ওসমানীনগরের জুলির পরকীয়া : একান্ত অভিসারের ডকুমেন্টও আমার কাছে!
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ অক্টোবর ২০১৬, ১:৪৪ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
‘৩ বছর ধরে সেলিম মেম্বার আমার সঙ্গে অবাধে মেলামেশা করেছে। তার সঙ্গে পরকীয়ায় আমার সংসার ভেঙেছে। তার সন্তান এখন আমার কোলে। কিন্তু এখন সে আমাকে ভুলে নতুন করে সংসার পেতেছে।’- সিলেটে ওসমানীনগরের উমরপুর ইউনিয়নের মাটিহানি গ্রামের বাসিন্দা জুলি বেগম সিলেটে সংবাদ সম্মেলন করে একই এলাকার সাবেক মেম্বার সেলিম আহমদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেছেন। বলেছেন, ‘দুবার সেলিম মেম্বারের অনৈতিকতার বিরুদ্ধে থানায় এজাহার
দিয়েছি। কিন্তু প্রতিবারই সমঝোতার কথা বলে টালবাহানা করেছে।’ জুলি বেগমের বয়স ৩৫ বছর। মাটিহানি গ্রামের মো. দেলোয়ার মিয়ার স্ত্রী। আর সেলিম আহমদ একই এলাকার মেম্বার। জুলি বেগম জানিয়েছেন, প্রায় ৩ বছর আগে স্বামী দেলোয়ারের সঙ্গে তার পারিবারিক বিরোধ বাধে। আর এই বিরোধের মীমাংসা করতে সেলিম মেম্বার আমার বাড়িতে আসে। এরপর থেকে সেলিম আমার ওপর নজর দেয়। প্রায় সময় মোবাইল ফোনে কথা বলে। স্বামীর সঙ্গে ঝগড়ার কারণে এক সময় সেলিম মেম্বার আমাকে একান্তে পাওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠে। এমনকি বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এরপর থেকে লোকচক্ষুর অন্তরালে সেলিম মেম্বারের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। জুলি বেগম বলেন, একদিন গ্রামের এক লোক আমাকে ও সেলিম মেম্বারকে অশালীন অবস্থায় দেখতে পায়। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার কারণে সেলিম মেম্বার আমাদের বাড়িতে আসতো না। তবে, সে প্রায়ই বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার জন্য প্রলোভন দেখাত। তার প্রলোভনে পড়ে স্বামীকে বুঝিয়ে তাজপুরে একটি বাসা ভাড়া নিই। ওই বাসার নিচতলায় ছিল সেলিম মেম্বারের দোকান। নতুন বাসায় ওঠার পর সেলিম মেম্বার আমার বাসায় বেশি বেশি আসা-যাওয়া করে। সেলিমকে ঘিরে স্বামীর সঙ্গে আমার দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হয়। একপর্যায়ে বাসা পরিবর্তন করে আমরা নতুন বাসায় উঠি। কিন্তু ওই বাসায়ও সেলিম মেম্বার যাওয়া-আসা শুরু করে। এ সময় সেলিম মেম্বারকে বারণ করলে সে জানায়, ‘আমাকে ছাড়া সে প্রাণে বাঁচবে না।’ সেলিমের সঙ্গে সম্পর্ক হওয়ার কারণে স্বামী দেলোয়ারও বাসায় আসা-যাওয়া বন্ধ করে দেয়। প্রায় দেড় বছর স্বামীর সঙ্গে মেলামেশাও বন্ধ ছিল। কিন্তু সেলিম মেম্বারের সঙ্গে অবাধে মেলামেশার কারণে আমি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ি। বিষয়টি সেলিম মেম্বারকে জানালে সে জানায়- ‘চিন্তা করো না, তোমার জন্য আমি জীবন দিতে পারি।’ জুলি জানান, প্রায় ৬ মাস আগে একদিন সন্ধ্যায় আমার স্বামী বাসায় আসে। সে এসে আমাকে ও সেলিম মেম্বারকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে মারধর শুরু করে। এ সময় সেলিম মেম্বার নিজেকে রক্ষা করতে বাসার দোতলা থেকে লাফ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় ডাকাত-ডাকাত বলে চিৎকার দিলে স্থানীয় লোকজন সেলিম মেম্বারকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। ওই সময় ওসমানীনগর থানার দারোগা অনুজ বাবু সেলিম মেম্বারের সঙ্গে আমার অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি জিজ্ঞেস করলে আমি অস্বীকার করি। সেলিম মেম্বারের লোকজনের প্ররোচনায় পড়ে ওই দিন এ কথা বলায় সেলিম মেম্বার থানা থেকে জামিনে মুক্তি পায়। এ ঘটনার পর আমার স্বামী দেলোয়ার ক্ষুব্ধ হয়ে মৌখিকভাবে আমাকে ৩ তালাক দেয়। এদিকে, এ ঘটনার কিছু দিন পর সেলিম মেম্বার একজন ইমাম ও চারজন লোক নিয়ে আমার ভাড়া বাসায় আসে। এরপর আমার ও সেলিম মেম্বারের মধ্যে আকদ সম্পন্ন হয়। আকদের পর সেলিম মেম্বারকে বারবার বিয়ের কাবিন দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করলেও সে কাবিন দেয়নি। এদিকে, ২২শে সেপ্টেম্বর আমার কোলজুড়ে কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করে। এ সন্তান সেলিম মেম্বারের সঙ্গে মেলামেশার ফসল বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন জুলি বেগম। বলেন, সন্তান জন্মানোর পর ১৪ই অক্টোবর সেলিম মেম্বার মোল্লাপাড়া গ্রামের এক মেয়েকে বিয়ে করেছে। বিয়ের দিনই আমি এসআই অনুজকে বিষয়টি জানালে তিনি বিয়ের সেন্টারে গিয়ে সেলিমের কাছে বিষয়টি জানতে চান। এ সময় সেলিম ও তার লোকজন বিষয়টি আপস করার কথা বলেন। বিয়ের পরদিনই ওসমানীনগর থানায় এসআই অনুজ আমাকে ও সেলিম মেম্বারকে ডেকে নেন। দুজনের বক্তব্য শোনার পর দারোগা অনুজ সেলিম মেম্বারকে জরিমানা প্রদান করে বিষয়টি মীমাংসার প্রস্তাব করলে আমি সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছি। সংবাদ সম্মেলনে জুলি বেগম বলেন, আমি পাপ করতে পারি কিন্তু শিশুটি নিষ্পাপ। এ কারণে সেলিম মেম্বারের কাছে দাবি জানিয়েছি- শিশুটির পিতৃত্ব মেনে নিতে। এবং আমাকে স্ত্রী হিসেবে ঘরে তোলার জন্য। কিন্তু সেলিম মেম্বার এখন টালবাহানা করছে। টাকার বিনিময়ে একটি শিশুর পিতৃপরিচয় মুছে দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জুলি বেগম বলেন। তিনি বলেন, সেলিম মেম্বার ও আমার তিন বছরের সম্পর্কের বিষয়টি মাটিহানি এলাকা ও তাজপুরের অনেকেই জানে। পাশাপাশি আমাদের একান্ত অভিসারের ডকুমেন্টও আমার কাছে রয়েছে। আমি ন্যায়বিচার চাইবো। পুলিশ আমার অভিযোগ আমলে না নেয়ায় এখন আমি আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছি।