শ্রীমঙ্গলে ফের ফুটপাত দখল : যেন লোক দেখানো ইঁদুর-বিড়াল খেলা
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২:৪৮ অপরাহ্ণ
তোফায়েল পাপ্পু, শ্রীমঙ্গল:
পর্যটন শহর শ্রীমঙ্গল জুড়ে অবৈধ দখলকৃত ফুটপাত দখলমুক্ত করার দুই দিন যেতে না যেতেই আবারো অবৈধ ব্যবসা প্রতিষ্টান নিয়ে বসেছেন দোকানিরা। আর রাস্তার পাশ ফাঁকা থাকলে সারি সারি দাঁড় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে মোটরবাইক, যানবাহন। আর এতে মারাত্বকভাবে ব্যহত হচ্ছে পথচারীদের পথচলা। একে তো নেই পথচারী চলাচলের রাস্তা, যাও আছে তা কোথাও মূলত রাস্তার পাশে থাকা ড্রেন, কোথাও একটু বড় পরিসরের জায়গা। জনগণের চলাফেরার রাস্তায় বাধাসৃষ্টিকারীদের কারনে ‘ফুটপাত’ দিয়ে হাঁটতে না পেরে যানবাহনের পাশ দিয়ে মুল সড়ক ধরে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন পথচারীরা। এ অবস্থায় তিনদিন আগের পৌরসভার উচ্ছেদ অভিযানকে লোকদেখানো ও আইওয়াশ আখ্যা দিচ্ছেন পথচারিরা।
কারন হিসেবে তারা বলছেন, সুষ্ট, সমন্বিত ও টেকসই পরিকল্পনা না থাকায় ঝটিকা অভিয়ান করে সাময়িক সময়ের জন্য ফাঁকা করে দেওয়ার সংস্কৃতি থেকে এখনো বেরিয়ে আসতে পারেনি এ প্রতিষ্টানটি। প্রসঙ্গত, গত ১১ ফেব্রুয়ারি শ্রীমঙ্গল থানাকে সাথে নিয়ে ফুটপাত দখলমুক্ত করতে দুটি সড়কে পৌরসভার সহকারি প্রকৌশলীর নেতৃত্বে অভিযান করে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ।
রোববার দুপুরে শহর ঘুরে দেখা গেছে, গত ১১ ফেব্রুয়ারি পৌরসভা কর্তৃক উচ্ছেদকৃত স্টেশন সড়ক থেকে হবিগঞ্জ সড়কের ফায়ার সার্ভিস অফিস সংলগ্ন ব্রিজ পর্যন্ত সড়কে আগের মতোই ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ীরা ও বৈধ দোকানীরা তাদের মালামাল নিয়ে ফুটপাতগুলো দখল করে রেখেছেন, নিজের দোকানের সামনে সরকারী জায়গায় দেওয়া অবৈধ দোকান বসিয়ে দিয়ে ভাড়া তুলে নিচ্ছেন অনেকে। শহরের মৌলভীবাজার সড়ক, কলেজ সড়ক, ভানুগাছ সড়কের ফুটপাতগুলো আগের মতোই রয়েছে অবৈধ দখলবাজদের দখলে। এসব অবৈধ দোকান থেকে পৌরসভার রশিদ বিহীন নীরব চাঁদাবাজিও অব্যাহত রয়েছে ঠিক আগের মতোই।
শহরের ব্যবসায়ী সারোয়ার জাহান জুয়েল বলেন, মেয়াদ উর্ত্তীর্ণ পৌরসভার মেয়র -কাউন্সিলর আসীন থাকায় পৌরবাসীর জনভোগান্তিগুলো দিন দিন অসহনীয় পর্যায়ে চলে আসছে। মামলাধীন থাকায় অনির্দিষ্ট ও অসীম মেয়াদে থাকা এ জনপ্রতিনিধিদের কোন দায় নেই পৌরবাসীর কাছে। ‘ইতিহাস বলে এ ইঁদুর – বিড়াল খেলা চলতে থাকবে। পৌরসভা লোক দেখানো অভিযান করেছে বিধায়ই উচ্ছেদ অভিযান করার পরের দিনই আবার ফুটপাতগুলো দখল হয়ে যায়। আমরা চাই পৌরসভা শ্রীমঙ্গল শহরের সৌন্দর্য রক্ষায় জরুরী ভিত্তিতে টেকসই পদক্ষেপ পৌরসভা যেন নেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফুটপাতের একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমাদের হঠাৎ করেই উচ্ছেদ করার আগে আমাদের পুনর্বাসন করে হোক। আমরাও চাইনা রাস্তার পাশে পড়ে থাকতে। আর আমরা তো দৈনিক রশিদ বিহীন বিভিন্ন অংকের টাকা দিয়ে থাকি তোলাদারদেরকে।
নজরুল ইসলাম নামে একজন বলেন, ‘সিলেটকে দেখে শিখুন, সিলেটের মেয়রকে দেখে শেখার রয়েছে আমাদের। দায় চাপানোর সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতিকে একপাশে রেখে সামগ্রিক স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে প্রকৃত সেবার মানসিকতায় পৌর ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষ নাগরিক সমাজের পরামর্শক্রমে শ্রীমঙ্গলকে সাজাতে এগিয়ে আসে তাহলে ছোট্ট এ পৌরসভাকে জঞ্জালমুক্ত করা খুব একটা দুরহ কাজ নয়। বরঞ্চ, একটি স্বচ্ছ শহরের ‘মডেল’ হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। শুধূ পরিকল্পনা করে লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করে ‘ক্রাশ’ প্রোগ্রাম হাতে নিতে হবে।
শ্রীমঙ্গল পৌরসভার সহকারি প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম ইসলাম বলেন, আমরা উচ্ছেদ অভিযান করার পরও যদি কেউ আবার বসে থাকে বা ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ীদের কেউ বসায় বা অবৈধ পাকির্ং থাকে তাহলে এবার ‘জিরো টলারেন্স’ অনুসরণ করে তাদের বিরুদ্ধে আমরা কঠিন ব্যবস্থা গ্রহন করবো এবং আমাদের মনিটরিং অব্যাহত থাকবে। এ ব্যাপারে কাউকে কোন ছাড় দেওয়া হবে না।