বড়লেখায় ফেসবুকে মন্তব্যের জেরে ছাত্রলীগ সভাপতির নেতৃত্বে কর্মীকে ছুরিকাঘাত!
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ মার্চ ২০২০, ৯:৪৯ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবিতে মন্তব্যের জের ধরে কলেজ ছাত্রলীগের এক কর্মীকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। বড়লেখা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ওলিউর রহমান জুনেদের নেতৃত্বে এই ঘটনাটি ঘটেছে। শুক্রবার বেলা দুইটায় পৌরশহরের উত্তর চৌমুনী এলাকায় এ ঘটনায় আহত ওই ছাত্রলীগ কর্মীর নাম জাহিদুল ইসলাম তৌফিক (১৯)। ওইদিন তাঁকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তৌফিক বড়লেখা সরকারি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং কলেজে ছাত্রলীগ কর্মী বলে জানা গেছে। আহত ছাত্রলীগ কর্মীর পিতা আব্দুল মুহিত শনিবার সন্ধ্যায় বড়লেখা থানায় ছাত্রলীগের সভাপতি ওলিউর রহমান জুনেদসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে বড়লেখা সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি রিকু দে তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে একটি গ্রুপ ছবি শেয়ার করেন। ছবিটিতে আরিফুজ্জামান রাসেল নামে কলেজ ছাত্রলীগের এক কর্মী বড়লেখা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এমরান হোসেনকে নিয়ে মজা করে একটি মন্তব্য করেন। এমরানকে নিয়ে মন্তব্য করায় বড়লেখা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ওলিউর রহমান জুনেদ ক্ষেপে যান। বিষয়টি নিয়ে তিনি তাদের ফেসবুকে দলীয় একটি গ্রুপে ভবিষ্যতে দলের সিনিয়র নেতাদের নিয়ে মজা না করার জন্য বলেন। এনিয়ে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ওলিউর রহমান জুনেদের সঙ্গে রাসেলের বন্ধু ছাত্রলীগ কর্মী জাহিদুল ইসলাম তৌফিকের কথা কাটাকাটি হয়। এরই জের ধরে শুক্রবার বেলা দুইটায় বড়লেখা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ওলিউর রহমান জুনেদের নেতৃত্বে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা পৌরশহরের উত্তর চৌমুনী এলাকায় একা পেয়ে ছাত্রলীগ কর্মী জাহিদুল ইসলাম তৌফিককে ছুরিকাঘাত করেন। এসময় তার সাথে থাকা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নগদ ৪ লাখ টাকা ও একটি মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পরে তারা তাঁকে কিল-ঘুষি মেরে ফেলে যান।
স্থানীয় লোকজন তৌফিককে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
এব্যাপারে অভিযুক্ত বড়লেখা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ওলিউর রহমান জুনেদের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুনেদ আহমদ শনিবার বিকেলে জানান, এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা সভাপতি ও সম্পাদককে জানানো হয়েছে। তারা বিষয়টি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থ্য নেবেন।
তৌফিকের বাবা আব্দুল মুহিত শনিবার রাত সাড়ে ৭টায় বলেন, আমার ছেলে এখনও হাসপাতালে। আমার ব্রিক ফিল্ডের শ্রমিকের মজুরী দেওয়ার টাকা ছিল ওর সাথে। এগুলোও ছিনতাই করেছে তারা। মোবাইল ফোনও নিয়ে গেছে। ৭ জনের নামে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
এব্যাপারে বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াছিনুল হক বলেন, এই বিষয়ে শনিবার সন্ধ্যায় তৌফিকের বাবা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।