মানবপাচার কারী লাবণী সিলেটের জেলে
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ জানুয়ারি ২০১৭, ২:৫৩ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
মানবপাচার চক্রের মূল হোতা ভয়ঙ্কর নারী লাভলী আক্তার লাবণী। সে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার আলোচিত তারেক অপহরণের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় অন্যতম আসামি। লাবণী কুড়িগ্রাম জেলার চর রাজিবপুর থানার নয়ারচরের রেজাউল করিমের স্ত্রী। সে উত্তরার দক্ষিণখানের সুবার বাড়ি রোডের আবদুল গফুর বিল্ডিং ৯৬-২ তৃতীয় তলায় বসবাস করে। সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের স্বপ্ন দেখিয়ে আমেরিকা, কানাডাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লোক পাঠানোর নামে প্রতারণা করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। লাবণী তার চক্রের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিদেশ গমনের ইচ্ছুকদের সংগ্রহ করে ভিসা সংগ্রহের কথা বলে ভারতে পাঠায়। সেখানে তাদের জিম্মি করে নির্যাতন চালিয়ে মুক্তিপণ আদায় করে। তার চক্রের খপ্পরে পড়ে অনেকে প্রাণ হারালেও এসব কাহিনী রয়ে যায় লোক চক্ষুর আড়ালে। আবার কেউ প্রাণে রক্ষা পেলেও তাকে নিঃস্ব হতে হয়। শত শত লোক এই ভয়ঙ্কর নারীর লালসার শিকার। এর মধ্যে দক্ষিণ সুরমার তারেকুল ইসলাম একজন। তারেকের পূর্ব পরিচিতির ভিত্তিতে লাবণী চক্র গত বছরের ১লা ডিসেম্বর সিলেটে বেড়াতে আসেন। তখন তারা তারেককে সিলেট কদমতলী বাস টার্মিনাল থেকে তাদের সঙ্গে ঢাকা নিয়ে আসে। ঢাকা নেয়ার পর লাবণীর স্বামী মো. রেজাউল করিম রেজা কানাডা নেয়ার কথা বলে তারেককে ভারতে নিয়ে একটি বদ্ধ ঘরে আটক রেখে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। এ সময় লাবণী আক্তার তার ব্যবহৃত মোবাইল সিম নং-০১৬৮৯৫২৮২৭৫ হতে তারেকের বাবা আবদুল আহাদকে জানান অপহৃত ভিকটিম তারেক কানাডায় চলে গেছে। এই বলে লাবণী তারেকের বাবার কাছ থেকে অপর এক আসামি সমর দাসের একাউন্টে (নং-১১০৫২০২৭৯৩০৬২০০১) মেসার্স বিনা এন্টারপ্রাইজ, ব্র্যাক ব্যাংক লি. কেটিজি শাখা, চট্টগ্রামে ১ লাখ টাকা আদায় করে। পরবর্তীতে এস এ পরিবহনের মাধ্যমে আরো দেড় লাখ টাকা লাবণীকে দেন তারেকের বাবা। টাকা পাওয়ার পর এ চক্র আবদুল আহাদকে ঢাকায় এসে তার ছেলে অপহৃত তারেককে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলে। তখন আবদুল আহাদসহ সানুর আহম্মেদ ও হাসানসহ ঢাকায় গেলে লাবণীর সহযোগীরা আরো দশ লাখ টাকা দাবি করে। তারেকের বাবা আবদুল আহাদ তার পুত্রকে উদ্ধারের জন্য লাবণী, শামীম আহমদ, লিটন ও সমর দাসকে আসামি করে গত ১৮ই ডিসেম্বর সিলেট অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। এরই প্রেক্ষিতে লাবণীকে রাজধানী ঢাকার দক্ষিণ খান এলাকা থেকে গত শনিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১ এর একটি দল ও দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় লাবণীর বাসায় বিভিন্ন মানুুষের পাসপোর্ট, জাল ভিসার কাগজপত্র উদ্ধার করে। পরে দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ তাকে নিয়ে সিলেটে আসে এবং আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করে। এ সময় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ ৭ দিনের রিমান্ড চায়। বর্তমানে লাবণী সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছে। আবদুল আহাদের দায়ের করা মামলার আইনজীবী মোহাম্মদ বুরহান উদ্দিন জানিয়েছেন, আসামি লাবণীর আইনজীবীর আবেদনের প্রেক্ষিতে আগামী রোববার শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত। সুত্র মানব্জমিন