শ্রীমঙ্গলে ‘জুন ক্লোজিং’ নামে ভুতুড়ে বিল
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ জুন ২০১৯, ১২:৩৬ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
জুন ক্লোজিংয়ের নামে আবাসিক মিটারে বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের ‘ভুতুড়ে বিল’ দিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে ‘চতুর্থধাপের ফাঁদে’ ফেলে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে শ্রীমঙ্গলস্থ মৌলভীবাজার পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি। এমন এক অভিযোগ পাওয়া গেছে, শহরতলীর কলেজরোডস্থ বিরাইমপুর আবাসিক এলাকার হাজী আব্দুস রশিদের এক ভাড়াটের কাছ থেকে। যার ব্যবহৃত মিটার নং (৯০০৯০৮৮৭), হিসাব নং (০৭৫/৫৭৭৫)। শুধু এ একটি মিটারেই নয়, আব্দুর রশীদের নামে আরো তিনটি মিটারে অতিরিক্ত বিল পল্লীবিদ্যুৎ থেকে দেয়া হয়েছে। সাধারণত পল্লীবিদ্যুতের এক মাস অন্তর অন্তর মিটার রিডিং নেয়া হয়ে থাকে। ওই গ্রাহকের অভিযোগ তার চলতি জুন মাসের বিলে অগ্রিম ৬ দিনের ভুতুড়ে বিল যোগ করে চতুর্থ ধাপের অতিরিক্ত মূল্য ধরে ৩০ দিনের প্রাক্কলিত বিল পরিশোধের জন্য দেয়া হয়েছে। তার অভিযোগ, পল্লীবিদ্যুতের দেয়া বিলে ৭০/৮০ ইউনিটের চতুর্থধাপের অতিরিক্ত বিল তাকে দেয়া হয়। তা পরিশোধের সর্বশেষ তারিখ উল্লেখ করা হয় ৩০শে জুন ২০১৯ইং।
এ বিল তিনি এনসিসি ব্যাংকে গতকাল সকাল ১১টার দিকে শ্রীমঙ্গল শাখায় পরিশোধ করেন। গ্রাহকের অভিযোগ- তাকে দেয়া বিলে মিটার রিডিং দেখানো হয়, চলতি মাসের ৯ই জুন। সাধারণত জুলাইয়ের ৫ তারিখের পরে এ বিল পরিশোধ হওয়ার কথা। অথচ গ্রাহকের কাছে জুন মাসের বিল পরিশোধের জন্য বিল আসে ২৪শে জুন। ওই দিন গ্রাহক বিল ও মিটার রিডিং চেক করে দেখতে পান গত ৯ই জুন থেকে ২৪শে জুন পর্যন্ত তার মিটারে ১৫ দিনে ব্যবহৃত বিদ্যুতের পরিমাণ ছিল ৮০ ইউনিট। মিটার রিডারের দেয়া ভুতুড়ে বিলের হিসাবে উল্লেখিত, ১৬ই মে থেকে ৯ই জুন পর্যন্ত এই ২৪ দিনে ওই গ্রাহকের মোট ব্যবহৃত বিদ্যুতের পরিমাণ দেখানো হয় ৩৯০ ইউনিট। ওই মিটারের ব্যবহারকারী ভাড়াটে মাহবুব বক্ত চৌধুরী বলেন, ‘আমার হিসাব মতে দৈনিক ১০/১১ ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার হওয়ার কথা। এ হিসেবে আমি গত মে মাসেরও বিল দিয়েছি। অথচ পল্লীবিদ্যুতের দেয়া জুন মাসের বিলে দৈনিক বিদ্যুতের ব্যবহৃত গড় ইউনিট ১৬.২৫ যেমন সত্য নয়, তেমনি ৫.৪ ইউনিটের হিসাবও সত্য নয়। যদি পল্লীবিদ্যুতের দেয়া প্রাক্কলিত বিলের হিসাব সঠিক হতো, তাহলে ১৫ দিনে ব্যবহৃত মিটারে তাদের দেয়া হিসাব মতে ২৪৩.৭ ইউনিট ব্যবহার হওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে ৮০ ইউনিট ব্যবহৃত হয়েছে বলে দাবি করেন মাহবুব।’
তিনি দাবি করেন, জুন ক্লোজিংয়ের নামে যেসব গ্রাহকদের বিল পরিশোধের সর্বশেষ তারিখ চলতি মাসের ৩০শে জুন দেখানো হয়েছে, তাদের সবার বিলেই ‘এস্টিমেইটেড’ ইউনিট যোগ করে এসব গ্রাহকদের চতুর্থধাপের বিলের ফাঁদে ফেলে অনেক টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। এমনকি প্রত্যেক বছরের জুন মাসে এভাবে গ্রাহকদের কাছ থেকে ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিলের মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা নেয়া হয়।’
মৌলভীবাজার পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির এজিএম সদস্য সেবা নগেন্দ্র নাথ সিং মুঠোফোনে বলেন, ‘এই বিলটা না দিয়ে থাকলে উনার ফাইনাল বিল কইরা সংশোধন করাই দিতাম। তারপরও অফিসে গিয়ে এই বিলটা চেক করে দেখব।’ তিনি বলেন, ‘জুন ক্লোজিংয়ের কারণে আমরা অনেক মিটার রিডিংই একটু আগাই দিছি। এরা এগুলো কাভার দিতে গিয়ে হয়তো মিটার রিডিং না দেইখ্যাও আন্দাজে রিডিং বসাই দিছে। হয়তো সে কারণে উনার কয় ইউনিট বিল বেশি দিছেন। পরিশোধ করার আগে আসতো তাহলে আমাদের সংশোধন করার সুযোগ থাকতো। তবে সবার ক্ষেত্রে যে এ রকম হবে বা হয়ে যাবে এ রকম যে একেবারেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যাবে না। আবার এ রকম যে হবে এ রকম তো সম্ভব না।’ তিনি বলেন, ‘সব বিল তো এইরকম হয় না। হয়তো মিটার রিডাররা তার চাপ কমানোর জন্য এ রকম হয়তো রেয়ার একটা দুইটা কেইস হইতে পারে। এ রকম হইলে গ্রাহক আমাদের দৃষ্টিগোচর করলে সংশোধন করে দেই।’