বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গান গেয়ে সংসার চালান তোতা মিয়া
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ আগস্ট ২০১৬, ১০:১৮ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক :
বঙ্গবন্ধু প্রেমিক তোতা মিয়া তার প্রিয় নেতা স্বাধীনতার স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে স্ব-রচিত গান গেয়ে অর্থ উপার্জন করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। যেখানে আওয়ামীলীগের অনুষ্ঠান সেখানেই কোন প্রকার বাদ্যযন্ত্র ছাড়াই গান পরিবেশন করেন তোতা মিয়া। তার গান শুনে দলীয় নেতাকমীদের দেয়া বকশিসের অর্থেই চলে তোতা মিয়ার সংসার। তবে সব সময় দলীয় কর্মসূচী না থাকায় গান গাইতে না পারায় অর্থাভাবে সংসার চালাতে হিমশিত খেতে হয় তোতা মিয়াকে।
বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের আমবৌলা গ্রামের মৃত তমিজউদ্দিন ফকিরের পুত্র তোতা মিয়া (৫৫) জানান, সংসারে তার বৃদ্ধা মা, স্ত্রী, দুই পুত্র ও দুই কন্যা সন্তান রয়েছে। পৈত্রিক সূত্রে তেমন কোন সম্পত্তি না পাওয়ায় শ্রমজীবী হিসেবেই শুরু হয় তার পথচলা। গ্রামে যখন যে কাজ পেতেন তিনি তখন তাই করতেন। যৌবন বয়স থেকেই শখের বশে তিনি দেশ, মাটি, মানুষ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নিজের স্বরচিত গান গেয়ে আসছেন।
অক্ষরজ্ঞানহীন তোতা মিয়া উপজেলার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিজের রচিত গান গেয়ে সর্বত্রই গায়ক তোতা হিসেবে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন।
জীবিকার তাগিদে গত চার বছর পূর্বে অন্যের বাড়ির নারকেল গাছ পরিস্কার করতে গিয়ে গাছ থেকে পরে তার ঘাড়ের হাড় ভেঙ্গে যায়।
অর্থাভাবে তিনি সু-চিকিৎসা করাতে পারেননি। হতদরিদ্র তোতা মিয়ার পরিবারে আয়ের কোন বিকল্প পথ না থাকায় ভিক্ষাবৃত্তির পেশায় নিজেকে না জড়িয়ে যৌবন বয়সে শখের বসে স্বরচিত গান পরিবেশনকেই জীবিকা হিসেবে বেঁছে নিয়েছেন তোতা মিয়া।
দীর্ঘ একযুগ ধরে উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন উপজেলায় আওয়ামী লীগের সভা-সমাবেশে ব্যতিক্রমধর্মী সাজে উপস্থিত হন তোতা মিয়া। তার গলায় ঝুলানো থাকে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবি, মাথায় থাকে বিভিন্ন দিবসের বিশেষ টুপি, হাতে থাকে কাঠের তৈরী নৌকা। নৌকার গায়ে জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের ছবির সাথে বয়ে বেড়ান জাতীয় পতাকা। মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির জনকের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কোন কোন গান পরিবেশনের সময় তিনি জাতীয় পতাকাও প্রদর্শন করেন সমাবেশে।
তোতা মিয়া জানান, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে তার লেখা ২৫টি গানে তিনি নিজেই সুর দিয়েছেন। যা শুনে শ্রোতারাও মুগ্ধ হয়ে তোতা মিয়াকে যে বকসিস প্রদান করেন তাই তার একমাত্র সম্বল হলেও জীবিকার প্রয়োজনে তা পর্যাপ্ত নয়।
তোতা মিয়ার দুই পুত্রের মধ্যে একজন অন্যের বাড়ির পারিবারিক কর্মচারী, অন্যজন ক্ষুদ্র মৎস্যজীবি। এক মেয়েকে পাত্রস্থ করলেও অন্য মেয়ের লেখাপড়ার খরচ জোগানো তার জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। অতিসম্প্রতি জঙ্গিবিরোধী সমাবেশে আগৈলঝাড়া উপজেলা সদরে বসে তোতা মিয়া বলেন, যুবক বয়স থেকে জাতির জনকের আদর্শ বুকে লালন করে আসছি। জীবনে যতো কষ্টই হোকনা কেন, যতোদিন বেঁচে আছি বঙ্গবন্ধুর আর্দশ নিয়ে বাঁচতে চাই।