সিলেটের জিন্দাবাজারে প্রকাশ্যে খুন : ৪৮ ঘন্টায়ও গ্রেপ্তার হয়নি কেউ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ নভেম্বর ২০১৬, ৯:২৬ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
সিলেট নগরীর জিন্দাবাজারে প্রকাশ্যে যুবক হত্যার পর কেটে গেছে ৪৮ ঘন্টা। শনিবার সন্ধ্যায় হত্যার পর রোববার রাতে মামলা দায়ের হলেও এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তবে প্রতিবাদ জানিয়েছে নিহত মিসবাহর বন্ধুরা।
শনিবার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জিন্দাবাজারের কাস্টমস অফিসের সামনে প্রকাশ্যে মিসবাহ উদ্দিন নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় রোববার রাতে নগরীর কোতোয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের মা। মিসবাহ’র ‘বন্ধু’ কবীরকে প্রধান আসামী করে এবং অজ্ঞাতনামা আরো ৬/৭জনকে আসামী করে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কোতোয়ালী থানা পুলিশ।
এদিকে হত্যার পর ৪৮ ঘন্টা কেটে যাওয়ার পরও পুলিশ সন্দেহভাজন মূল আসামী কবিরকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি বলে অভিযোগ নিহতের স্বজনের। তবে পুলিশ বলছে, ঘটনার পরপরই হত্যাকারীকে গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর রয়েছে, এবং দ্রুতই আসামীকে গ্রেপ্তার করা হবে।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহেল আহমদ জানান, মামলা দায়ের হয়েছে, পুলিশও আসামী গ্রেপ্তারে সচেষ্ট রয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করা হবে।
এদিকে সোমবার বিকেলে নগরীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সম্মুখে মানবন্ধনের মাধ্যমে মিসবাহ’র হত্যাকারী কবিরের গ্রেপ্তার দাবি করেছে মিসবাহ’র বন্ধুরা। এ সময় মিসবাহর স্বজনেরাও উপস্থিত ছিলেন।
রবিবার নিহতের চাচা রেজাউল করিম সেবুল বলেছিলেন, মিসবাহকে খুনের পর বন্ধু-সহপাঠীদের মাধ্যমে কবির নামে এক বন্ধুর সঙ্গে তার বিরোধ ছিল বলে জানতে পেরেছি। কবির নামের ওই ছেলেটি নগরীর জিন্দাবাজারের কাজী ম্যানশনের একটি টেইলার্সে কর্মচারী বলে জানিয়েছেন তিনি। কবিরের সঙ্গে মিসবাহের যোগাযোগ ছিল বলে তারা আগে জানতেন না। গত রমজানে কবিরের সঙ্গে মিসবাহের বিরোধ হলে মার্কেটের ব্যবসায়ীরা তা মিটমাট করে দেন বলে জানান রেজাউল করিম। পরবর্তীতে আর কোন বিরোধ না হলেও কবিরের নেতৃত্বে ৬-৭ জনের উপস্থিতিতে মিসবাহকে খুন করা হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে তিনি দাবি করেন।
গত শনিবার রাত ৮ টায় নগরীর জিন্দাবাজারে খাদ্য অফিসের সামনে মিসবাহকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে খুন করা হয়। ওসমানী হাসপাতালে নেওয়ার আগে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয় বলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান। খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য একই হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
লাশের সুরতহাল প্রসঙ্গে কোতোয়ালি থানার ওসি সোহেল আহমদ বলেন, নিহতের গলার বাম পাশে ধারালো অস্ত্র দিয়ে একটি মাত্র কোপ মারা হয়েছে।
সিলেট কমার্স কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করা নিহত মিসবাহ উদ্দিন দোয়ারাবাজারের চন্ডিপুরের রহমত উল্লাহের ছেলে। বাবা জার্মান প্রবাসী হওয়ায় পড়ালেখার জন্য মা ও দুই বোনের সঙ্গে সে নগরীর মজুমদারী কোনাপাড়ার শ্রাবণী ৫৪ নম্বর বাসার ভাড়া থাকতেন। এক বছর আগে এইচএসসি পাস করলেও সেবার ভালো কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেননি মিসবাহ, তবে এ বছর তার ভর্তি হওয়ার কথা ছিল।