তদন্তে খাদিজার সাথে বদরুলের ‘প্রেমের’ সত্যতা পায়নি পুলিশ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ নভেম্বর ২০১৬, ৯:৪০ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
কলেজ ছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিসকে কোপানোর পর শাবি ছাত্র (বহিস্কৃত) বদরুল আলমের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিলো, খাদিজার সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। তবে পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে এর কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।
মঙ্গলবার চাঞ্চল্যকর এই মামলার অভিগপত্র প্রদানের পর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহপরাণ থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই) হারুন-উর-রশিদ বলেন, খাদিজার সঙ্গে বদরুলের দাবি অনুযায়ী প্রেমসংক্রান্ত কোনো তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায়নি। খাদিজাকে ধারাবাহিকভাবে উত্ত্যক্ত করার একপর্যায়ে বদরুল কুপিয়েছেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, এমনটি জানান তদন্তকারী কর্মকর্তা।
গত ৫ অক্টোবর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদানকালেও বদরুল দাবি করেছিলেন, খাদিজার সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্পর্কের টানাপোড়েনে তিনি রাগের মাথায় চাপাতি দিয়ে কুপিয়েছেন।
তবে খাদিজার পরিবারের সদস্যরা প্রথম থেকেই এমন দাবি অস্বীকার করে আসছেন। তাদের দাবি, গৃহশিক্ষক হিসেবে খাদিজাদের বাড়িতে ছিলেন বদরুল। এসময় খাদিজাকে উত্যক্তের কারণে তাকে বিদেয় করে দেওয়া হয়। বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার পরও উত্যক্তের কারণে এলাকাবাসী গণপিটুনিও দিয়েছিলো বদরুলকে।
খাদিজার সিলেট সদর উপজেলার হাউসা গ্রামের সৌদিপ্রবাসী মাসুক মিয়ার মেয়ে। সিলেট সরকারী মহিলা কলেজের স্নাতক (পাস) শ্রেণীর ছাত্রী তিনি। বদরুল আলম শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসম্পাদক ছিলেন। ঘটনার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বদরুলকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। তাঁর বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার মানিজ্ঞাতি গ্রামে।
গত ৩ অক্টোবর সিলেট এমসি কলেজে খাদিজাকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন বদরুল। এমসি কলেজে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন খাদিজা। ঘটনার পরপরই জনতা ধাওয়া করে বদরুলকে ধরে পুলিশে দেন। খাদিজাকে সংকটাপন্ন অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন।
এ ঘটনার পরদিন ৪ অক্টোবর খাদিজার চাচা আবদুল কুদ্দুস বাদী হয়ে বদরুলকে একমাত্র আসামি করে হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। গ্রেপ্তার হওয়া বদরুল ৫ অক্টোবর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে ঘটনার দায় স্বীকার করেন।
মামলার একমাস পাঁচদিন পর মঙ্গলবার সকালে চাঞ্চল্যকর এই মামলায় বদরুলকে একমাত্র আসামী করে অভিযোগ পত্র প্রদান করে পুলিশ।
মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) জেদান আল মুসা বলেন, অভিযোগপত্রে ৩৬ জনকে সাক্ষী রাখা হয়েছে। আলামত হিসেবে খাদিজাকে যে চাপাতি দিয়ে কোপানো হয়েছে সেই চাপাতি, খাদিজার রক্তমাখা জামা ও ঘটনার তিনটি ভিডিও ফুটেজ আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।