শ্রীমঙ্গলে পাহাড়ি ছড়া দখল করে দোকানপাট নির্মাণ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ জানুয়ারি ২০২০, ১:২৯ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে একটি প্রভাবশালী মহল সরকারি পাহাড়ি ছড়া অবৈধভাবে দখল করে দোকানপাট ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, উপজেলার ঢাকা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে অবস্থিত সকিনা সিএনজি পাম্প সংলগ্ন ফুলছড়া সেতুর সামনের দিকে ফুলছড়া নামক পাহাড়ি ছড়াটি মাটি দিয়ে ভরাট করে পাকা স্থাপনা গড়ে তুলে অবৈধভাবে দোকানপাট নির্মাণ করে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী।
এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে ২২ জানুয়ারি এলাকাবাসী স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করে প্রাকৃতিক এই ছড়া রক্ষায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আশিদ্রোন গ্রামের মৃত আসলাম মিয়ার ছেলে মুর্শেদ, দুরুদ মিয়ার ছেলে নুরুল ইসলাম, আইয়ুব আলী ও আমানতপুর গ্রামের রজব আলীর ছেলে শাহ আহমেদ অবৈধভাবে ছড়ার মধ্যে মাটি ভরাট করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করে দোকানঘর নির্মাণ করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়, ফুলছড়াতে মাটি ভরাটের ফলে ছড়া সংকোচিত হয়ে ভাটিতে হাইল হাওরে পানি প্রবাহে বাঁধাগ্রস্থ হয়ে বর্ষা মৌসুমে উজানে দক্ষিণ উত্তরসুর ও ইসলামপুর এলাকায় বন্যা দেখা দেয়। ফলে ফসলের অনেক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
এছাড়াও মহাসড়কের পাশে অপরিকল্পিতভাবে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠার ফলে গ্রামের আশিদ্রোন, ইসলামপুর ও কালিঘাট এলাকায় প্রতিদিন চলাচলরত কয়েকশ’ যানবাহন চলাচলেও বিঘ্ন ঘটছে।
এসব দোকানপাটের জন্য অপর প্রান্ত না দেখতে পাওয়ায় প্রায়ই যানবাহনের মুখোমুখি দুর্ঘটনা ঘটছে এবং লোকজন হতাহতের ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইসলামপুর জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি আমির উদ্দিন জানান, অবৈধভাবে দখলদাররা জনসাধারণের চলাচলের রাস্তা ও ছড়া দখল করে স্থাপণা নির্মাণের ফলে এলাকাবাসী অনেক দুর্ভোগে পড়েছেন এবং এনিয়ে জনসাধারণের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তিনি এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে প্রশাসনের কাছে দাবি জানান।
সোমবার সরজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সখিনা সিএনজি গ্যাস পাম্পের মাত্র ৫০ ফুট দূরে এসব অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে।
ফলে উম্মুক্ত স্থানে ধুমপানের কারণে গ্যাস পাম্পে যেকোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ছড়া দখল করে আরও নতুন করে একটি দোকান নির্মাণ করছেন মুর্শেদ মিয়া নামে এক ব্যক্তি।
তিনি নিজেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান দাবী করেন। আরেক দখলদার নুরুল ইসলামের কাছে জানতে চাওয়া হয়- কিভাবে এখানে দোকানকোটা গড়ে তুললেন?
উত্তরে তনি জানান, আশিদ্রোন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জহর তরপদার তাদের এখানে বসিয়েছেন।
জানতে চাইলে আশিদ্রোন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জহর তরপদার জানান, তারা গরীব মানুষ, তাই আমি অস্থায়ীভাবে বসিয়েছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুর রহমান মামুন এলাকাবাসীর অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছুটিতে আছেন। আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ইউএনও আসলে করণীয় নির্ধারণ করা হবে।