জগন্নাথপুরে শ্রমিক সংকট, ধান কাটছে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ এপ্রিল ২০২০, ১২:৪৪ পূর্বাহ্ণ
জগন্নাথপুর প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার মইয়ার হাওরে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে এবার কৃষি শ্রমিক সংকট থাকায় অনেক কৃষক জমির পাকা ধান কাটতে পারছেন না। এ অবস্হায় ধান কাটায় মাঠে নেমেছেন গ্রামের স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। গত সোমবার উপজেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম হাওর মইয়ার হাওর ঘুরে একাধিক জমিতে স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের ধান কাটার দৃশ্য দেখা যায়।
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে প্রতিবছর বোরো ধান কাটার মৌসুমে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কৃষি শ্রমিকরা জগন্নাথপুরে আসতেন। করোনাভাইরাসের কারণে এবছর এখনো কৃষি শ্রমিক না আসায় অনেক কৃষক জমির পাকা ধান নিয়ে বেকায়দায় পড়েন।মইয়ার হাওরের কৃষক চন্দন গোপ জানান,আমি এবার ১৪ কেদার ৩০ শতাংশে এক কেদার জমিতে বোরো আবাদ করেছি। তারমধ্যে ছয় কেদার জমির ব্রি-২৮ ধান জমিতে পেকে রয়েছে। প্রতি বছর কোম্পানিগঞ্জ থেকে আমার ১৫ জন শ্রমিক আসতো এবার করোনাভাইরাসের কারণে শ্রমিকরা আসতে পারবে না বলে জানিয়েছেন। তাই পাকা ধান নিয়ে বেকায়দায় পড়ি।
এঅবস্হায় গ্রামের কলেজ পড়ুয়া ১৫ জন শিক্ষার্থী স্বইচ্ছায় আমার জমির ধান কেটে দিতে রাজি হয়। তাদেরকে নিয়ে আমি আজ সোমবার দুই কেদার জমির ধান কেটেছি।
ধানকাটার সময় কথা হয় সিলেট মদন মোহন কলেজের শিক্ষার্থী দিপন গোপ এর সঙ্গে তিনি জানান, করোনা পরিস্হতিতে কলেজ বন্ধ থাকায় আমরা এখন অবসর সময় কাটাচ্ছি। তাই স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে কৃষি শ্রমিক হিসেবে কাজ করে ধান কাটছি। তিনি বলেন, আমি ১৫ জনের একদল ধান কাটার কাজ করছি। সবাই বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী।পারিশ্রমিক হিসেবে কৃষক খুশিযাত্রাপাশা গ্রামের বাসিন্দা কৃষক বকুল গোপ বলেন, আমাদের গ্রামের স্কুল, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা ধান কেটে কৃষকদের সহায়তা করছে যা ভালো উদ্যাগ।
জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শওকত ওসমান মজুমদার বলেন জগন্নাথপুরে ২০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। ধান কাটা শুরু হয়েছে। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের ধান কাটার উদ্যাগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় হয়ে যা দিবেন তাতে আমরা সন্তোষ্ট।কোন কৃষক বেকায়দায় পড়লে টাকা না দিলে আমরা ধান কেটে দেব।
হাওরে কথা হয় জগন্নাথপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী জয় গোপের সঙ্গে। জয় জানান,তার সাথে ১২ জনের একদল শিক্ষার্থী ও কয়েকজন ব্যবসায়ী রয়েছেন। তাঁরা কৃষক রঞ্জু গোপের ধান কাটছেন।
রঞ্জু গোপ জানান, তিনি ৪০ কেদার জমিতে বোরো আবাদ করেছেন। শ্রমিক না আসায় দুশ্চিন্তায় ভূগছেন। শিক্ষার্থীদের পেয়ে তিন কেদার জমির পাকা ধান কেটেছেন।