ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বাসের অপেক্ষা : ভোগান্তিতে অর্ধলক্ষাধিক মানুষসহ শিক্ষার্থীরা
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ জুন ২০১৭, ৬:২২ অপরাহ্ণ
ছনি চৌধুরী, হবিগঞ্জ থেকে:
অপেক্ষার প্রহর যেন শেষ হয়না ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার স্থানীয় বাসিন্দাদের। স্কুল কলেজে পড়ুয়া ছাত্রছাত্রী গাড়ির অপেক্ষায় দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে। কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বাসের জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষার প্রহর গুনতে হয় তাদের। সময় মতো আসছেনা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের চলাচল গামী হবিগঞ্জ টু আউশকান্দি লোকাল মিনি বাস। দেরি করে আসলেও যথাসময় ক্লাস ধরতে পারছেনা শিক্ষার্থীরা। কারো হাতে কারো পিঠে স্কুল ব্যাগ নিয়ে বাসের অপেক্ষায় স্কুলে কলেজে যাওয়ার সময়টা পার করে দিচ্ছে মহাসড়কে। জানা গেছে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে মাত্র ৯টি হবিগঞ্জ টু আউশকান্দি পরিবহণের মিনি বাস চলাচল করে যা তুলনায় অনেকংশে কম । স্কুল কলেজ মাদ্রাসার পাশাপাশি চরম সংকটময় সময় এবং বন্দি দশায় জীবন যাপন করছেন ঐতিহ্যবাহী পাহাড়ি অঞ্চল দিনারপুর পরগণার তিনটি ইউনিয়নের গ্রামীণ জনপদের অর্ধলক্ষাধিক লোকজন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করার পর যখন বাস আসে তখন স্বল্প আসনের কারণে অনেকেই দাড়িঁয়ে ঝুলে ঝুলে যেতে হয়। প্রায় সময় দেখা যায় জীবনের ঝুকিঁ নিয়ে বাসের উপরে উঠে যেতে দেখা গেছে । ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে হচ্ছে পাহাড়ি অঞ্চল দিনারপুর পরগণা এই পরগণার সুনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দিনারপুর উচ্চ বিদ্যালয়,দিনারপুর কলেজ,দিনারপুর দাখিল মাদ্রাসা,পানিউমদা রাগীব-রাবেয়া স্কুল এন্ড কলেজে এই ৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিনই.. দেবপাড়া ইউনিয়নের,গোপলার বাজার, ভানুদেব, বিজনারপার, যিটকা,সদরঘাট, ইসলামপুর, দেবপাড়া, নলসুজা, মাঠ বনগাঁও,রুদ্রগ্রাম,আইনগাঁও, গজনাইপুর ইউনিয়নের, কায়স্থগ্রাম,লোগাঁও,মামদপুর, শিলালেরপুঞ্জি, শংঙ্করসেনা,শেখেরপাড়া, বনগাঁও,কান্দিগাঁও,টিলাপাড়া, দেওপাড়া, সাতাইহাল,কুড়াগাঁও,এবং পানিউমদা ইউনিয়নের, ভরচড়,রুকনপুর,বরকান্দি,বড়গাঁও, পানিউমদা,কুড়াগাঁও, সহ প্রায় ৩৫টি গ্রামের সাড়ে ৩ হাজার ছাত্রছাত্রী মহাসড়ক দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসা যাওয়া করে থাকে। অন্যদিকে সচেতন মহল দাবী করছেন, প্রশাসনিক ভাবে যদি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে এই হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ কমবেনা । ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দ্রুত গতিতে কত বাস আসে যায় কিন্তু স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রী দেখলে নিদিষ্ট ষ্ট্যান্ডে বাস থামেনা। এভাবে ঘন্টা দুই এক দাড়িয়ে থেকেও গাড়িতে উঠতে পারেনা অনেকেই। এসব সমস্যা এখন নিত্যদিনের। এতে করে সাধারণ শিক্ষার্থী সহ মহাসড়কে যাতায়াতকারী সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিদিন। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের উভয় পাশে অনেক সুনামধন্য স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা রয়েছে। আর এইসব প্রতিষ্টানের নেই কোনো নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা। পরিবহন সমস্যার কারণে অসংখ্য শিক্ষার্থী বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন সরকার কতৃক নিষিদ্ধ যানবাহন সিএনজি(অটোরিকশা) করে যাতায়াত করে। এতে করে অনেক সময় ঘটে দূর্ঘটনা। শিক্ষার্থীদের জন্য নেই কোনো ব্যতিক্রমী ব্যবস্থা, শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে এক নৈরাজ্যের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে হাইওয়ে পুলিশের চেক পোষ্ট থাকায় সরকার কতৃক নিষিদ্ধ সিএনজিসহ ৩চাকার যানবাহন গুলো পুলিশের তাড়ায় অবিরত ঘটাচ্ছে দূর্ঘটনা। অনেক সময় প্রাণের ভয়ে সিএজিতে উঠছেনা ছাত্রছাত্রীরা। দিনারপুর কলেজের চলমান এইসএসসি পরীক্ষার্থী সৈরত আহমেদ সুরমানিউজকে জানান, প্রতিদিন আমরা ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়াইয়া থাকি কিন্তু বাসের দেখা মিলেনা । পরীক্ষাকেন্দ্রে যাইতেও দেরি ঐই যায়, পানিউমদা রাগীব-রাবেয়া স্কুল এন্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র শাহ রুবেল সুরমানিউজকে বলেন, আমরা কলেজে যাওয়ার লাগি গাড়ির জন্য খুব কষ্ট করতে অয় আমরা নিয়মিত ক্লাস ধরতে পাররাম না এ সমস্যা দূর না করলে অনেক কষ্ট করতে অইবো আমরার। এ চরম অবস্থায়, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকস্থরের শিক্ষার্থীদের যাতায়াত কঠিন হয়ে পড়েছে। এই জটিল সমস্যা সমাধানের জন্য সংসদ সদস্য, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ সকল প্রশাসনিক কর্মর্কতার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ।