আমি হারাম এক টাকাও খাবো না, কাউকে খেতেও দিবো না: সুনামগঞ্জের সার্জন
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ জানুয়ারি ২০২০, ১১:৫৪ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
আমার অধীনে যারা আছেন হাসপাতালের খাত থেকে দুর্নীতি করে কত টাকা নয়-ছয় করেছেন আমি দেখব। স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নের জন্য সরকার টাকা দেবে আর তা উন্নয়ন না করেই মেরে খাবে আমি এসব সহ্য করব না। সব কিছুর হিসাব নেব, দিতে হবে। কোন ছাড় পাবে না। নিজের অবস্থান, পারিবারিক নীতি-নৈতিকতার দায়বদ্ধতা থেকেই এখানে সৎভাবে কাজ করতে এসেছি। আমি হারাম এক টাকাও খাব না, আর কেউ আমার অধীনে থেকে অনিয়ম করে খেতে পারবে না। কারণ আমি এই শিক্ষা আমার পরিবার থেকে পাইনি। তিনি আরও বলেন, বাবা উপসচিব ছিলেন। তারপরও তিনি টিউশনি করেছেন। কষ্ট করে আমাকে পড়িয়ে মানুষ করেছেন।
কথাগুলো বলেছেন সদ্য সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন হিসাবে যোগ দেওয়া ডাঃ তউহীদ আহমদ কল্লোল। তিনি ২১তম বিসিএস উত্তীর্ণ। সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন হিসাবে যোগদানের পূর্বে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ছিলেন।
তিনি বলেন, সুনামগঞ্জ হাসপাতালের একটি দুর্নীতির তদন্তের দায়িত্বে থাকার কারণে সুনামগঞ্জ হাসপাতাল সম্পর্কে আগে থেকে তার কিছু ধারণা রয়েছে। ওই ধারণার আলোকেই হাসপাতালের সেবার মান বাড়ানো, সুন্দরভাবে সাজানোর পাশাপাশি দুর্নীতি বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন তিনি।
সিভিল সার্জন বলেন, আমাকে সরকার যে বেতন দেয় তা দিয়েই সংসার চালাই। আমি যদি দুর্নীতি করি তাহলে কলঙ্কের দাগটা আমার বাবা ও পরিবারের উপর লাগবে। আমি কখনও সেই কাজ কাউকে করতে দেব না নিজেও করব না। সেই সব কাজ থেকে বিরত থাকব যে কাজগুলো আমাকে কলঙ্কের দাগ লাগাবে ও পরিবারের সুনাম নষ্ট করবে।
তিনি জানান, সদর হাসপাতালে চিকিৎসকের সংখ্যা কম, আশপাশে ময়লা-আবর্জনায় পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমি এসব দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করাসহ সকল সমস্যা চিহ্নিত করে তার সমাধানে কাজ শুরু করেছি। হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্স থেকে শুরু করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে একটি নিয়ম-শৃঙ্খলাসহ সবাইকে নিয়মের মধ্যে অফিসে আসতে হবে। কে চিকিৎসক, কে নার্স, কে কর্মকর্তা, কে কর্মচারী সবার পোশাক ও নিজ নিজ নেমপ্লেট ব্যবহার করলেই প্রমাণিত হবে কারা হাসপাতালের দালাল।
আমারও ভুল হতে পারে কারণ সিভিল সার্জন হিসাবে আমাকে অনেক ফাইলে সাক্ষর করতে হয় বলেন সিভিল সার্জন ডাঃ কল্লোল। তিনি বলেন, আমার মাধ্যমে কোনো ভুল ফাইলে সাক্ষর হয়ে যায় তাহলে অবশ্যই আপনারা ধরিয়ে দেবেন, আমি শুধরে নেব। হাসপাতালের সমস্যাগুলো সমাধানে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি তিনভাগে ভাগ করে নিয়েছি। সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধান করা হবে। এরপর মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা এবং পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করব আমি। আপনারা আমাকে সহযোগিতা করবেন পরামর্শও দিবেন জনস্বার্থে আমি তা গ্রহন করব। কারণ অনেক সময় অনেক কিছু চোখের আড়ালে হয়ে যায় তাই এসব কাজে আপনাদের সহযোগিতা আমার খুব প্রয়োজন।