যুব বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন: বালাগঞ্জে সাকিবের বাড়িতে উল্লাস
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ৯:৩৬ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
যুব বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন দলের অন্যতম সদস্য তানজিম হাসান সাকিবের গ্রামের বাড়ি সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলায় আনন্দের বন্যা বইছে।
সোমবার দিনব্যাপী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে আনন্দ-উল্লাস করে মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে। উল্লসিত সমর্থকেরা সাকিবের বাড়িতে গিয়ে তার মা-বাবাকে মিষ্টিমুখ করান।
এ সময় সমর্থকেরা সাকিব সাকিব বলে জয়ধ্বনি দিয়ে তারা বলেন, সাকিবের কৃতিত্বের জন্য বালাগঞ্জসহ আজ সারা দেশের মানুষ বিজয়ানন্দে ভাসছে। বিশ্বকাপ জিতে নিজ বাড়িতে ফেরার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন তানজিম হাসান সাকিব। তার সে স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় সাকিবের মা-বাবা মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করে সাকিবের জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করেছেন।
সাকিবের বাবা গৌছ আলী স্বপ্ন দেখেনে বিশ্ব ক্রিকেটে সাবিক যেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে। আর সাকিব অনেক দূর এগিয়ে যাক এমনটাই প্রত্যাশা করেছেন তার মা সেলিনা পারভীন।
প্রতিভাবান এই ক্রিকেটার ফাইনাল ম্যাচে ২ উইকেট নিয়ে দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তার আগ্রাসী বোলিংয়ে ম্যাচের প্রথমেই ভারতকে চেপে ধরে বাংলাদেশ।
প্রথম ৩ ওভারে একটি ওয়াইড ছাড়া কোনো রান দেননি এই যুবা ক্রিকেটার। ফলে ৩ উইকেটে ভারতকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্ব সেরার মুকুট পরল সাকিবের দল।
বালাগঞ্জ ইউনিয়নের তিলকচাঁনপুর গ্রামের গৌছ আলী ও সেলিনা পারভীন দম্পতির ঘরে ২০০২ সালের ২০ অক্টোবর সাকিবের জন্ম। ৩ বোন ও ১ ভাইয়ের মধ্যে সাকিব তৃতীয়। পরিবারের একমাত্র ছেলে হিসেবে সাকিবের প্রতি ভালোবাসার অন্ত নেই।
সাকিব উপজেলার আদিত্যপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিইসি পরীক্ষায় ট্যালেন্টপুল বৃত্তি নিয়ে বালাগঞ্জ সরকারি ডিএন মডেল উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি হন। অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত অবস্থায় সাকিব জানতে পারেন অনূর্ধ্ব-১৩ জাতীয় দল গঠনের লক্ষ্যে মৌলভীবাজার জেলা স্টেডিয়ামে বাছাই চলছে।
মাত্র একদিন সময় হাতে রেখে বাছাই পর্বে অংশ নিতে সাকিব ছুটে যান মৌলভীবাজার জেলা স্টেডিয়ামে। সেখানে সাকিবের বোলিং নৈপুণ্যতা দেখে নির্বাচকরা তাকে বেছে নেন।
মৌলভীবাজার থেকে ছুটে চলা চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। ৩ মাসের বোলিং কোর্স সম্পন্ন করে তিনি বিকেএসপিতে ভর্তি হন। বিকেএসপিতে অনুশীলনে থাকা অবস্থায় সাকিব বাংলাদেশ জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৭ ক্রিকেট দলের হয়ে ২০১৬ সালে ভারত এবং অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে ২০১৯ সালে ইংল্যান্ড ও শ্রীলংকায় ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে যান। এ ছাড়া সাকিব একাধিক ঘরোয়া ম্যাচেও ক্রিকেটাঙ্গন মাতিয়েছেন।
সাকিবের বন্ধুরা বলেন, ক্রিকেটের প্রতি তার এতটাই আসক্তি ছিল ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় কোথাও কোনো ম্যাচের খবর পেলে সে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে খেলায় চলে যেত।
সাকিবের চাচাতো ভাই বালাগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আবদুল মুনিম বলেন, তাকে নিয়ে আমাদের অনেক স্বপ্ন রয়েছে। আশা করি তার মাধ্যমে সে স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে।