উপজেলা পরিষদ নির্বাচন : ওসমানীনগরে কোন্দলের খেসারত দিল আ’লীগ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ মার্চ ২০১৭, ৩:০৭ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
সিলেটের নবগঠিত ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদের প্রথম নির্বাচনে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের খেসারত দিল আওয়ামী লীগ। এ সুযোগে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান (সাধারণ) ও নারী ভাইস চেয়ারম্যন তিনটি পদই দখলে নিল বিএনপি। যদিও স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাংশ নৌকার ভরাডুবির জন্য দলীয় প্রার্থী নির্বাচনে নীতিনির্ধারকদের দায়ী করছেন। প্রার্থী মনোনয়নের সিদ্ধান্তটিই ভুল ছিল। তাদের দাবি, আখতারুজ্জামান চৌধুরী জগলুকে প্রার্থী করা হলে দলের এমন ভরাডুবি হতো না।
সোমবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মইনুল হক চৌধুরী ২০ হাজার ৭শ’ ৭৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত বিদ্রোহী প্রার্থী আখতারুজ্জামান চৌধুরী জগলু পেয়েছেন ১৮ হাজার ৬শ’ ৭৮ ভোট ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতাউর রহমান পেয়েছেন ১০ হাজার ৬৮ ভোট।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপির গয়াছ মিয়া ২৯ হাজার ৭শ’ ৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী ফেরদৌস খান পেয়েছেন ২১ হাজার ১শ’ ৪৭ ভোট। নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপির মুছলিমা আক্তার চৌধুরী ২৫ হাজার ৫শ’ ৩৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মুক্তা পারভীন ১৬ হাজার ৬০ ভোট, স্বতন্ত্র শারমিন আক্তার ৫ হাজার ৫শ’ ৯০ ভোট ও হুছনা বেগম ৩ হাজার ৮শ’ ৪৮ ভোট পান।
যুগান্তরে প্রকাশিত সংবাদ সত্য হল : ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশিত অনুসন্ধানমূলক সংবাদ সত্য হল। সোমবার অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনের আগে সংবাদে বলা হয়- আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ দলীয় কোন্দলসহ আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থী এবং তাদের সমর্থকদের কর্মকাণ্ড, নির্বাচনী প্রচারণাকে কেন্দ্র করে ডাবল মার্ডার হামলা-মামলা, সর্বোপরি বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলী নিখোঁজ ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে ভোটের মাঠে ষোলোআনা সুবিধা নেবে বিএনপি।
যে কারণে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি : ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদের প্রথম নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরাজয়ের জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ উপজেলাবাসী দলের বহিষ্কৃত বিদ্রোহী প্রার্থী আখতারুজ্জামান চৌধুরী জগলু ও তার সঙ্গে থাকা দলের স্থানীয় নেতাকর্মীদের দায়ী করছেন। আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীরা বলছেন, দল সঠিক প্রার্থী দিতে পারলে জয় নিশ্চিত ছিল। যেখানে আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থী মিলে ২৮ হাজার ৭শ’ ৪৬ ভোট পেয়েছেন, তার চেয়ে ৮ সহস্রাধিক ভোট কম পেয়ে বিএনপির প্রার্থী নির্বাচিত হন। এছাড়াও স্থানীয় আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মীর বিশ্বাসঘাতকতার প্রভাবও পড়েছে দলীয় প্রার্থীর ওপর।
আওয়ামী লীগের অনেকেই বলছেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের অনেক নেতা ও অঙ্গ-সংগঠনের অধিকাংশ নেতাকর্মী দিনরাত কাজ করেন দলের বিদ্রোহী প্রার্থী জগলু চৌধুরীর পক্ষে। ওসমানীনগরের বাসিন্দা সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাশেদুল ইসলাম রাশেদ বলেন, আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত ও বিদ্রোহী প্রার্থী জগলু চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে নির্বাচনে থাকায় ও কতিপয় নেতাকর্মী নৌকার বিরোধিতা করায় দলীয় প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন।
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, জামায়াত-বিএনপির আঁতাতের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনোনীত প্রার্থীকে যারা পরাজিত করেছেন, তারা দলের সঙ্গে বেইমানি করেছেন। এটা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিরোধিতার শামিল।