সিলেটে ফের আলোচনায় পীযূষ
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ জুন ২০১৭, ১২:২৭ পূর্বাহ্ণ
ওয়েছ খছরুঃ
সিনিয়র সহ-সভাপতি হলেন সিলেটের পীযূষ কান্তি দে। সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের এই পদ এখন তার। কিন্তু স্বেচ্ছাসেবক লীগের মহানগর সাধারণ সম্পাদক পদটি ছিল তার পছন্দের। এ কারণে ২২ মাস আগে যখন সম্মেলন হয় তখন তিনি এ পদটির জন্য লড়াই করেছিলেন। কিন্তু পারেননি। সহকর্মী দেবাংশু দাশ মিঠুর সঙ্গে লড়াই করে হেরে গিয়েছিলেন। অনেকেই ধারণা করেছিলেন, আওয়ামী রাজনীতি থেকে হয়তো বিদায় নিতে যাচ্ছেন সিলেটের পীযূষ কান্তি দে। তাকেও অনেকটা এড়িয়ে চলেছিলেন নেতারা। এর মধ্যে চার মামলায় কারাবরণ করেছেন পীযূষ। কিন্তু অল্প দিনের মধ্যে ফের দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে ঠাঁই হলো তার। এজন্য ফের সিলেটে আলোচনায় এসেছে পীযূষ। আর স্বেচ্ছাসেবক লীগে ঠাঁই হওয়ার পর তাকে নিয়ে ফের সরব হয়ে উঠেছে সিলেটের ‘পীযূষ গ্রুপ’। ইতিমধ্যে গ্রুপের নেতারা পিযূষকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সিলেটের রাজনীতিতে আলোচিত নেতার নাম পীযূষ কান্তি দে। বর্তমান সরকারের শাসনে সিলেটে যে নেতা সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছেন তিনি হলেন পীযূষ। নানা ঘটনার আবর্তে ঘুরপাক খাওয়ার কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টার্গেট ছিল তার ওপর। এই পীযূষের রাজনীতি শুরু সিলেটের মদন মোহন কলেজ ক্যাম্পাস থেকে। তখন ছাত্র পীযূষ কান্তি দে। খুব কম দিনেই সিলেটে আলোচনায় আসেন। প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের ক্যাডারদের সঙ্গে রাজপথে মুখোমুখি লড়াই হয়েছে তার। এমনকি নিজ দলের ক্যাডারদের মুখোমুখি হতে হয়েছে। কিন্তু সাংগঠনিক দক্ষতা রয়েছে তার। এ কারণে মদনের ছাত্র থাকাকালেই ওই কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান তিনি। সাধারণ সম্পাদকের পদ পাওয়ার পর পীযূষ গোটা কলেজ ও আশপাশ এলাকায় একতরফা নিয়ন্ত্রণ চালান। নিজেই গ্রুপ গড়ে তোলেন তিনি। নাম দেন ‘পীযূষ গ্রুপ’। আর গ্রুপ নামকরণের পর থেকে পীযূষের পিছুটান শুরু হয়। গ্রুপের কর্মীদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড তার পিছু ছাড়েনি। এসব নিয়ে হামলা-পাল্টা হামলা হয়। মামলা পর্যন্ত গড়ায় অনেক ঘটনা। সেই থেকে পীযূষকে নিয়ে আলোচনা শুরু হয় সিলেটে। বিগত চারদলীয় জোট সরকারের সময় পীযূষকে সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব দেয়া হয়। আর বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর পীযূষ শুরুতেই বেশ নীরব ছিলেন। কিন্তু সরকারের এক বছর যেতে না যেতেই পীযূষ নানা ঘটনায় আলোচনায় আসেন। ২০১৫ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর সিলেটের রেজিস্ট্রারি মাঠে জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন হয়। কাউন্সিলে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হন পীযূষ কান্তি দে। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সিলেট সরকারি কলেজের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা দেবাংশু দাশ মিঠু। কাউন্সিলে মিঠুর কাছে পীযূষ হারলেও কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে ঘরে ফিরে যান। ঘরে ফিরলেও সিলেটের রাজপথের রাজনীতিতে পদবিহীন অবস্থায়ও পীযূষ ফ্যাক্টর হয়ে ওঠেন। এবার ছাত্রলীগের কমিটিতেও তার বলয়ের নেতারা চমক দেখান। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদ চলে যায় তার বলয়ে। সর্বশেষ গত রোববার প্রকাশিত সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নতুন কমিটিতে সিনিয়র সহ-সভাপতি করা হয় পীযূষকে। এই পদ পেয়েও খুশি পীযূষ কান্তি দে। গতকাল তিনি মানবজমিনকে জানিয়েছেন, ‘রাজনীতি একা করি না। সবাইকে নিয়ে করি। এ কারণে গ্রুপের অনেকের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড অযথাই আমার ওপর পড়ে। কিন্তু এতে বিচলিত হইনি। সবাইকে নিয়ে চলতে হলে কাউকে না কাউকে দায়িত্ব নিতে হবে।’ পীযূষ বলেন, ‘প্রায় দেড় বছর আগে তিনি চারটি মামলায় জেল খেটেছেন। তাকে গ্রেপ্তার করে জেলে নেয়া হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্য, এখনো জানলাম না কেন আমি জেল খাটলাম।’
পীযূষকে সংবর্ধনা: স্বেচ্ছাসেবক লীগ সিলেট জেলা শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক, মদন মোহন কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক পীযূষ কান্তি দে’কে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছে ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ। নগরীর মির্জাজাঙ্গালস্থ ছাত্রলীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে তাকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নবগঠিত কমিটির সহ-সভাপতি সুপ্রিয় চৌধুরী রাজ, সহ-সভাপতি শাহ নেওয়াজ আহমদ, বিক্রম কর সম্রাট, সদস্য নির্মল সিংহ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য প্রবাল চৌধুরী পুজন, শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি কামরুল ইসলাম, সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সজল দাস অনিক, যুবলীগ নেতা উত্তম দেব, সিলেট মহানগর ছাত্রলীগ নেতা তপন চৌধুরী, জুয়েল দাশ, আব্দুর রহমান লিমন, সজীব গাজী রাহুল, সাইফুল আলম, নুর আলম, শেখ লিপন, বিপ্লব এষ, সাজু আহমদ, ইমরান খান, বাপ্পা পাল, শান্ত দেব, শাহরিয়ার হাসান, ময়নুল ইসলাম, এম নোমানসহ প্রায় কয়েকশ’ নেতা। সূত্র-মানবজমিন।