লোকবল সঙ্কটে বন্ধ ৯ রেলস্টেশন
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ নভেম্বর ২০১৬, ১১:০২ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
লোকবল সঙ্কটে বন্ধ হয়ে আছে ছাতক-সিলেট-আখাউড়া রেলপথে ৯ টি স্টেশন। এরমধ্যে অনেক স্টেশন বন্ধ রয়েছে ৭/৮ বছর ধরে। এই রুটের আরো অন্তত ৩ টি স্টেশন বন্ধ হওয়ায় অবস্থায় আছে। ফলে ব্যাহত হচ্ছে যাত্রীসেবা। টিকিট ছাড়া ট্রেন চালচলের প্রবণতাও বাড়ছে।
সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা যায়, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবসরকালীন ছুটিতে চলে যাওয়ায় ও নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় রেল বিভাগে লোকবল সংকট দেখা দিয়েছে। দিন দিন এই সঙ্কট আরো প্রকট হচ্ছে। লোকবল সঙ্কটের কারণে সর্বশেষ গত ২৯ জুলাই মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা রেল স্টেশনটি সিলগালা করা হয়।
লোকবল স্কটের কারণে ২০০৬ সালের শেষের দিকে সুনামগঞ্জের ছাতকবাজার রেলস্টেশন বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে ২০১৪ সালে ফের চালু করা হয় ছাতক স্টেশন। ২০০৬ সালের পর থেকে একই কারণে পর্যায়ক্রমে বন্ধ হয়ে যায় ছাতক-সিলেট রেলপথের আফজলাবাদ ও খাজাঞ্চিগাঁও রেলস্টেশন। আ্ওয়ামী লীগ সরকারের টানা দুই মেয়াদে একে একে বন্ধ হয়ে যায় সিলেট-আখাউড়া রেলপথের মৌলভীবাজার জেলার ভাটেরাবাজার, লংলা, টিলাগাঁও, মনু এবং হবিগঞ্জ জেলার লস্করপুর, শাহজীবাজার, তেলিয়াপাড়া ও লস্করপুর স্টেশন।
এছাড়া এই রেলপথের সিলেট জেলার মোগলাবাজার, মৌলভীবাজার জেলার সাতগাঁও এবং বরমচাল স্টেশনও এখন বন্ধ হওয়ায় উপক্রম। এই তিনটি স্টেশন এখন কেবল দিনে চালু ও রাতে বন্ধ থাকে।
রেলওয়ের সিলেট স্টেশন ম্যানেজার আব্দুর রাজ্জাক জানান, একটি স্টেশন সচল রাখতে দুজন স্টেশনমাস্টার, একজন পয়েন্টস-ম্যানসহ মোট পাঁচজন কর্মচারী লাগে। কিন্তু এ স্টেশনগুলোতে কোনো কর্মচারী নেই। ফলে স্টেশন বন্ধ রয়েছে।
তিনি বলেন, বন্ধ স্টেশনে ট্রেন থামছে। যাত্রীরা ওঠানামা করছেন। ফলে স্টেশন বন্ধ থাকলেও যাত্রীসেবায় কোনো ব্যাঘাত ঘটছে না।
রেলওয়ের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ট্রেনিংয়ে রয়েছেন। তাদের ট্রেনিং শেষ হলেই কয়েকটি স্টেশন চালু হবে পারে বলে জানান আব্দুর রাজ্জাক।
তবে রেলওয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছরের শেষের দিকে রেলওয়ের আরো প্রায় পাঁচশ’ কর্মকর্তা-কর্মচারি অবসরে যাবেন। ফলে জনবল সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করবে।
সিলেট রেলওয়ে স্টেশন সূত্র জানায়, বন্ধ থাকা স্টেশনগুলোতে চারটি ট্রেন থামে। সিলেট-ঢাকা পথে চলাচলকারী সুরমা মেইল, সিলেট-চট্টগ্রাম পথে চলাচলকারী জালালাবাদ এক্সপ্রেস ও সিলেট-আখাউড়া পথে চলাচলকারী কুশিয়ারা এক্সপ্রেস ও ডেমু ট্রেন এই স্টেশনগুলোতে থামে।
এদিকে, স্টেশন বন্ধ থাকার কারণে অযত্নে পড়ে আছে স্ঠেমনের অবকঅটামো। অনেক স্টেশনে প্রায়ই চুরির ঘটনাও ঘটে। অপরদিকে, কর্মকর্তা-কর্মচারী না থাকায় এসব স্টেশনে নেই কোনো যাত্রীসেবা। টিকিট ছাড়াই এসব স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠে পড়েন যাত্রীরা। ফলে যাত্রী চলাচল করলেও ভাড়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রেল কর্তৃপক্ষ।
এ ব্যাপারে রেলওয়ের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) মো: হাবিবুর রহমান বলেন, লোকবল সঙ্কটের কারণে দেশের অনেক স্থানেই এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। নতুন করে লোকবল নিয়োগ করা হলে বন্ধ স্টেশনগুলো পুনরায় চালু করা হবে। প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগের চেষ্টা চলছে বলেও জানান হাবিবুর রহমান।