অবশেষে খাদিজা হত্যাচেষ্টা মামলার চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ নভেম্বর ২০১৬, ১:১৭ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবি) ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলমকে একমাত্র আসামী করে কলেজছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিস হত্যাচেষ্টা মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) সকালে সিলেট মহানগর মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে মামলার অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহপরাণ থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই) হারুন-উর-রশিদ।
চার্জশিট প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করে মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) জেদান আল মুসা বলেন, এ মামলায় একজনকে আসামী ও ৩৬ জন সাক্ষী রাখা হয়েছে। এর মাধ্যমে দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।
সিলেট মহানগর মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের পিপি মফুর আলী বলেন, আগামী ১৫ নভেম্বর মামলার নির্ধারিত তারিখে চার্জশিটের উপর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। আদালত চার্জশিট গ্রহণ করলে মামলার বিচার কাজ শুরু হবে।
গত ৩ অক্টোবর এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে সিলেট সরকারী মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজাকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে আহত করে শাবি ছাত্র বদরুল আলম। বদরুল শাবি ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক।
খাদিজার উপর হামলার ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বদরুলের দ্রুত শাস্তি নিশ্চিতের দাবি ওঠে সর্বত্র। দেশজুড়ে বিক্ষোভ-প্রতিবাদের মুখে সরকারের উচ্চ মহল থেকেও বদরুলের দ্রুত শাস্তি নিশ্চিতের আশ্বাস দেওয়া হয়।
খাদিজার উপর হামলার পরপরই বদরুলকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন এমসি কলেজের শিক্ষার্থীরা। ৪ অক্টোবর এ ঘটনায় নগরীর শাহপরান থানায় মামলা দায়ের করেন খাদিজার চাচা আব্দুল কুদ্দুস। ৫ অক্টোবর হামলার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন বদরুল।
হামলার পর খাদিজাকে উদ্ধার করে প্রথমে ওসমানী হাসপাতাল ও পরে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ১০ দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর ১৩ অক্টোবর খাদিজার লাইফ সাপোর্ট খুলে নেওয়া হয়। খাদিজার অবস্থা এখন উন্নতির পথে।
সরকারের পক্ষ থেকে খাদিজার চিকিৎসার ব্যয় বহনের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আর শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বদরুলকে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
উল্লেখ্য, বদরুল এক সময় খাদিজাদের বাড়িতে লজিং হিসেবে থাকতেন। এর আগে নারীকে উত্যক্ত করার কারণে গণপিটুনিও খেয়েছিলেন বদরুল। গত ৩রা অক্টোবর সিলেটের এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলমের হামলায় গুরুতর আহত হন খাদিজা আক্তার নার্গিস। বদরুলের ধারালো অস্ত্রের এলোপাতাড়ি আঘাতে খাদিজার মাথার খুলি ভেদ করে মস্তিষ্ক জখম হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে পরদিন তাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই দিনই স্কয়ার হাসপাতালে খাদিজার মাথায় অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকরা। এ ধরনের রোগীদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা শতকরা ৫ ভাগ। কিন্তু চিকিৎসকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় ক্রমেই উন্নতি হচ্ছে খাদিজার। তার অবস্থার উন্নতি হওয়ায় ১৩ই অক্টোবর লাইফ সাপোর্ট খুলে দেয়া হয়। এরপর আঘাতে ‘মাসল চেইন’ কেটে যাওয়া তার ডান হাতে অস্ত্রোপচার করা হয় ১৭ই অক্টোবর। এ ঘটনায় খাদিজার চাচা আবদুল কুদ্দুস বাদী হয়ে সিলেট শাহপরাণ থানায় বদরুল আলমকে আসামি করে মামলা করেন। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতা বদরুল ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।