ভোলাগঞ্জে দু’দফা অভিযানে ১৮টি বোমা মেশিন ধ্বংস
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ আগস্ট ২০১৬, ১:০০ অপরাহ্ণ
কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি :
সিলেটের ভোলাগঞ্জ রোপওয়ের সংরক্ষিত এলাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান চালানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিনে ও রাতে দু’দফা অভিযান চালিয়ে ১৮টি বোমা মেশিন ধ্বংস করা হয়েছে। এর মধ্যে দিনের বেলা ১১টি এবং রাতের বেলা ৭টি বোমা মেশিন ধ্বংস করা হয়।
সূত্র জানায়, দিনের বেলার অভিযানে খবর বোমা মালিকরা আগে ভাগেই পেয়ে যায়। এ কারণে অনেকেই তাদের মেশিন সরিয়ে ফেলে। তবুও দিনের বেলার অভিযানে ১১টি মেশিন ধ্বংস করা হয়। এদিকে, দিনভর অভিযানের পর রাতেও ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারী এলাকায় অভিযান চালানো হয় । রাত ৯টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী অভিযান চালিয়ে আরো ৭টি বোমা মেশিন ধ্বংস করা হয়েছে। অভিযানের নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল হক। অভিযান পরিচালনার জন্য তাকে হবিগঞ্জ থেকে আনা হয় বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
গতকাল জেলা রিজার্ভ পুলিশের ১শ’ সদস্য নিয়ে অভিযানে নামেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল হক। এছাড়া, কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের উদ্যোগে দিনের বেলা অভিযান চালানো হয়। বেলা ১১টা থেকে রোপওয়ে এলাকায় শুরু হওয়া অভিযান বিকেল পর্যন্ত চলে। এ সময় রোপওয়ে এলাকায় ১১টি বোমা মেশিন পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। পরে রাত ৯টা থেকে আবারো অভিযান শুরু করা হয়। এ সময় ভোলাগঞ্জের ১০নং এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরো ৭টি বোমা মেশিন ধ্বংস করা হয়। অভিযানের পর রোপওয়ে এলাকা আপাত বোমা মেশিনমুক্ত হয়েছে। তবে, সংরক্ষিত এই এলাকা থেকে পাথর উত্তোলন একেবারে বন্ধে সংশ্লিষ্টদের কার্যকর পদক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এদিকে, আজ শুক্রবার থেকে ভোলাগঞ্জে প্রশাসন, র্যাব, পুলিশ, বিজিবি এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে সেখানে টাস্কফোর্সের অভিযান পরিচালিত হতে পারে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি বায়েছ আলম জানান, অভিযান অব্যাহত থাকবে। আজ থেকে টাস্কফোর্স তাদের অভিযান শুরু করবে। পরিবেশ ধ্বংসকারীদের কোন ধরণের ছাড় দেয়া হবে না।
সূত্র জানায়, রোপওয়ের সংরক্ষিত এলাকার অংশ জুড়ে এবং তার উত্তর ও পূর্ব-পশ্চিমে ভারতের সীমান্ত ঘেঁষা এলাকায় গত কয়েক দিন ধরে দেড় শতাধিক মেশিন সচল ছিল। অভিযান শুরু হতে জানতে পেরে অনেকেই বুধবার রাতেই মেশিন সরিয়ে নেয়। জানা যায়, বোমা চক্রের অপরিনামদর্শী কর্মকান্ডের ফলে সেখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিনষ্টের পাশাপাশি হুমকীর মুখে পড়েছে রোপওয়ের সংরক্ষিত এলাকা (বাংকার)। অভিযোগে রয়েছে, বাংকারের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আরএনবি (রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী) নেপথ্যে থেকে এখানে বোমা মেশিন চালানোর সুযোগ করে দিচ্ছে। এ ব্যাপারে সম্প্রতি রেলমন্ত্রী বরাবর জনৈক ব্যক্তি একটি অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে রেলমন্ত্রীর কাছে।
স্থানীয় পশ্চিম ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ মো. জামাল উদ্দিন বলেন, রোপওয়ে একটি ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা। এটি রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। বোমা মেশিন দিয়ে নির্বিচারে পাথর উত্তোলনে এর অস্তিত্ব হুমকীর মুখে পড়েছিলো।