সিলেট জেলায় দল গোছাচ্ছে আওয়ামী লীগ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ মে ২০২৪, ১:৪২ অপরাহ্ণ
ওয়েছ খছরুঃ
ইউনিয়ন, জাতীয় সংসদ এবং উপজেলা নির্বাচনের পর সিলেট জেলায় নতুন করে দল গোছানো শুরু করবে আওয়ামী লীগ। সে লক্ষ্যে ইতিমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। কয়েকটি উপজেলায় জেলার নির্দেশে ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা হচ্ছে। জেলার নেতারা জানিয়েছেন- কয়েকটি উপজেলা কমিটি অনেক আগেই মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। নির্বাচনের কারণে সেগুলোর সম্মেলন করা যায়নি। অনেক উপজেলায় ভারপ্রাপ্তদের দিয়েই চলছে কার্যক্রম। এ অবস্থায় উপজেলা নির্বাচনের পর ইউনিয়ন সম্মেলন শুরু করা হবে। এরপর উপজেলা কমিটি গঠনে হাত দেয়া হবে। চলতি বছরের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা এসব কাজ শেষ করতে চান বলে জানিয়েছেন। ২০১৯ সালে সাবেক কমিটির কার্যক্রমে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে তীব্র অসন্তোষ ছিল।
এতে ওই কমিটির নেতারাও বিতর্কিত হন। একই সঙ্গে মহানগরের কমিটি নিয়ে ক্ষোভ ছিল। দলের ভেতরে দ্বন্দ্ব, বিবাদ চরম আকার ধারণ করেছিলো। এ কারণে ওই বছরের ৫ই ডিসেম্বর সম্মেলনের মাধ্যমে এডভোকেট লুৎফুর রহমানকে সভাপতি ও নাসির উদ্দিন খানকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়।
অর্ধাঙ্গ কমিটি করার এক বছরের মাথায় ২০২১ সালের ৮ই জানুয়ারি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটিতে সিনিয়র সহ-সভাপতি করা হয় সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরীকে। কমিটি পূর্ণাঙ্গ হওয়ার পর এডভোকেট লুৎফুর রহমান মারা গেলে শফিকুর রহমান চৌধুরী সভাপতি হন। দলের নেতারা জানিয়েছেন- সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিয়ে এবার সন্তুষ্ট কেন্দ্রের নেতারা। একই সঙ্গে তৃণমূলেও ক্ষোভ নেই। সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান সিলেটের কার্যক্রমে গতি আনেন। এবং কয়েকটি উপজেলায় সম্মেলন করে দলকে শক্তিশালী করেন। ফলে জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির ওপর নেতাকর্মীদের অসন্তুষ্টির মাত্রা অনেক কম। সভাপতি শফিক ও সাধারণ সম্পাদক নাসিরের টিমওয়ার্কের সঙ্গে বর্তমান কমিটির নেতারা একজোট থাকায় দলের অভ্যন্তরে কোন্দলও আগের তুলনায় কমেছে। এছাড়া; আগের মতো এমপিরাও এ কমিটির কার্যক্রমের বিরোধিতা করছেন না। সিনিয়র নেতারা জানিয়েছেন- ইউনিয়ন নির্বাচন, জাতীয় নির্বাচনে দলের ভেতর থেকে একাধিক প্রার্থী থাকায় তৃণমূলের নেতাদের মধ্যে কিছুটা মান-অভিমান আছে। কোথাও কোথাও কোন্দলের পরিমাণ বেড়েছে।
এই অবস্থায় উপজেলা নির্বাচন নিয়ে নেতাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা এসব বিষয় পর্যবেক্ষণ করে নতুন করে জেলায় দল গোছানোর তাগিদ অনুভব করেছেন। ইতিমধ্যে বেশির ভাগ উপজেলা কমিটিকে ওয়ার্ড পর্যায়ে সম্মেলন ও কাউন্সিল করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে উপজেলা নির্বাচনের মধ্যে উপজেলায় ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শেষও হয়েছে। উপজেলা নির্বাচনের পরপরই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনে হাত দেয়া হবে। ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের নিয়ে ইউনিয়ন কমিটি গঠন করতে চান সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা। তারা জানিয়েছেন- তৃণমূলে দল যতো শক্তিশালী হবে, উপজেলা ও জেলায়ও আরও বেশি শক্তিশালী হবে। এছাড়া- যেসব নেতা নানা কারণে বিতর্কিত হয়েছেন বা হচ্ছেন তাদেরকে দলে নেয়া হবে না। এজন্য জেলার নেতারা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছেন।
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান জানিয়েছেন- সিলেট জেলার কয়েকটি উপজেলা কমিটির মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। কোথাও কোথাও ভারপ্রাপ্ত দিয়েই চলছে কার্যক্রম। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে উপজেলার সম্মেলন করার চিন্তা-ভাবনায় রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, বিশ্বনাথ, ওসমানীনগর, জকিগঞ্জ সহ আরও কয়েকটি উপজেলা। তিনি জানান- উপজেলা নির্বাচন শেষ হলে ইউনিয়ন সম্মেলনে হাত দেয়া হবে। এরপর উপজেলার বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। চলতি বছরের মধ্যে সাংগঠনিকভাবে সিলেট জেলায় আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করতে এ কাজগুলো করা হবে বলে জানান তিনি।-মানবজমিন