প্রাথমিক সমাপণী পরীক্ষা দিচ্ছেন ৬৩ বছরের বাছিরন
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ নভেম্বর ২০১৬, ৪:১৭ পূর্বাহ্ণ
অদম্য শিক্ষার্থী এই বাছিরন নেছা গাংনী উপজেলার হোগলবাড়িয়া গ্রামের মৃত রহিল উদ্দীনের স্ত্রী। তিনি একই গ্রামের মৃত বাদল আলীর মেয়ে। বাছিরনের রয়েছে দুই মেয়ে ও এক ছেলে। আছে পাঁচটি নাতি-নাতনি। ছেলে মহিরউদ্দীনের সংসারে থেকে তিনি লেখা পড়া করছেন। ভবিষ্যৎ স্বপ্ন স্কুল ড্রেসে মাধ্যমিক পাস করে কলেজে লেখাপড়া করার। বাছিরন জানান, নিজের ছেলে-মেয়েকে পড়ালেখা শেখাতে পারিনি। তাই মনের মধ্যে জেদ ছিলো। আমার নাতি-নাতনির সাথে লেখাপড়া শিখবো। মনের সেই যন্ত্রণা থেকেই প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছিলাম। দ্বিতীয় শ্রেণীতে রোল নং-৬, তৃতীয় শ্রেণীতে ৫ ও চতুর্থ শ্রেণীতে রোল নং-৪ ও পঞ্চম শ্রেণীতে রোল নং-৪ হয়েছে বলে জানালেন তিনি। বাছিরন বলেন, আমার এখন একটাই স্বপ্ন হাইস্কুলে লেখাপড়া করবো। হায়াত থাকলে কলেজে পড়ারও ইচ্ছা প্রকাশ করেন। বাছিরন জানান, পুত্রবধূ জাহানারা খাতুন তার লেখাপড়ার ব্যাপারে সহযোগিতা করে থাকে। একমাত্র ছেলে মহিরউদ্দীন ও অনার্স পড়–য়া নাতি জসিম তাকে পড়ালেখার ব্যাপারে উৎসাহ ও সহযোগিতা করে থাকে। ক্লাসের সহপাঠীরা তাকে বাছিরন বাছিরন ও তুই তুকারি করে ডাকাডাকি করে কথা বলে। এ জন্য তার মনে কোন ক্ষোভ নেই। বরং সে আরো উল্লসিত হয়ে তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে খেলাধুলায় মেতে ওঠে। আর সবার মতো স্কুল ছুটি শেষে হৈ-হুল্লা করতে করতে ক্লাস থেকে তিনিও বের হয়ে যান। এভাবেই তিনি তার হারিয়ে যাওয়া দিনগুলো খুঁজে পেতে চান ।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হেলাল উদ্দীন আহমেদ জানান, বাছিরন নেছার লেখাপড়া নিয়ে তার পরিবারের সদস্যরাও উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন। পাড়া-প্রতিবেশীরাও উনাকে উৎসাহ দিয়ে থাকে। প্রধান শিক্ষকের বিশ্বাস ৫ম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষায় তিনি ভালো ফলাফল অর্জন করবেন। বাছিরন যাতে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে পারে্ন এ জন্য তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন। গাংনী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আকবর আলী বাছিরন নেছার প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে বলেন সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতো তিনিও প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেবেন।