সিলেট বিমান বন্দরের রানওয়ে শক্তিশালী করার উদ্যেগ : নামবে বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ৩:৪৯ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজঃ সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজের নিরাপদে অবতরণ ও উড্ডয়নের জন্য রানওয়ে ও টেক্সিওয়ে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এজন্য প্রায় ৪৫২ কোটি টাকা ব্যয়ের ‘সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের বিদ্যমান রানওয়ে ও টেক্সিওয়ে শক্তি বৃদ্ধিকরণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্পে সায় দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
মঙ্গলবার একনেকের সভায় এ প্রকল্পটিসহ প্রায় দুই হাজার ৭২ কোটি টাকা ব্যয়ের মোট আটটি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পগুলোর ব্যয় সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে মেটানো হবে বলে জানান মন্ত্রী।
সভার পর তিনি বলেন, “সিলেট জেলার জনসংখ্যার উল্লেখযোগ্য একটা অংশ বিদেশ থাকে। বিশেষ করে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অনেক দেশে ইমিগ্র্যান্ট হিসেবে কাজ করে। প্রতিবছর সিলেট থেকে এসব দেশে প্রচুর জনসংখ্যা যাতায়াত করে। এ বিমান বন্দরে বছরে প্রায় দেড় লাখ যাত্রী সরাসরি বিদেশ যাতায়াত করছে। “কিন্তু অতিরিক্ত যাত্রী ও কার্গো উঠানামা করায় বিমান বন্দরটির রানওয়ের অ্যাসফাল্ট, ওভারলে যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে সাময়িক মেরামত করে ফ্লাইট পরিচালনা করা হলেও তা অধিক সংখ্যক ফ্লাইট উঠানামার জন্য যথেষ্ট নয়।”এমন পরিস্থিতে এ প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয় বলে জানান তিনি। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। তিনি জানান, বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া অন্যান্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে, ‘গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ (গোপালগঞ্জ জোন)’ প্রকল্প। এতে ব্যয় হবে ৩৯৫ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। ১৮২ কোটি টাকায় সংশোধন করা হয়েছে ‘পটুয়াখালী-কুয়াকাটা সড়কে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেল সেতু নির্মাণ প্রকল্প’। এর আগে এ প্রকল্পটির ব্যয় ছিল ১৩০ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। ‘দুইটি সংযোগ সড়ক (নিরালা এভিনিউ ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এভিনিউ) নির্মাণ প্রকল্প’। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। ৩২০ কোটি টাকায় বাস্তবায়ন করা হবে ‘চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন’ প্রকল্প। প্রায় ২৭৬ কোটি টাকায় বাস্তবায়ন করা হবে ‘যমুনা নদীর ডান তীরের ভাঙ্গন হতে গাইবান্ধা জেলার সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থাপনা রক্ষা প্রকল্প’। ৫২ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করা হবে ‘বরিশাল বিসিক শিল্প নগরীর অনুন্নত এলাকা উন্নয়ন এবং এলাকার অবকাঠামো মেরামত ও পূননির্মাণ প্রকল্প’ এবং ২৬৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করা হবে “শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড এনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন প্রকল্প’।
এদিকে সভায় পরিকল্পনামন্ত্রী চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের হালনাগাদ তথ্য তুলে ধরে জানান, গত জানুয়ারি পর্যন্ত অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে মোট ৩৯ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা ব্যয় করা সম্ভব হয়েছে। এ ব্যয় মোট বরাদ্দের ৩২ দশমিক ৪১ শতাংশ। এ ব্যয়কে তিনি ‘সর্বকালের সবচেয়ে বেশি বাস্তবায়ন’ বলে অবিহিত করেন। চলতি অর্থবছরের সাত মাসের এ ব্যয় গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ হাজার ২২৩ কোটি টাকা বেশি। গত অর্থবছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত মোট ব্যয় করা সম্ভব হয়েছিল ২৮ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ২৮ শতাংশ।