রাজনগরে সরকারী ত্রাণের চাল ওজনে কম দেয়ার অভিযোগ, তদন্ত কমিটি গঠন
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ মে ২০২০, ১:০৪ অপরাহ্ণ
স্বপন দেব, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের রাজনগরের ফতেপুর ইউনিয়নে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সরকারী ত্রাণের চাল ওজনে কম দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ত্রাণ বিতরণ তালিকায় ভুয়া নাম, একই পরিবারের একাধিক নাম ও একই ব্যক্তিকে একাধিকবার দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এনিয়ে স্থানীয় লোকজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হয়েছেন। চাল কম দিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। আর গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, করোনা ভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারে বিতরণের জন্য গত ১৮ ও ১৯ এপ্রিল জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে রাজনগর উপজেলায় ২৯ টন চাল ও নগদ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এখান থেকে রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদ কে ৩.৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেন। সে অনুযায়ী ওই ইউনিয়নে ৩৫০ জন উপকারভোগীর একটি তালিকা করা হয়।
গত ২৪ এপ্রিল সকাল থেকে ৩৫০ জনের মধ্যে সরাসরি ইউপি অফিস থেকে ত্রাণ বিতরণ শুরু হয়। প্রত্যেককে ১০ কেজি চাল ও ২ কেজি করে আলু দেয়ার কথা থাকলেও কয়েকজন উপকারভোগী চাল ওজনে কম পাওয়ার অভিযোগ করেন। পরে ইউপি অফিস থেকে বেরিয়ে আসা কয়েকজন উপকারভোগীর প্যাকেটের চাল মিটারে ওজন করে দেখা যায় প্রত্যেক প্যাকেটেই এক-দেড় কেজি করে চাল কম আছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আনলে খাদ্য গুদাম থেকে চাল কম দেয়ার অভিযোগ করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, ৩৫০ জনের তালিকার চাল রাতের বেলা প্যাকেট করেন ইউপি সদস্য সাঈদ চৌধুরি আমিনের নেতৃত্বে কিছু সেচ্ছাসেবী।
এদিকে তালিকায় ভুয়া নাম, একই পরিবারের একাধিক সদস্য, এক ব্যক্তি কে বারবার দেয়া ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। যথাযথ তালিকা হয়নি বলে মনে করছেন স্থানীয় লোকজন। এ বিষয়ে স্থানীয় আব্দুল হাকিম রাজ নামে একজন সংবাদকর্মী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। কমিটির সদস্যরা হলেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপসহকারী জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
ইউপি সদস্য সাঈদ চৌধুরি আমিন বলেন, চাল প্যাকেটিং এর দায়িত্বে আমি ছিলাম না। গ্রাম পুলিশের সদস্যরা পিকেটিং করেছে। প্যাকেটে চাল কম দেয়া হচ্ছে বলে সাংবাদিক আব্দুল হাকিম অভিযোগ করায় মেপে দেখা গেছে কোন কোন প্যাকেট ৮০০-৩০০ গ্রাম চাল কম। এ ব্যাপারে জানতে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান নকুল চন্দ্র দাসের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
এ বিষয়ে নবাগত রাজনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াঙ্কা পাল বলেন, আমি গত বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) রাজনগরে যোগদান করেছি। আমি আসার আগেই (২৯ এপ্রিল) অভিযোগ দেয়া হয়েছে। আজকে (২ মে) তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটির রিপোর্ট পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।