মৌলভীবাজারে হোটেল শ্রমিক হত্যায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ জুন ২০২৩, ১০:৪৬ অপরাহ্ণ
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি ::
মৌলভীবাজারের কুসুমবাগে খানদানী রেস্টুরেন্টের শ্রমিক তানিম হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন।
সোমবার (২৬ জুন) বিকেলে মৌলভীবাজারের চৌমহনার কার্যালয় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহর এলাকা প্রদক্ষিণ করে এসআর প্লাজার সামনে সমাবেশ করে সংগঠনটি।
হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি তারেশ চন্দ্র দাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাস, হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মোঃ মোস্তফা কামাল, সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহিন মিয়া।
সভায় বক্তারা বলেন- কিশোর তানিম ৩ মাসে আগে শহরের খানদানী রেষ্টুরেন্টে কাজ নেয় পরিবারের অভাব অনটনের একটু সাহায্য করার আশায়। আর সেই তানিমকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হলো।
শনিবার ২৪ জুন তানিমকে লাঠি দিয়ে নির্মমভাবে অত্যাচার করার পর মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নাম মাত্র চিকিৎসা দিয়ে তাকে হোটেলে এনে তালাবদ্ধ করে আটকে রাখা হয়। এমনকি তার পরিবারের সদস্যদের সাথেও যোগাযোগ করতে দেওয়া হয় না।
এরপর তার অবস্থা আরও খারাপ হলে তাকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে নেওয়া হলে রবিবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়। ঈদের ঠিক আগ মুহুর্তে তানিমকে হারিয়ে বাবা মাসহ পরিবারের সদস্যরা পাগল প্রায়।
এ ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার এবং আরও ক’জনের নাম গণমাধ্যমে আসলেও হোটেল মালিকপক্ষ এখনো আড়ালে। এমনকি ঘটনার পর থেকে মালিকপক্ষ রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে আড়ালে চলে গেছেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় মালিকপক্ষ কোনভাবেই দায় এড়াতে পারেন না। কারণে প্রতিষ্ঠানে সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ ও শ্রমিকের সার্বিক নিরাপত্তা প্রদানের দায়িত্ব মালিকপক্ষের।
তাছাড়া বাংলাদেশ শ্রমআইনের ৪১ ধারায় দৈনিক ৫ ঘন্টার অধিক এবং সন্ধ্যা ৭ টা থেকে সকাল ৭ টায় পর্যন্ত কিশোর শ্রমিককে দিয়ে কাজ করানো নিধিদ্ধ হলেও খানদানী রেস্টুরেন্ট মালিকপক্ষ তা লঙ্ঘন করে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছেন। এমন কি উক্ত প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ শ্রমিক শিশু-কিশোর। মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকের দায়হীনতাও কারণে তানিমের মৃত্যু ত্বরাণ্বিত হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ক্ষধার জ্বালায় কাজ করতে গিয়ে আর কত শ্রমিককে এভাবে অকালে প্রাণ দিতে হবে? বক্তারা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে মালিকপক্ষ, মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ও হত্যাকান্ডে যাদের নাম এসেছে তাদের সকলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দোষীদের দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি ও তানিমের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপুরণ প্রদানের পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে সকল শ্রমিকের নিরাপত্তার দাবি জানান।