সিলেটে এ্যডভেঞ্চার প্রিয় পর্যটকদের নতুন আকর্ষণ ‘জিপ লাইন’
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ জুন ২০১৯, ৭:১১ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
সিলেটে ঈদ আনন্দে দুঃসাহসিক এ্যডভেঞ্চার প্রিয় ট্যুরিস্টদের পদচারণায় মুখরিত শহরতলির খাদিমনগর জাতীয় উদ্যান। এ উদ্যানে ভয়কে জয় করতে রয়েছে এ্যডভেঞ্চার প্রিয় পর্যটকদের ভয়ংকর রাইড জিপ লাইন, ট্রি এ্যাকটিভিটিজ। পাশাপাশি রয়েছে স্ব-পরিবারে ৬৭৮.৮০ হেক্টর আয়তনের বিশাল উদ্যানের প্রায় ২১৭ প্রজাতির উদ্ভিদ ও ৮৩ প্রজাতির বন্যপ্রাণী ঘুরে দেখার সুযোগ।
সব মিলিয়ে ঈদ আনন্দে খাদিমনগর জাতীয় উদ্যান এখন ট্যুরিস্টদের পদচারণায় মুখর বলে জানালেন উদ্যান কর্মকর্তা আব্দুল কাদের।
ঘন গাছপালা বেষ্টিত প্রাকৃতিকভাবে তৈরি স্তব্ধ নিরিবিলি এ উদ্যানে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ২৩ টাকা প্রবেশ মূল্যে পর্যটকরা আরো দেখতে পারবেন ৬টি নয়নাভিরাম চা বাগান, প্রাকৃতিক ছড়া, বোমা ঘর (কথিত আছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সে ঘরে সমরাস্ত্র রাখা হতো), সারি সারি নানা প্রজাতির বাঁশ বাগান ও বিট অফিস। ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত হয়ে পড়লে রেস্টিং সেডে কিছু সময় রেস্ট নিতেও পারবেন। তাছাড়া রয়েছে ট্যুরিস্ট সপ, পিকনিক স্পট, ইকো কটেজ, রেস্টিং বেঞ্চ, পার্কিং স্থান ও ওয়াশ রুম।
তবে খাদিমনগর জাতীয় উদ্যানে প্রধান আকর্ষণ জিপ লাইন। একশত টাকায় টিকিট কেটে চড়তে হয় জিপ লাইনে। যাদের হার্ড দুর্বল তারা ব্যতীত দুঃসাহসিক এ্যডভেঞ্চাররা ভয়ংকর এ রাইডে চড়ে এক অন্যরকম অভিজ্ঞার স্বাদ নিতে পারবেন।
এদিকে যারা গহীন ঘন জঙ্গলে যাত্রি যাপন করতে পছন্দ করেণ তাদের জন্য তাবুতে রাত্রী যাপনের ব্যবস্থা রয়েছে।
দুর্ঘটনা এড়াতে জিপ লাইন ও ট্রি এ্যাকটিভিটিজ রাইডে পর্যটকদের শরীরে বেল্ট বাঁধা হলেও পর্যাপ্ত নয় বলে দর্শনার্থীরা অভিযোগ করেন। এছাড়াও বিশাল উদ্যানে নেই কোনো নিরাপত্তা। দল বেঁধে না চললে যেকোনো মুহূর্তে জীবজন্তু আক্রমণ কিংবা দুষ্টলোকের খপ্পরে পড়ে মোবাইল, টাকাপয়সা হারানোর ভয় রয়েছে। নিরাপদে সবকিছু ঘুরে দেখতে যদিও কর্তৃপক্ষ উদ্যানের গাইড সাথে রাখার পরামর্শ দেন।
কয়েকজন দর্শনার্থীর সাথে কথা হলে মুর্শেদ নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ঈদ আনন্দে বন্ধুদের সাথে খাদিমনগর জাতীয় উদ্যান ঘুরতে এলাম। অপরূপ বৈচিত্র্যে ভরপুর একেবারে অন্যরকম জায়গা। ভালো লেগেছে। একা আসলে ভয়ে হয়তো পুরোটা ঘুরে দেখতে পারতাম না। উদ্যানের প্রবেশের সড়ক ভালো না। দ্রুত সড়কের উন্নয়ন প্রয়োজন। সেই সাথে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার। আর জিপ লাইন রাইডের ফি ১০০ টাকা বেশি হয়ে যায়। সেখানে অর্ধেক করার দাবি তোলেন মৌলভীবাজার থেকে আসা পর্যটক সবুজ আহমদ।
কথা হয় খাদিমনগর জাতীয় উদ্যানের সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রশাসনিক সহকারী আব্দুল কাদেরের সাথে। তিনি বলেন, ঈদে এ্যডভেঞ্চার প্রিয় পর্যটকদের সংখ্যা বেড়েছে। দুঃসাহসিক ও রোমাঞ্চপ্রিয় পর্যটকরা মূলত জীববৈচিত্র ভরপুর উদ্যান দেখতে আসছেন। উদ্যানের সড়কে নতুন কালভার্ড স্থাপনের কাজ প্রায় শেষের পথে। কালভার্ড তৈরি হলে যাতায়াতের আর সমস্যা থাকবে না বলে জানান তিনি।
যাতায়াত :
সিলেট শহর থেকে ১৩ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে সিলেট সদর উপজেলা অবস্থিত। জেলা সদর থেকে সিলেট-তামাবিল সড়কে সিএনজি, অটোরিকশা, বাস অথবা প্রাইভেট গাড়িযোগে ৮ কিলোমিটার দূরত্বে হযরত শাহ্পরাণ (র.) এর মাজারের পার্শ্ববর্তী খাদিম চৌমুহনী হতে সোজা উত্তরে ৫ কিলোমিটার সড়ক পথে খাদিমনগর জাতীয় উদ্যানে যাওয়া যায়। এছাড়া, এয়ারপোর্ট-ধোপাগুল-সাহেববাজার-কালাগুল হয়েও যাওয়ার সড়ক রয়েছে।