শ্রীমঙ্গলের অপ্সরার মানবিকতায় মুগ্ধ উপজেলা প্রশাসন : বৃত্তির পুরো টাকা দান করলো ত্রাণ তহবিলে
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ জুন ২০২০, ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ
স্বপন দেব, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
হৃদয় কতোটা প্রসারিত হলে নিঃস্বার্থ আর মানবিক হওয়া যায়? অপ্সরা দেব পড়শী, শ্রীমঙ্গল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির মেধাবী শিক্ষার্থী। শ্রীমঙ্গল কাঁচা বাজারের ডিম বিক্রেতা পরিতোষ দেবের মেয়ে। গত এক বছরের উপবৃত্তি বাবদ সে ১২শত টাকা পেয়েছে। সোমবার (৮ জুন) সে পুরো টাকাটাই করোনা-দূর্গত মানুষদের সহায়তা করার জন্য শ্রীমঙ্গলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: নজরুল ইসলামের কাছে ত্রাণ তহবিলে প্রদান করেছে৷
সে সময় ইউএনও তাকে (অপ্সরা) বলেন, ‘তোমার নিজের লেখাপড়ার জন্য টাকাটা কাজে লাগাতে পারতে।’ উত্তরে সে বলল, ‘এই মুহূর্তে অসহায় মানুষদের সহায়তা করাটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।’
ইউএনও বলেন, এই করোনাকালে নিত্যদিন অনেক ইতিবাচক- নেতিবাচক ঘটনার স্বাক্ষী হয়ে দিনাতিপাত করছি৷ দায়িত্ব পালনকালীন হৃদয়ে নাড়া দেওয়া গুটিকয়েক আশাব্যঞ্জক ঘটনার মধ্যে এটি নিশ্চিতভাবেই অন্যতম হয়ে থাকবে। একজন অন্যজনের বিপদে এগিয়ে আসা, পাশে দাঁড়ানো, সহমর্মিতা প্রকাশ করা, নিজের সুখের জন্য ব্যস্ত না হয়ে অন্যের মুখে হাসি ফোটাতে চেষ্টা করাই মনুষ্যত্বের পরিচায়ক।
কবির এই কথাগুলো যেন অপরের জন্য হৃদয়ে এত ভালবাসা জমে থাকা অপ্সরা দেব পড়শী মতো মানুষের জন্যই লেখা হয়েছিল। “পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি, এ জীবন মন সকলি দাও, তার মতো সুখ কোথাও কী আছে? আপনার কথা ভুলিয়া যাও।”
যখন আমরা নিজের স্বার্থপর স্বত্তাকে জয় করতে পারি, তখন আমাদের সব অন্ধকার আলোয় রুপান্তরিত হয়। এই অপ্সরারাই আমাদের আলো, এক বিন্দু পানিতে গোটা এক সাগর।
আসুন, আমরা সবাই প্রার্থনা করি। প্রভু, আমাদের যোগ্য করো। গতকাল চলে গেছে, আগামীকাল এখনো আসেনি, আমাদের জন্য আছে আজকের দিন, এখনই শুরু করা যাক।