সিলেটে চিকিৎসককে হত্যা ও ধর্ষণের হুমকিদাতা সেই ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ মে ২০১৯, ৪:০৩ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসককে হত্যা ও ধর্ষণের হুমকিদাতা ছাত্রলীগ নেতা সারোয়ার হোসেন চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন সিলেট ছাত্রলীগের বিষফোঁড়া কথিত এই নেতাকে আজ মঙ্গলবার সাড়ে ১২টায় নগরী কোর্ট পয়েন্ট এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিসি (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ, পিপিএম।
এদিকে, আজ ( মঙ্গলবার) দুপুরে ছাত্রলীগ নেতা ও তার সহযোগীদের গ্রেফতারে আল্টিমেটাম বেঁধে দিয়েছেন ইর্ন্টান ডাক্তাররা। সিলেট চৌহাট্টাস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ঘোষিত মানববন্ধন শেষে বক্তারা মামলা রুজুর ঘটনাকে সাধুবাদ জানালেও, আসামীদের গ্রেফতারের জন্য পুনরায় ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন, পাশাপাশি উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইর্ন্টানরা কর্মবিরতি কর্মর্সূচী অব্যাহত রাখার ঘোষনা দেন। সোমবার নগরীর মিরবক্সটুলাস্থ উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করন ডা. ইফাত আরা চৌধুরী। তারা আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে সন্ত্রাসী সারোয়ার হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা গ্রহন ও গ্রেফতারের দাবিতে সিলেটের সকল মেডিকেলের ইন্টার্ণ ডাক্তারদের কর্মবিরতি শুরুর আহ্বান জানান।
গত শনিবার (১১ মে) বিকালে দায়সারা গোছের একটি সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেই ঘটনা চাপিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টা করেছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এ যেন আগুনে ঘি ঢেলে দেয়ার মতো রূপ নেয়। কর্মবিরতি সহ নানা কর্মসূচী নিয়ে মাঠে নামে সিলেটের সবক‘টি হাসপাতালের ইন্টার্ন ডাক্তাররা ইন্টার্ন ডাক্তাররা। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রলীগ নেতা সারোয়ার চৌধুরীরের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেফতারে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেয় ইর্ন্টান চিকিৎসকরা। এরই-পেক্ষিতে ঘটনার ৪দিন পর সোমবার সোমবার (১৩ মে) রাতে কতোয়ালী মডেল থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ফেরদৌস হাসান।
এদিকে, একাধিক সূত্র জানিয়েছে এমনিতেই নানাভাবে বির্তকিত সারোয়ার চৌধুরী। গ্রামের বাড়ী সিলেট বিয়ানীবাজার উপজেলার চারখাই এলাকায়। দীর্ঘ ৭ বছর মধ্যপ্রাচ্যের কাতারের কর্মরত ছিলেন। ২০১৩ সালে দেশে ফিরে সরকার দলীয় সংগঠন ছাত্রলীগের ছায়ায় ভিড়েন। গ্রুপিং রাজনীতিতে বলিয়ান দক্ষিণ সুরমা এলাকার বাসিন্দা না হয়েও ওই উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির পদ তিনি বাগিয়ে নেয়। ঘটনাটি ব্যাপক আলোচিত হলেও, অস্থানীয়-অছাত্র বির্তকিত সারোয়ার চৌধুরীর পদবী ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেয়নি তৎকালিন ছাত্রলীগ। কিন্তু ঐতিহ্যের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সেই পদ বহনের ক্ষমতা যে নেই, তা-ই প্রমাণ করেছেন প্রকাশ্যে ধর্ষণ্ও লাশ ফেলে দেয়ার হুমকি প্রদানের মাধ্যমে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (৯ মে) বিকালে ১০-১৫ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী পেটের পীড়ায় ভোগা একজনকে সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। রোগীর সঙ্গে একজন থেকে বাকিদের বাইরে যেতে বলেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে চিকিৎসকের ওপর চড়াও হন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এসময় দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সারোয়ার হোসেন চিকিৎসক নাজিফা আনজুম নিশাতকে ছুরি প্রদর্শন করে হত্যা ও ধর্ষণের হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেন ওই চিকিৎসক। নিশাত নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে বিষয়টি উল্লেখ্য করে পোস্ট দিলে এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়।