শ্রীমঙ্গলের হাট-বাজারে মানুষের ঢল, বাড়ছে করোনা ঝুঁকি
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ এপ্রিল ২০২০, ৬:৪৬ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার মানুষদের কিছুতেই ঘরে বন্দী করে রাখতে পারছে না প্রশাসন। কারণে-অকারণে শহরের রাস্তায় বেড়িয়ে পড়ছে মানুষ। উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের ছোট, বড় বাজার গুলোতেও মানুষের ঢল নেমে পড়ে। এতে করে ঝুঁকি বাড়ছে কমিউনিটি ট্রান্সামিশনের।
এদিকে, গত তিন ধরে করোনা আক্রান্ত জেলা গুলো থেকে মানুষ যাচ্ছে শ্রীমঙ্গলে। তারা কেউ উঠছেন নিজের বাড়ি, কেউবা আত্মীয়ের বাড়ি।
দোকান খোলা রাখা, রাস্তায় গাড়ি নিয়ে বের হওয়া, অযথা ঘোরাফেরা করার অপরাধে প্রতিদিনই ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমারা করা হচ্ছে। তবে কিছুতেই কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না।
সারা শহড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে রিক্সা, গাড়ি, মোটরসাইকেল, টমটম। লুকিয়ে লুকিয়ে খোলা রাখা হচ্ছে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও চায়ের দোকান। সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না এসব গাড়িতে বহন করা যাত্রীদের। একই সাথে শহড়তলীর কিছু চায়ের দোকানে সামাজিত দূরত্ব না মেনে ভিড় করছে মানুষেরা। একই চিত্র শহরের কাঁচা বাজার ও মাছ বাজারে।
গত তিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষের ফেসবুকে পোস্ট থেকে জানা যায়, রাধানগড় গ্রামে ৩ জন, পূর্বাসা আবাসিক এলাকায় ১ জন, লালবাগ এলাকায় ৩ জন, ভূনবীরের ইলামপাড়া গ্রামে ৮ জন, রাজপাড়া গ্রামে ২ জন, সিন্দুরখান রোড বনবাড়ি এলাকায় ১ জন, সিন্দুরখান ষারেরগজ গ্রামে ৫ জন, কালিঘাট রোড বাশগাড়ি হোটেলের পাশে ১ জন, শহরতলীর মুসলিমবাগ ১ জন, ডলুছড়ায় ১ জন ও একটি চা বাগানে ঢাকা, নারায়নগঞ্জ ও সিলেট থেকে গেছেন।
এদিকে, অন্য জেলার মানুষরা যাতে এলাকায় প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় যুবকারা নিজ উদ্যোগে গলির মুখে বাঁশ বেঁধে রেখেছেন।
এ বিষয়ে ডা. সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী জানান, রবিবার পর্যন্ত বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ১৪ জনের তালিকা তার কাছে আছে। এদের মধ্যে চার জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুই জনের রক্তের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
সাংস্কৃতিক কর্মী দেবাশীষ চৌধুরী রাজা বলেন,‘ প্রশাসনের প্রধান কাজই ছিল শ্রীমঙ্গলের প্রবেশ পথ সিল করে দেয়া। এটা কেন এখনও করা হচ্ছে না এটাই আমার বোধগম্য নয়। আমরা আমাদের সন্তানদের নিয়ে ঘরবন্দি হয়ে আছি। কিন্তু অন্য জেলার মানুষরা যদি আমাদের এলাকায় আসতে থাকে তবে আমরা ঘরে বন্দী থেকেও তো নিরাপদ মনে করছি না।’
ব্যাংকার রূপক দাস বলেন, ‘যেহেতু মানুষকে আর বুঝিয়ে ঘরে রাখা যাচ্ছে না তাই উপজেলা প্রশসনকে কঠোর হতে হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন,‘আমরা মানুষকে ঘরে রাখতে দিন রাত এক করে কষ্ট করে যাচ্ছি। কিন্তু মানুষ কিছুতেই ঘরে থাকতে চায় না, তারা নিজের ভাল নিজে বুঝতে পারে না। এই পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালতের মামলার সংখ্যা একশ ছাড়িয়ে গেছে। আমরা যেমন আমাদের জায়গা থেকে চেষ্টা করছি, ঠিক একই ভাবে মানুষকেও সচেতন হতে হবে। তা নাহলে কিছুই করা যাবে না।’