আমার প্রত্যাশা আর কোনো নারী যেন আমার মতো নির্যাতনের শিকার না হন -খাদিজা
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ মার্চ ২০১৭, ৩:১৪ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
খাদিজা হত্যাচেষ্টা মামলায় বদরুলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার দুপুরে সিলেট মহানগর দায়রা জজ আকবর হোসেন মৃধার আদালত এ রায় প্রদান করেন।
বদরুলের বিরুদ্ধে এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন হামলার শিকার খাদিজা বেগম নার্গিস। তিনি বলেছেন, নতুন করে জীবন গড়তে সব চেষ্টাই করবেন তিনি।
রায় পরবর্তী এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এমন কথা বলেন।
খাদিজা বলেন, ‘এ রায়ে আমি খুশি। আমার প্রত্যাশা, আর কোনো নারী যেন আমার মতো নির্যাতনের শিকার না হন। সবাই যেন নিজেদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন।’
আবার শিক্ষাজীবন শুরু করবেন কিনা, এমন প্রশ্নে খাদিজা বলেন, ‘আমি আমার জীবনকে নতুন করে গড়তে যা যা করা দরকার, সব চেষ্টাই করবো।’
এর আগে, সিলেট মহানগর দায়রা জজ আকবর হোসেন মৃধার আদালত খাদিজা হত্যাচেষ্টা মামলায় বদরুলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। একইসাথে তাকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে দুই মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
এ রায়ে মামলার বাদী ও খাদিজার চাচা আবদুল কুদ্দুস সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেছেন, আসামিপক্ষ যদি আপিল করে, তবে উচ্চ আদালতেও এ রায় বহাল থাকবে।
এ রায়কে ‘যুগান্তকারী রায়’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন খাদিজা হত্যাচেষ্টা মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট এ কে এম শিবলী।
তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী সাজ্জাদুর রহমান চৌধুরী বলেছেন, তারা এ রায়ে সন্তুষ্ট হতে পারেননি। উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
‘নারীর প্রতি অগ্রাধিকার দিয়ে রায় প্রদান করা হয়েছে’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
রায়ের পর আদালতের পিপি এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন, ‘নারী দিবসে পূণ্যভূমি সিলেটের ইতিহাসে ৩২৬ ধারায় বদরুল আলমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এটি একটি মাইলফলক। এ রায়ে দেশ ও জাতি খুশি হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৩ অক্টোবর খাদিজাকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছিলেন বদরুল। ঘটনার পর তাকে একমাত্র আসামি করে মামলা করেন খাদিজার চাচা। ঘটনার পর আটককৃত বদরুল আদালতে স্বীকারোক্তি দেন। শাবি ছাত্রলীগের সহসম্পাদক বদরুলকে ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে বদরুলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন খাদিজা। ১ মার্চ মামলাটি সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত থেকে মহানগর দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তর করা হয়। ৫ মার্চ যুক্তিতর্ক শেষে রায়ের তারিখ ধার্য করা হয়।