লকডাউনের মধ্যে কুলাউড়ায় কালিটি চা বাগানের শ্রমিকরা সাত কি: মি: হেটে ভুখা মিছিল করল!
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ এপ্রিল ২০২০, ১১:০৪ অপরাহ্ণ
স্বপন দেব, মৌলভীবাজার:
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় কালিটি চা বাগানের চা শ্রমিকরা রোববার( ১৯ এপ্রিল) প্রায় সাত কিলোমিটার ‘ভুখা লং মার্চ’ করে কুলাউড়া শহরে এসে রাস্তা অবরোধ করে রাখে প্রায় এক ঘণ্টা। তাদের দাবির সাথে একাত্মতা জানালো পার্শ্ববর্তী দুটি চা বাগানের শ্রমিকরাও। কয়েক বছর থেকে অনিয়মিত মজুরি ও সুবিধাবঞ্চিত কালিটি চা শ্রমিকদের টানা তিন মাসের (১২ সপ্তাহ) মজুরি ছাড়াও বকেয়া পাওনা জমে আছে। এই করোনার সময়েও চা বাগানের কাজ বন্ধ নেই। তারাও কাজ করে যাচ্ছে । তাদের আশা এই বুঝি পেয়ে যাবে তাদের বকেয়া সব পাওনা । কিন্তু কালিটি চা বাগান কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের পাওনা টাকা প্রদানে প্রশাসনের নিকট বারবার কথা দিয়েও টাকা না দেয়ায় পরিস্থিতি দিনদিনই খারাপ হচ্ছে। শ্রমিকরা পেটে ক্ষুধা নিয়ে রোদে পুড়ে রাস্তায় মিছিল করছেন। উল্লেখ্য, গত বুধবার বাগানের অফিসের সামনে শ্রমিকরা এই দাবিতে ভুখা মিছিল নিয়ে মানববন্ধন করেছে।
এ বিষয়ে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরী বলেন, ওই বাগানের শ্রমিকদের পাওনা আদায়ে জন্য আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মালিক পক্ষের সাথে এশাধিক বার যোগাযোগ করেও সমস্যাটির সমাধান করতে পারছিনা। বিষয়টি আমি লিখিতভাবে জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যে মানবিক কারণে জেলা ও উপজেলা পক্ষ থেকে ওই বাগানের ৫৫০টি শ্রমিক পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। তাছাড়া বিশেষ কর্মসূচির আওতায় কালিটি বাগানের শ্রমিক পরিবারগুলোর আর্থ সামাজিক উন্নয়নের জন্য সরকারের তরফ থেকে প্রায় বিশ লাখ টাকার কর্ম পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। যা অতিশীঘ্র শ্রমিক পরিবারগুলো পাবে। তবে বহিরাগত কোন শ্রমিক নেতার ইন্দনে দেশের এই ভয়াবহ পরিস্থিতে শ্রমিকরা মিডিয়া কভারেজ পাওয়ার জন্য রোববার প্রশাসনের আহব্বান উপেক্ষা করে উপজেলা সদরে যে মিছিল নিয়ে আসলো তা কতটুকু যৌক্তিক? প্রশাসন তো মালিকের কাছ থেকে জোড়পূর্বক টাকা আদায় করে চা শ্রমিকদের দিতে পারবেনা। এটা শ্রমিকদেরও বুঝতে হবে। তাছাড়া শ্রমিকরা পাওনা আদায়ের জন্য মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দিয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে জেলায় লকডাউন চলমান থাকার পরও শ্রমিকরা সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে মিছিল করাটা আইনের পরিপন্থি। তবুও মানবিক কারণে আমরা এখনও কোন আইনি ব্যবস্থা নেইনি। তবে আগামীতে এধরণের কর্মকান্ড করলে কঠোর আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে। শ্রমিকদের হঠকারি কাজের জন্য গোটা এলাকার জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে ফেলা যাবেনা।