নিশ্চুপ রাগীব আলী!
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ নভেম্বর ২০১৬, ১০:০২ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
সন্ধ্যা ৫টা ৪৫ মিনিটে আদালতে হাজির করা হয় রাগীব আলীকে। ৬ টা ২০ পর্যন্ত এজলাসে ছিলেন তিনি। পুরোটা সময় একটি স্টিলের চেয়ারে বসা ছিলেন তিনি। তবে এই ৩৫ মিনিট পুরো নিশ্চুপ ছিলেন রাগীব আলী।
যাকে নিয়ে এতো কথা, এতো আলাচনা-সমালোচনা সেই শিল্পপতি আদালতে অবস্থানকালে একটি কথাও বলেননি। এমনকি আদালত থেকে জেলহাজতে নেওয়ার সময় নিরব রাগীব আলী।
তারাপুর চা বাগান দখলে ভূমি জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিলেট অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর বিচারিক হাকিম উম্মে শারাবান তাহুরা তাঁর জামিন আবেদন খারিজ করে তাকে কারাগারে পাঠাবার নির্দেশ দেন।
৬টা ২০ মিনিটে তার জামিন শুনানী শেষে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। আদালতের শুনানীর এ ৩৫ মিনিট সময় রাগীব আলী নিরব ও নির্লিপ্ত হয়ে বসেছিলেন বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবীরা।
ভারতে পলাতক থাকা অবস্থায় ভারতীয় ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর বৃহস্পতিবার করিমগঞ্জের ইমিগ্রেশন পুলিশ সদরদপ্তরে মেয়ার বাড়াতে যাওয়ার পর রাগীব আলীকে আটক করে ভারতের ইমিগ্রেশন পুলিশ। পরে সুতারকান্দি সীমান্তে বিএসএফ-বিজিবির মাধ্যমে বিয়ানীবাজারের থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে ভারত। তারপর বিশ্বনাথ থানার মাধ্যমে রাগীব আলীকে সিলেট আদালতে নিয়ে আসা হয়।
জামিন শুনানীকালে রাগীব আলীর পক্ষের আইনজীবীরা পুনঃসাক্ষ্য গ্রহণের আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করে আগামী তারিখ ৪ ডিসেম্বর নির্ধারণ করেন বলে জানান আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। তবে পত্রিকা প্রকাশনা সংক্রান্ত অপর একটি মামলায় তাকে জামিন প্রদান করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। আদালতের কাছে রাগীব আলীর আইনজীবীরা ডিভিশন প্রার্থনা করলে কারাগার কর্তৃপক্ষকে আদালত কারাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থাগ্রহণের নির্দেশ দেন বলেও জানান তিনি।
রাগীব আলীর পক্ষে আইনজীবী হিসেবে আদালতে শুনানী করেন অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম, অ্যাডভোকেট মঈনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট এএইচ এরশাদুল হক ও অ্যাডভোকেট শাহ মো. ফরিদ। রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাবলিক প্রসিকিউটর মিসবাহ উদ্দিন সিরাজসহ একাধিক আইনজীবী।
রাগীব আলীর বিরুদ্ধে তারাপুর চা বাগানের দেবোত্তর সম্পত্তি ভূমি জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে দখল করার দুটি মামলা এ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। জিআর মামলা নং ৭৭৪/২০০৫ ও ১১৪৬/২০০৫। রাগীব আলীর বিরুদ্ধে মামলা দুটি ২০০৫ সালে দায়ের করে সিলেট সদর উপজেলার তদানীন্তন ভূমি কমিশনার। এছাড়াও রাগীব আলীর বিরুদ্ধে পলাতক থাকা অবস্থায় তার প্রকাশিত স্থানীয় দৈনিক সিলেটের ডাক পত্রিকার প্রকাশক পদ ধারণের জন্য আরেকটি মামলা (সিআর ১১১০/২০১৬) পরিচালিত হচ্ছে।
ভূমি সংক্রান্ত দুটি মামলায় রাগীব আলী ও তার ছেলেসহ অভিযুক্ত ৬জনের বিরুদ্ধে গত ১০ আগস্ট গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করলে ওইদিনই ভারতে পালিয়ে যান রাগীব আলী ও তার ছেলে আবদুল হাই। পরে সিলেটে প্রবেশকালে গত ১০ অক্টোবর আবদুল হাইকে আটক করে পুলিশ। পরে আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন। এ মামলার আরেক আসামী ও তারাপুর বাগানের সেবায়েত পংকজ কুমার গুপ্ত বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। এছাড়াও মামলায় রাগীব আলীর মেয়ে রোজিনা কাদির, মেয়ের জামাই আবদুল কাদির ও আত্মীয় দেওয়ান মোস্তাক মজিদ এখনো পলাতক রয়েছেন।