সিলেট মহানগরী বড় হবে ছয়গুন, তবে…!
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ জুলাই ২০১৯, ১০:০৬ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
সিলেট নগরীর আয়তন ছয়গুন বড় হবে। তখন সিলেট সিটি করপোরেশনের আওতাভূক্ত হয়ে যাবে সিলেট সদর ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন।
এর মধ্যে রয়েছে সদর উপজেলার খাদিমপাড়া, টুলটিকর, টুকেরবাজার, খাদিমনগর ও কান্দিগাঁও ইউনিয়ন এবং দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কুচাই, বরইকান্দি ও মোল্লারগাঁও ইউনিয়ন। এছাড়া গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাঘা ইউনিয়নের আংশিক এলাকাও।
১৭বছর বছর আগে ২০০২ সালে যাত্র শুরু করা সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক এর আয়তন ছিল ২৬ দশমিক ৫০ বর্গকিলোমিটার।
২০১৪ সালের জুলাইয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) আয়তন বাড়ানোর উদ্যোগ নেয় নগর কর্তৃপক্ষ।
নগরীর আয়তন বর্তমানের প্রায় ছয় গুণ বৃদ্ধির একটি প্রস্তাব জমা দেয়া হয় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে। তবে নানা জটিলতায় প্রায় পাঁচ বছর পরও প্রস্তাবটি ফাইলবন্দি হয়ে পড়ে আছে।
নানা জটিলতায় প্রায় পাঁচ বছর পরও যখন প্রস্তাবটি ফাইলবন্দি তখন নগরের আয়তন বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় কাজ চলছে; এমন দায়সারা উত্তর নগর কর্তৃপক্ষের।
এদিকে নগর সম্প্রসারণ সম্ভব না হওয়ায় নগরীর আশপাশের এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের কাছ থেকে কর আদায় করতে পারছে না সিসিক কর্তৃপক্ষ। অথচ তারা নগর কর্তৃপক্ষের সব ধরনের সেবা ভোগ করছে। ফলে সিসিকের ব্যয় বাড়লেও আয় বাড়ছে না।
১৮৭৮ সালে পৌনে দুই কিলোমিটার আয়তন নিয়ে সিলেট পৌরসভার যাত্রা শুরু হয়। এরপর ২০০২ সালে ২৬ দশমিক ৫০ বর্গকিলোমিটার বিস্তৃতি নিয়ে যাত্রা শুরু করে সিলেট সিটি করপোরেশন। আয়তন ও লোকসংখ্যা কম হওয়ায় নগরীর ব্যয় সামলাতে শুরু থেকেই হিমশিম খেতে হয় সিসিক কর্তৃপক্ষকে। এছাড়া সিটি করপোরেশনের মধ্যে ইউনিয়নের মতো বেশকিছু বিচ্ছিন্ন এলাকা থাকায় নগর ব্যবস্থাপনায়ও সমস্যায় পড়তে হয়। ফলে নগরীর সম্প্রসারণের জন্য ২০১৪ সালে মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাব পাঠায় সিসিক।
জানা যায়, প্রস্তাবটি মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর পর মন্ত্রণালয় থেকে তা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য সিলেট জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়। যেটি এখন পর্যন্ত জেলা প্রশাসকের দপ্তরেই আটকে আছে। তবে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রস্তাবটি যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান বলেন, ২০১৫ সালে মাঠপর্যায়ের সর্বশেষ অবস্থা জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রস্তাবটি সিলেট জেলা প্রশাসকের কাছে প্রেরণ করা হয়। এর পর থেকে প্রস্তাবটি জেলা প্রশাসনেই আটকে আছে।
সিসিক সূত্রে জানায়, পাঁচ বছর আগে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ওই প্রস্তাবে বলা হয়, সিসিকের সেবা কার্যক্রম বেড়েছে। এখন নগরের বাইরের লোকজনও করপোরেশনের সেবা নিচ্ছে। কিন্তু তাদের কাছ থেকে কোনো কর আদায় করা যাচ্ছে না। তাই সিটি করপোরেশনের নিজস্ব আয় বৃদ্ধি ও নাগরিকদের অধিকতর সেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে পরিধি বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। প্রস্তাবটি পাস হলে ২৬ দশমিক ৫০ বর্গকিলোমিটারের সঙ্গে আরো ১৬০ দশমিক ৬২ বর্গকিলোমিটার যুক্ত হবে। ফলে করপোরেশনের মোট আয়তন হবে ১৮৭ দশমিক ১২ বর্গকিলোমিটার।
প্রস্তাবে উত্তরে খাদিমনগর চা-বাগান, দলদলি চা-বাগান ও সালুটিকর, দক্ষিণে শুড়িগাঁও, মামুদপুর, রুস্তমপুর, কালাইরচক, ঢুমশ্রী ও ছাত্তিঘর, পশ্চিমে চাতল, উত্তর ঘোপাল, কসকালিয়া, বাওনপুর, ইনায়েতপুর, হরিপুর, রঘুপুর, দর্শা, মেদিনীমহল, লক্ষ্মীপাশা, হাজরাই, তালিবপুর ও লক্ষ্মীপুর এবং পূর্বে বটেশ্বর, বাঘা, হাতিমনগর, আমদরপুর, উত্তরভাগ, বাগরখলা, হিলালপুর, মাইজভাগ, দাউদপুর ও তিরাশিগাওকে সিটি করপোরেশনে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দেয়া হয়।
প্রস্তাবটি পাস হলে বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে সিলেট সদর ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন। এর মধ্যে রয়েছে সদর উপজেলার খাদিমপাড়া, টুলটিকর, টুকেরবাজার, খাদিমনগর ও কান্দিগাঁও ইউনিয়ন এবং দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কুচাই, বরইকান্দি ও মোল্লারগাঁও ইউনিয়ন। এছাড়া গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাঘা ইউনিয়নের আংশিক এলাকাও যুক্ত হতে পারে।
এ ব্যাপারে সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা এরই মধ্যে এ ব্যাপারে কিছু কাজ সম্পন্ন করেছি। আমরা যাচাই-বাছাই করে দেখছি কোন কোন এলাকা সিটি করপোরেশনে অন্তর্ভুক্ত করা যায়। যাচাই-বাছাই শেষে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হবে।