সংকট কাটছে না হাওরপাড়ের : ফসলহারা, ঘরহারা তাঁরা
প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ জুন ২০১৭, ২:১৭ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
‘খেতের ধান ডুবি যাওয়ায় তাইনের (স্বামী) মাথা ধরা। পরে তুফানে (ঝড়ে) ঘরও ভাঙছে। এখন খাওন নাই, থাকার জায়গা নাই। কেউ একটা চাউল, একটা টেখা দিয়া সায্য করছে না। খাইতাম কিলা আর ঘর বানাইতাম কিলা। তাইনের কুনু কামও (কাজ) নাই। অখন পাঁচ পুয়া-পুরি (ছেলেমেয়ে) নিয়া আরেক ঘরও থাকি।’
পাহাড়ি ঢলে বাঁধ ভেঙে হাওরের ফসল এবং ঝড়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে দিশেহারা কৃষক শফিকুল ইসলামের স্ত্রী দিলারা বেগম এভাবেই বলছিলেন তাঁদের চরম অসহায়ত্বের কথা। দিলারা বেগমের বাড়ি জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের নয়াহাটি গ্রামে। এই গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত ৬০টি পরিবারের অনেকেই এখনো কোনো ত্রাণ সহায়তা পাননি। গ্রামের ২১টি পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁরা কেউই ত্রাণ সহায়তা পাননি। সরকারের বিশেষ ভিজিএফ সহায়তার তালিকায় তাঁদের নাম নেই। ফজলু মিয়া (৬০) ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমাদের গ্রামে ১৫-১৬টি পরিবার চাল ও টাকা পাইছে। এর মাঝে এক পরিবারে দুজনও আছে। বাকিরা পায়নি। চেয়ারম্যান-মেম্বারেরা দেইখা দেইখা তালিকায় তাদের লোকের নাম দিছে।’
দিলারা বেগম বলছিলেন, তাঁর স্বামী প্রতিদিন সকালে কাজের সন্ধানে বের হন। কাজ পেলে খাবার জোটে, না হলে চার মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে উপোস থাকেন। দিলারার স্বামী শফিকুল ইসলামের ভাই ইয়াজুল ইসলাম হাওরে ফসলহানির পর পরিবার নিয়ে কাজের সন্ধানে ঢাকায় চলে গেছেন। এখন নিজের ঘর না থাকায় ইয়াজুলের ঘরে থাকেন দিলারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ (সুনামগঞ্জ সদর-বিশ্বম্ভরপুর) পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের অর্ধেকের বেশি এখনো সহায়তার বাইরে আছেন। যে কারণে সমস্যা হচ্ছে, নানা অভিযোগও উঠছে। অবস্থা এতটাই সংকটাপন্ন যে ত্রাণ সহায়তার প্রচলিত ধারণার বাইরে কিছু করার চিন্তা করতে হবে।