সুনামগঞ্জে নিরাপত্তাহীন হাজারো পর্যটক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ মার্চ ২০২০, ৮:৫৮ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনাময় সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা। এ উপজেলায় বিভিন্ন পর্যটনস্পটগুলো পর্যটক ও দর্শনার্থীদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠলেও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে আগতরা।
শুধু নিরাপত্তাই নয়; নেই দিক নির্দেশক সাইনবোর্ড, ঝড়-বৃষ্টির দিনে নিরাপদ অবস্থানের জায়গা, থাকা ও খাওয়ার ভালমানের হোটেল। ফলে বেড়াতে আসা পর্যটক ও দর্শনার্থীদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
বিপুল সংখ্যক পর্যটক ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য টুরিস্ট পুলিশের জন্য দাবি জানিয়ে আসলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। এদিকে তাহিরপুর থানায় প্রয়োজনীয় জনবলের বেশি না থাকায় পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে হিমসিম খাচ্ছেন কর্মরত অফিসার।
উপজেলার টাংগুয়ার হাওর, বারেকটিলা, যাদুকাটা নদী, সীমান্ত ছড়া, শহীদ সিরাজ লেক, শিমুল বাগানসহ একাধিক পর্যটন স্পটে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে।
এসব দর্শনীয় স্থানকে কেন্দ্র করে গত দুই যুগেরও বেশি সময়ের ব্যবধানে পর্যটকের সংখ্যা বাড়লেও বাড়েনি কোনো ধরনের সুযোগ সুবিধা।
এই পর্যটন স্পটগুলো দেখার জন্য প্রতিদিনেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই নয় দেশের বাইরের বিভিন্ন দেশ থেকে আসছে নানান বয়সী দর্শনার্থী ও পর্যটক।
বর্ষার সময় এসেই তারা ভাড়ায় ইঞ্জিন চালিত নৌকা নিয়ে ছুটে যান টাংগুয়ার হাওরসহ অন্যান্য স্থানে। এসব নৌকা নিয়ে পর্যটকরা কখনও টাংগুয়ার হাওরেই রাত যাপন করে।
এছাড়াও দিক নির্দেশক সাইনবোর্ড, ঝড়-বৃষ্টির দিনে নিরাপদ অবস্থানের স্থান, থাকা ও খাওয়ায় ভালমানের হোটেল না থাকায় দিনে ও রাতে অবস্থান নিয়ে চরম দুভোর্গের শিকার হচ্ছেন। এতে করে বড় ধরনের দুঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
ঢাকা টুরিস্ট প্রধান মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, হাওর দেখতে অনেক টুরিস্ট আসেন। ঝড় বৃষ্টির দিনে অবস্থান, স্থায়ীভাবে হোটেল,পাবলিক টয়লেট না থাকায় টুরিস্টদের অনেক সমস্যা হয়। এছাড়াও নিরাপত্তার জন্য টুরিস্ট পুলিশ থাকলে অনেক ভাল হত।
শুক্রবার শিমুল বাগানে আসা পর্যটক রুবেল আহমেদ জানান, এখানে নেই রৌদ বৃষ্টির দিনে নিজেকে বাচাঁতে বসার স্থান। নেই আশপাশের কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে নিরাপদ অবস্থান। ফলে আজ বৃষ্টিতে ভিজতে হয়েছে আমার মত আগত হাজারো পর্যটককে। এখানে ঝড় বৃষ্টি যাই হউক নিরাপদে অবস্থান করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।
তাহিরপুরে সাদেক আলীসহ টাংগুয়ার হাওরের পাড়ের স্থানীয় বাসীন্দারা বলেন, টাংগুয়ার হাওরসহ উপজেলার প্রতিটি পর্যটনস্পটে প্রতিদিন অনেক পর্যটক আসে কিন্তু নিরাপত্তার বিষয়ে আমরাও থাকি দুশ্চিন্তায়। কারণ কখন কি ঘটে বলা যায় না।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, পর্যটক ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা, ঝড় বৃষ্টির দিনে নিরাপদ অবস্থান, স্যানিটেশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় বেড়াতে আসা বেশির ভাগ নারী ও শিশুদের বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
আর পর্যটন স্পটগুলোতে নির্দেশনা সাইনবোর্ড না থাকায় দেখা যায়, যে বারেকটিলায় যেতে চায় সে দেখা যায় টেকেরঘাট চলে গেছে।
তাহিরপুর থানার ওসি আতিকুর রহমান জানান, এসপির নির্দেশে এই এলাকার আসা পর্যটককে সাধ্যমত নিরাপত্তা দেয়ার চেষ্টা করছি।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান করুনা সিন্দু চৌধুরী বাবুল বলেন, এ উপজেলার পর্যটন স্পটগুলোতে আগত দেশ-বিদেশি পর্যটক ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য টুরিস্ট পুলিশ ও দিক নির্দেশক সাইনবোর্ড স্থাপনের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
সুনামগঞ্জের এসপি মো. মিজানুর রহমান বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের কোনো ক্যাম্প না থাকায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা দিয়ে থাকি। এখন ট্যুরিস্ট পুলিশ কর্তৃপক্ষ যদি কোনো ক্যাম্প করে দায়িত্ব পালন করেন তাহলে সুবিধা হয়।
সুনামগঞ্জের ডিসি আব্দুল আহাদ বলেন, এ বিষয়ে পর্যটক ও দর্শনাথীদের সুবিধার জন্য সড়কের মোড়ে মোড়ে পর্যটন স্পটগুলোর রাস্তার নির্দেশনা দিয়ে এবং স্পটগুলোর বিভিন্ন বিষয়াদি উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট স্পটের সাইনবোর্ড টানানোর ব্যবস্থা করা হবে।