হযরত আল্লামা ফুলতলী (রহ.) এর কবরের মাটি ব্যবহার করে ৭বছর পর ফিরে এসেছে যুবতীর বাকশক্তি
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ নভেম্বর ২০১৬, ১১:১০ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
হযরত আল্লামা ফুলতলী (রহ.) এর কবরের মাটি ব্যবহার করে ৭বছর পর বাকশক্তি ফিরে পেয়েছে খাদিজা আক্তার শারমীন (২৪) নামের এক যুবতী। সে ছাতক উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের তকিপুর গ্রামের দিনমজুর মাসুক মিয়া ও সুফিয়া দম্পত্তির একমাত্র কন্যা। ঘটনাটি গত রোববার রাতে তকিপুর বসত বাড়িতে ঘটেছে। এমন সংবাদ পেয়ে ওই বাড়িতে জড়ো হচ্ছেন নারী-পুরুষ ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজন।
জানা যায়, খাদিজা আক্তার শারমীন ছোট বেলায় সুস্থ্য ছিল। স্থানীয় তকিপুর হাউলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাইমারি পাশ করে গোবিন্দগঞ্জ বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত লেখা-পড়া করেছে। সে মেধাবীও ছিল। এর মধ্যে সে হঠাৎ রোগে আক্রান্ত হয়ে ৮ম শ্রেণীর পরিক্ষা দিতে পারেনি। এদিকে দিনমজুর পরিবার তাকে বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে নিয়ে চিকিৎসা করা হলেও সে কোন প্রকার উন্নতি লাভ হয়নি। এক পর্যায়ে সে বাকশক্তি হারিয়ে ফেলে। এ অবস্থায় পরিবারটি একদম অসহায় হয়ে পড়ে। আশ্রয় নেয় একাধিক কবিরাজের কাছে। সকলেই তাকে তাবিজ-কবজসহ চিকিৎসা দিলেও কোন সফলতা আসেনি। অবশেষে রোববার সিলেটের প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন, শামছুল উলামা আল্লামা ফুলতলী (রহ.) বাড়িতে গিয়ে তাঁর কবরের মাটি ও ছাতকের নোয়ারাই ইউনিয়নের টেঙ্গারগাঁও গ্রামের হাফেজ সাহেবের কবরের মাটি মিশ্রন করে মাথা ও গলায় তাবিজ হিসেবে ব্যবহার করানো হয়। এতে ওই দিন রাত প্রায় ১০টার দিকে ফুলতলী থেকে তকিপুরে বসত ঘরে পৌঁছার পর ভাঁত খাব বলে তার মাকে বলে শারমীন। এসময় পরিবারের সকল সদস্যরা আল্লাহু আকবার বলে উঠলে পাড়ার লোকজন তাকে একনজর দেখতে ভিড় জমায়। এখন সে কথা বলতে পারলেও স্মৃতিশক্তি পুরোধমে আসেনি। সোমবার রাতে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, শারমীনের মা সুফিয়া বেগম ও চাচি সেবা বেগম মিলে তাকে রাতের ভাত খাওয়াচ্ছেন। আর তার সাথে কথা বলছেন। সেও উত্তর দিচ্ছে মাঝে মধ্যে। তবে স্মৃতি শক্তি কম। ঝুপড়ি ঘরের কোনায় বসে রয়েছেন তার পিতা মাসুক মিয়া। পাশে রয়েছেন নাহিদ নামের ৬বছরের তার এক মাত্র শিশুপুত্র। এক ছেলে ও এক মেয়ের ওই পিতাকে জিজ্ঞাসা করার পর তিনি বলেন- আল্লাহর দয়ায় এবং ফুলতলী (রহ.) ও টেঙ্গারগাঁও হাফেজ সাবের কবরের মাটির গুণে প্রায় ৭বছর পর মেয়ে এখন মুখ দিয়ে কথা বলতে পারছে। মাকে মা, বাবাকে বাবা বলছে। তবে সকলকে ছিনতে পারছে না। সুস্থ্য হতে আরো কিছুদিন সময় লাগবে। এতোদিন মেয়েটি হাতে-কলমে এবং ইঙ্গিতে-ইশারায় তার মনের ভাব প্রকাশ করতো। একমাত্র মেয়েটির মুখে কথা বলা শুনে এখন তিনি খুব খুশি। তিনি বলেন- অনাহারে, অর্ধহারে, ভাঙ্গা ঘরে বসবাস করে, না খেয়ে না পরে মেয়ের চিকিৎসায় সকল অর্থ ব্যয় করেছেন। শুধু রয়েছে ভিটে-মাটি। মেয়ের চিকিৎসার জন্য তিনি ব্যাংক থেকে ঋণও গ্রহণ করেছেন। কালারুকা দাখিল মাদরাসার সুপার মাওলানা মাহবুবুর রহমান বলেন- এমন খবর পেয়ে তিনি দেখতে এসেছেন। ছাহেব কিবলা ফুলতলী (রহ.) ছিলেন আল্লাহ পাকের প্রকৃত একজন ওলী ও নবী (সা.) প্রেমী। এ জন্য আল্লাহ পাক উনার কবরের মাটিকেও আজ সম্মানীত করে রেখেছেন। যে মাটি ব্যবহার করে বাকশক্তি ফিরে পেয়েছে এই শারমীন।