গোলাপগঞ্জে পোল্ট্রি ফার্মের মুরগের মৃত্যু নিয়ে মিডিয়ায় তুলপাড়
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ জুন ২০১৯, ৬:৪২ অপরাহ্ণ
গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি :
গোলাপগঞ্জে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় দুই শতাধিক মুরগের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে অনলাইন মিডিয়ায় তুলপাড়। অনলাইন মিডিয়া কর্মীরা একেক জন একেক ভাবে উপস্থাপন করায় প্রতিয়মান হয় যে, সরেজমিন না গিয়ে এ রিপোর্ট উপস্থাপন করা হয়েছে।
বিশ্বস্ত সুত্রে জানা যায় সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার ফজর আলীর পুত্র মিজানুর রহমান কয়েক বছর থেকে গোলাপগঞ্জের বুধবারীবাজার ইউনিয়নের চন্দরপুর এলাকায় টেলিভিশন কেবল নেটওয়ার্কি্এংর বিলিংএ কর্মরত। তিনি বাড়তি আয়ের জন্য স্থানীয় একজন যুবককে দিয়ে চন্দরপুর বাজারে একটি ঘর রেখে এ পোল্ট্রি ফার্মের ব্যবসা শুরু করেন।
গত মে মাসে সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ-১ থেকে ঘোষনা দেয়া হয় গ্রাহকের কাছে এক মাসের বকেয়া বিল থাকলে বিনা নোটিশে লাইন বিচ্ছিন্ন করার। বিষয়টি গোলাপগঞ্জ জোনাল অফিস প্রত্যেকটি এলাকায় মাইকিং করে গ্রাহকদের জানানোর পর, গত জুন মাসে এর কার্যকারিতা শুরু করেন।
সুনামপুর সাব স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত লাইনম্যান লোকমান জানান, তার লাইনম্যানরা বিভিন্ন এলাকার মত চন্দরপুরেও লাইন কাটতে গেলে এ মিটারটির জানুয়ারী, মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসের বিল বকেয়া পাওয়ায় তারা লাইন বিচ্ছিন্ন করে। তিনি আরো জানান লাইন বিচ্ছিন্ন করার সময় কেউ তাদের কাছে পোল্ট্রি ফার্মের কথা উল্লেখ না করে শুধু বলা হয়েছে কয়েকদিন পর তা পরিশোধ করা হবে। বেলা সাড়ে ১১টায় লাইন বিচ্ছিন্ন করার পর সন্ধা বেলা তার কছে একটি ফোন আসে এবং অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে বলা হয় তাদের ৮শ টি মুরগী মারা গেছে। এর উপযুক্ত ক্ষতিপুরণ না দিলে তাদেরকে মেরে ফেলা হবে। এমনকি পল্লী বিদ্যুতের সাব স্টেশন উড়িয়ে দেয়ার হুমকিও দেয়া হয়।
লোকমান উপায়ান্তর না দেখে গোলাপগঞ্জ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মামুনুর রশীদকে বিষয়টি অবগত করেন। মামুনুর রশীদ পোল্ট্রির মালিক মিজানুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জনান মাত্র দু’মাসের বিল বকেয়ার কারণে তার লাইন বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। যদি এর কোন বিহিত না করা হয় তাহলে তারা থানায় মামলা করবেন। লোকমান আরো জানান, পরদিন গোলাপগঞ্জ মডেল থানার একদল পুলিশ এসে সরজমিন দেখে গিয়েছেন।
এ বিষয়ে গোলাপগঞ্জ জোনাল অফিসের ডিজিএমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, লাইনম্যানরা সেখানে পোল্ট্রি ফার্ম আছে বলে কেউ তাদেরকে বলেনি। বিষয়টি তাকে দারুন মর্মাহত করেছে। তিনি বলেন দুঃখ পেয়েছেন বিভিন্ন মোবাইল থেকে তাদেরকে হুমকি দিয়ে কথা বলার জন্য। তিনি বলেন ফার্মের মালিকের অভিযোগ ২ ঘন্টার মধ্যে ৮শ মুরগ মারা গেছে। বর্তমানে বিশেষ কাজের জন্য পল্লী বিদ্যুতের ৪/৫ ঘন্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ বন্ধ থাকে তখনতো আর কারো মুরগ মারা যায়নি। মাত্র দু’ঘন্টার মধ্যে এতগুলো মুরগ মারা যাবে তা চিন্তার ব্যাপার।
ডিজিএম বলেন যেহেতু বিষয়টি তারা আইনের আওতায় নিতে চায়, কে ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন ছাড়পত্র আছে কি না তা তার জানা নেই। তিনি বলেন একটি ইটের ভাটা করতে হলে যেমন পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র লাগে। ঠিক পোল্ট্রি ফার্মের বেলায় তাও প্রযোজ্য। কোন বাড়িতে ৫শ মুরগের সেড থাকলে তাকে নিজের প্রয়োজন দেখিয়ে লালন পালন করা সম্ভব। ৫শ ১টি মুরগ লালন পালন করতে হলে অবশ্যই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের প্রয়োজন।
বিষয়টি দিয়ে ফার্মের মালিক মিজানুরের সাথে আলাপ করলে তিনি বলেন গ্রাম্য বাজারে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র লাগে তার জানা নেই।