযথ কর্তৃপক্ষের অসহযোগিতার কারণে আমি ভোট দিতে পারিনি।’
ভোট দিতে না পারার আক্ষেপ নিয়ে নজরুল বলেন, ‘২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে একজন সফল প্রতিবন্ধী ব্যক্তি হিসেবে সম্মাননা পেয়েছিলাম। এখানে এসে মনে হচ্ছে, আমার সেই সফলতাটা দুমড়ে-মুচড়ে যাচ্ছে। আমি আমার প্রাথমিক গণতান্ত্রিক অধিকারও প্রয়োগ করতে পারলাম না। বিষয়টি খুবই হতাশার। এই কষ্টকে বুকে নিয়ে আমি দাবি জানাতে চাই, আমাদের মত যারা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন প্রতিবন্ধী মানুষ তাদের জন্য যেন এ ধরনের নির্বাচনে বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়। জাতির উন্নয়নে আমরাও অংশগ্রহণ করতে চাই।’
সিংহেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয় বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘শারীরিক প্রতিবন্ধী ভোটার আসার পর আমি নিচে গিয়ে তাকে রিসিভ করি। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে নিচতলার ভোট কক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। দুই জন আনসার সদস্য কোলে করে তাকে ভোট কক্ষে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থাও করেছিলাম। কিন্তু ভোটার বাইরে অটো রিকশায় বসেই ভোট দিতে চান। কিন্তু নির্বাচন কমিশন নির্দেশনা অনুযায়ী এটির সুযোগ না থাকায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়া যায়নি।’
ফুলপুরের সিংহেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয় বন্যাআশ্রয় কেন্দ্রে মোট ভোটার ৩ হাজার ৬৪৮। দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ কেন্দ্রে ভোট কাস্টিং হয়েছে ৬৩৯ ভোট, যা মোট ভোটের প্রায় ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ।