
ফ্রান্স আওয়ামীলীগের জ্যেষ্ঠ নেতা বলে দাবিদার জনাব এম এ কাশেম গত ২৯ শে জুলাই একটি অনলাইন নিউজে নিজের লেখা “সত্যকে মিথ্যা দিয়ে কখনও ঢেকে রাখা যায় না ” শিরোনামে লেখাটি আবলোকন করলাম। চমৎকার লিখেছেন জনাব এম এ কাশেম ভালোই লেগেছে ৷ আপনার সাথে আমি একমত, আর একমত হয়েই এই কথাটির উপর সত্যের সূচ দিয়ে মিথ্যা নামক কণ্টকটি আওয়ামী লীগ নামের এই মহান দলটির শরীর থেকে বের করে আনার এক তীব্র চাপ অনুভব করে দু কলম লিখতে বসলাম ৷ সত্য মিথ্যার চিরন্তন দন্ধ আপনার লিখায় সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে ৷ তবে লিখাটির সাথে আপনার গত তিনমাসের রাজনৈতিক বক্তব্য, রাজনৈতিক কর্মকান্ড, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনার অপরের সহিত বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রচারণার আদান প্রদান গুলোর সাথে প্রচন্ড বিরোধ আছে ৷ যাকে বলে স্ববিরোধী কথা ৷ তাছাড়ালেখাটিতে তৃণমূল পর্যায়ের কর্মীদের প্রতি অভিযোগ সাথে সাথে তাদের প্রতি অন্যায় আবদার ও দৃশ্যমান ৷ প্রথমেই আপনি লিখেছেন ফ্রান্স আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের নিয়ে কিছু ব্যক্তি আপত্তিকর মন্তব্য করছে ৷ বিষয়টি আপনি অনুধাবন করতে পারায় এবং তা নিয়ে লিখার জন্য আপনাকে অন্তরস্থল থেকে ধন্যবাদ ৷ মুজিব আদর্শের অনুসারী দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের প্রতি আপত্তিকর মন্তব্য মোটেও মেনে নেয়া যায় না ৷সেটা আবর্জনার ডিপোর মত ঘৃণিত স্থানেই নিক্ষেপিত হয় ৷ প্রাসঙ্গিক কারণেই আমার আপনার নিকট জানার ইচ্ছে, সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সম্মানীত সভাপতি শ্রী অনিল দাস গুপ্ত আপনারই শুধু নয় তথা সারা ইউরোপে সাংগঠনিক এবং বয়োবৃদ্ধির দিক থেকে জ্যেষ্ঠ নেতা কি না ? আমি আওয়ামী আদর্শের একজন নগন্য কর্মী হিসাবে বিশ্বাস করি তিনি আমাদের সকলেরই জ্যেষ্ঠ নেতা ৷ বাবু অনিল দাস গুপ্ত স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় এই ইউরোপের রাস্তায় বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী সংগ্রামী জনতার পক্ষে মাইনাস শীতে বার্লিন ফ্রাঙ্কফার্টের রাজপথে বাংলাদেশের পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে থাকতেন ৷বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সমর্থন আদায়ের সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন ৷ এমনকি সেই সময় এই পারিসেও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের পক্ষে সমর্থন আদায়ের জন্য এসেছেন। শ্রী অনিল দাস গুপ্ত ৭৫ এর ১৫ ই আগস্টে যখন নির্মম ভাবে জাতির পিতাকে স্বপরিবারে হত্যা করা হলো সেই ভয়াবহ মুহূর্তে জাতির পিতার জার্মানীতে অবস্তানরত দুই কন্যার সহযোগী হিসেবে পাশে ছিলেন ৷ নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে জাতির পিতার দুই কন্যার জীবন রক্ষার্থে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন ৷ এসব ইতিহাস আপনি আমি ইউরোপে আসার আগের ইতিহাস ৷ আসুন আপনার ৮৭ সাল থেকেই শুরু করি, যা আপনি ইউরোপের আওয়ামী রাজনীতি নিজ চোখেই অবলোকন করেছেন ৷ ফ্রান্সে যখন আওয়ামী লীগ গঠিত হলো তখন নিশ্চই আপনি তদানীন্তন জার্মান আওয়ামী লীগ এর সম্মানীত সভাপতি শ্রী অনিল দাস গুপ্তর নামটিও শুনে থাকবেন ? না শুনে থাকলে সেটি আপনার ব্যর্থতা ৷ সাথে সাথে ইউরোপে আরো কজন জ্যেষ্ঠ আওয়ামী লীগ নেতা যাদের প্রশংসনীয় অবদান বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ছিল যেমন , জনাব আতাউর রহমান খান, সুলতান মো: শরীফ, আহম্মেদ জোয়ারদার, ডঃ সেলিম, প্রফেসর আবুল হাসেম প্রমুখ তাঁদের নামও আপনি শুনে থাকবেন ৷ এদের সকলের চাইতেও জাতির পিতার কন্যার অত্যন্ত আস্তাভাজন ব্যক্তি, বহির্বিশ্বে জননেত্রীর সর্বদা সফর সঙ্গী শ্রী অনিল দাস গুপ্ত তাও আপনি জানেন ৷ পরবর্তীতে ১৯৮৮ সনের পর থেকে ফ্রান্স আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সাংগঠনিক কর্মকান্ডে বহুবার বাবু অনিল দাস গুপ্ত মুরুব্বি হয়ে অংশগ্রহণ করেছেন ৷প্রয়োজনবোধে নির্দেশনা ও দিয়েছেন ৷ ১৯৯৩ সালে ফ্রান্স আওয়ামী লীগের সম্মেলনে নেত্রীর সফর সঙ্গী হিসাবে শ্রী অনিল দাস গুপ্তও ছিলেন আবার ৯৫ সালে ফ্রান্স আওয়ামী লীগের সম্মেলনেও শ্রী অনিল দাস গুপ্ত এবং সুলতান শরীফ সাহেবও ছিলেন ৷ কমিটি অনুমোদনের জন্য আমার জানামতে তখনও ওনাদেরই অনুরোধ কেন্দ্রের প্রতি ছিল ৷ ২০০০ সালে শান্তি পুরস্কার নিতে তৎকালীন বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা ইউরোপের সকল নেতৃবৃন্দের সম্মুখে শ্রী অনিল দাস গুপ্তকে সর্ব ইউরোপে আওয়ামী লীগ গঠন করে নিজ হাতে দায়িত্ব অর্পণ করে যান ৷ যা আপনি ও আমার মত চাক্ষুস সাক্ষী ৷আপনি ইউরোপে রাজনীতি শুরু করার প্রারম্ভেই জানতেন বাবু অনিল দাস গুপ্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সম্মানীত সদস্য ৷ আজ থেকে প্রায় তিরিশ বছর আগে ইউরোপে আপনার রাজনীতির পথ চলা ৷ তখন আপনার বয়স ২৬ কি ২৭ বড়জোর ৷ সম্ভবত ছাত্রলীগের সুগন্ধ সেই বয়সে সকল আওয়ামী যুবকদের দেহে বহমান ৷ আর তখন বাবু অনিল দাস গুপ্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় পর্যায়ে সকল নেতাদের সহযোদ্ধা, সহযোগী ৷সেই ব্যক্তিটির বিরুদ্ধে গত ২৯ মে ২০১৬ ইং তারিখে সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যাচারী বিশেষণে ভূষিত করতে আপনার কি এক বিন্দু বিবেকে বাধল না ? জনাব এম এ কাশেম ,আপনি ফ্রান্স আওয়ামী লীগ এর দু দুবার সম্মানিত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। দলের কর্মীদের থেকে সন্মান আপনি আশা করেন এটাই স্বাভাবিক । কিন্তু আপনি কি আপনার জ্যেষ্ঠ নেতাদের সন্মান দিতে জানেন?আপনি ভুলে যেতে পারেন ,কিন্তু ফ্রান্স আওয়ামী লীগ এর শত শত কর্মীরা এখনো মনে রেখেছে যে আপনি একাধিকবার সর্বইউরোপীয়ান আওয়ামী লীগ এর সম্মানিত সাধারণ সম্পাদক জনাব এম এ গনি সাহেবকে ব্যক্তিগতভাবে অপমান করেছেন। সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগ এর সংগ্রামী সাধারণ সম্পাদক জনাব এম এ গনি দেশে বিদেশে সর্বজন শ্রদ্ধেয়। গুরুজনকে শ্রদ্ধা আর ছোটদের স্নেহ করা মানুষের সন্মান বাড়ায় ,কমায় না।,হউক সে আপনার বিরুদ্ধ মতের।জনাব এম এ গনি একজন স্বচ্ছ চরিত্রের অধিকারী। ছোট বড় সকলকেইটিনি ভালোবাসতে জানেন। নিরহংকারী এই সম্মানিত ব্যক্তিটিকে ২০১০সালে ফ্রান্স আওয়ামী লীগ এর সম্মেলনের হলে তাঁকে অপমান করতে আপনি পিছপা হননি। কারণ তিনি আপনাকে ফ্রান্স আওয়ামী লীগ এর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা দেননি।আপনার জানা দরকার দেশে অনেক জাতীয় নেতা আমাদের সর্বজন শ্রদ্ধেয় ইউরোপের এই সংগ্রামী নেতাকে শ্রদ্ধার চোখে দেখেন।