কার শক্তি কত বেশী, পুলিশ না চাঁদাবাজদের?
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ নভেম্বর ২০১৬, ৯:৫১ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
“কার শক্তি কত বেশী, পুলিশ না চাদাবাজদের” এমন প্রশ্ন এখন জামালগঞ্জের মানুষের মুখে-মুখে হাট বাজার ও চায়ের দোকানে আলোচনার কেন্দ্র বিন্ধুতে পরিণত হয়েছে। ক’দিন পূর্বে সুনামগঞ্জের নদী পথে চাঁদাবাজি বন্ধে নৌ-শ্রমিকদের লাগাতার ৫ দিন ব্যাপী নৌ-ধর্মঘটের বিষয়টি ছিলো জেলার সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও আঞ্চলিক দৈনিকে বেশ ক’দিন ধরে ফলাও করে প্রচার হতে থাকলে উর্দ্ধতন পুলিশ প্রশাসনের দৃষ্টি পড়ে সুনামগঞ্জের নদী পথে।
গত সোমবার সিলেটের উপ-সহকারী পুলিশ কমিশনার (এডিশনাল ডিআইজি) মো: নজরুল ইসলাম চাঁদাবাজি বন্ধের কঠোর ব্যবস্থা নিতে জামালগঞ্জ থানায় এসে স্থানীয় পুলিশ প্রসাশন, জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এর ক’দিন যেতে না যেতেই আবারো দুর্লভপুর রক্তি নদী ও গজারিয়ার শ্রীমন্তপুর নদীতে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করছে চিহ্ণিত চাঁদাবাজরা।
গত ২ দিন ধরে জামালগঞ্জ থানার দুই কিলোমিটার অদুরে দুর্লভপুর সুরমা নদী ও রক্তি নদীতে চলন্ত মালবাহী ভাল্কহেড, কার্গো, ষ্টিল বডি নৌকা, সাধারণ নৌকায় প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনা স্থলে যেতে না যেতেই চাঁদাবাজরা গা ঢাকা দেয়। চাঁদাবাজদের ধরতে না পেরে যে নৌকায় তারা চাঁদাবাজি করতো, ওই নৌকা অটক করে জামালগঞ্জ থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। কারা এর সাথে জড়িত পুলিশ তা জেনেও তাদেরকে ধরা ছোঁয়ার বাইরে রাখছে বলে এলাকাবাসীর মনে নানান প্রশ্ন উকি দিচ্ছে। এলাকাবাসী বলছে পুলিশ আন্তরিক হলে ওদের ধরা তেমন কোন কঠিন কাজ না।
সুনামগঞ্জ মালবাহি নৌযান শ্রমিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী তালুকদার বলেন, রক্তিতে খালি বডি নৌকা ডুকলেও ১ থেকে দেড় হাজার টাকা আদায় করে চাঁদাবাজরা। দুর্লভপুর খেয়া ঘাটে মালামাল উঠা নামার সময় নোঙ্গর করা জাহাজ ও নৌকা থেকে ৫০-৭৫ টাকা করে টোল নেয়ার কথা, কিন্তু ইজার নাম করে সুরমা নদীতে মালবাহি চলন্ত প্রতি নৌকা থেকে সম্পূর্ণ বেআইনী ভাবে ৫ শত থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিচ্ছে চাঁদাবাজ চক্রটি। দুর্লভপুর খেয়া ঘাটের ইজারাদার এনামুল হক পাঠানকে বার বার ফোন দিলে তিনি রিসিপ না করে লাইন কেটে দিয়ে ফোন বন্ধ করে দেনে।
জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা মুক্তিযোদ্ধ ইউনিটের ডেপুটি কমান্ডার ইউসুফ আল-আজাদ বলেন, আমার মনে হয় চাঁদাবাজরা পুলিশ প্রশাসনের সাথে চ্যালেঞ্চ করেছে। না-হয় এডিশনাল ডিআইজি মহোদয় জামালগঞ্জে এসে চাঁদাবাজি বন্ধের ব্যাপারে যে ভাবে কঠোর কথা বলেছেন সেখানে চাঁদাবাজরা পালিয়ে থাকার কথা। এখন শুনা যায় দুর্লভপুর হয়ে গজারিয়া ও শ্রীমন্তপুর এলাকায় বেপরোয়া চাঁদাবাজি হয়। কে তড়াবে ওদের ? না-কি রক্ষকরাই ভক্ষক।
থানার অফিসার ইন-চার্জ মো: অতিকুর রহমান বলেন, সুরমা নদীতে চাঁদাবাজির গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে চাঁদাবাজরা যে নৌকা দিয়ে চাঁদাবাজি করে তা ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। ওই নৌকা আটক করে জামালগঞ্জ থানায় রাখা হয়েছে।
সুনামগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (দিরাই সার্কেল) মোহাম্মদ সুরুত আলম বলেন, চাঁদাবাজদের সাথে কোনো আপোষ নেই, এ ব্যাপারে আমরা কঠোর নজরদাড়ি করছি। যারা চাঁদাবাজি করবে তাদেরকে ধরে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে এবং তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।