‘ধান গেল সবজি গেল আর কিছু যাওয়ার বাকী নাই’
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ জুন ২০১৭, ৪:১৫ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
সুনামগঞ্জে অতিবৃষ্টি,শিলাবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সব সবজি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় চাষিরা বিপাকে পড়েছেন। সরকারি সাহায্য সহযোগিতা না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশে করে পালকাপন গ্রামের সবজি চাষি মরম আলী বলেন, ‘ধান গেল সবজি গেল আর কিছু যাওয়ার বাকী নাই। তারপরও কেন আমরা সরকারি সাহায্য থেকে বঞ্চিত।’
পালকাপন ছাড়াও একই অবস্থা দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের পাইকপাড়া, রাজারগাঁও, উলুয়ারগাঁও, উস্তাঙ্গেরগাঁও, ছনগাঁও, বড়খাল, ঝুমগাঁও, ধরমপুর, মুছাপাড়া, হকনগর, পেকপাড়া, ছিলাইনপাড়, কলাউড়া, পুরান বাঁশতলা ও চৌধুরীপাড়াসহ ৩৮টি গ্রামের ২৫০০জন কৃষকের।
ইউনিয়ন কৃষি অফিসের তথ্য মতে, ‘বাংলাবাজার ইউনিয়নের ৩৮টি গ্রামে ২৩০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ করা হয়। তার মধ্যে ২০০ হেক্টর জমির সবজি অতিবৃষ্টিতে এবং ৩০ হেক্টর জমির সবজি শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত সবজির মধ্যে রয়েছে ঝিংগা, চিচিঙ্গা, ধুন্দল, করলা, শসা, মিষ্টিকুমড়া, চালকুমড়া, ঢেড়স, কাকরুল, পুইশাক ও কলমিশাক। এছাড়া পাঁচ হেক্টর জমিতে কৃষকরা হলুদ, মরিচ, আদা, পিঁয়াজ, রসুন, ধনিয়াপাতা চাষ করেছিল। এসব মসলার জমিও পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে।এতে কৃষকের ১ কোটি ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত সবজি চাষিরা এখন পর্যন্ত কোনও সরকারি সাহায্য পাননি অভিযোগ করে ঝুঁমগাও গ্রামের কৃষক সিপং মারাক বলেন, আমাদের ইউনিয়নে ধান থেকে সবজি বেশি চাষাবাদ হয়। এখানকার সবিজ সুনামগঞ্জের চাহিদা মিটিয়ে সিলেটের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা হয়। এবছরের বন্যায় সবজি চাষিরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
ধরমপুর গ্রামের সবজি চাষী হেকিম মিয়া বলেন,‘মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত বাংলাবাজার ইউনিয়ন সবজি উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। সারা বছরই এ এলাকায় কোনও না কোনও সবজি চাষ করা হয়। সবজি চাষে খরচ বেশি হলেও লাভ বেশি। তাই আমরা এ দিকে ঝুঁকছি। কিন্তু এবার সরকারি সাহায্যসহ সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ না পেলে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন না।’
উস্তাঙ্গেরগাঁও গ্রামের মফিজ আলী বলেন, বন্যার শুরুতেই তাদের সবজি বাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।বাগান থেকে শুরু করে বাড়ির আঙিনায় করা সব সবজিই নষ্ট হয়ে গেছে।
বাংলাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসীম উদ্দিন চৌধুরী রানা মাস্টার বলেন, গেল বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সরকার যে সাহায্য দিয়েছে তা ধান চাষিদেরই হয় না। সবজি চাষিরা পাবে কোথা থেকে। তবে বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছেন।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত সবজি চাষিদের কৃষি বিভাগ কোনও সহযোগিতা করতে পারেনি। তবে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। এটি শেষ হলে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের কি ভাবে সহযোগিতা করা যায়।