ভারত থেকে যুক্তরাজ্যে রাগীব আলী!
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ আগস্ট ২০১৬, ৬:৪৩ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
জাল কাগজপত্রের মাধ্যমে তারাপুর চা বাগানের দেবোত্তর সম্পত্তিতে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের মাধ্যমে হাজার কোটি টাকার ভূমি আত্মসাৎ ও প্রতারণার আলোচিত দুটি মামলায় রাগীব আলী ও তার ছেলে-মেয়েসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে গত বুধবার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক (চিঠি) জালিয়াতির মামলায় রাগীব আলী ও তার ছেলে আবদুল হাইয়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। অন্যদিকে প্রতারণার মামলায় রাগীব আলী, তার ছেলে আবদুল হাই, জামাতা আবদুল কাদির, মেয়ে রুজিনা কাদির, রাগীব আলীর আত্মীয় মৌলভীবাজারের দেওয়ান মোস্তাক মজিদ, তারাপুর চা বাগানের সেবায়েত পঙ্কজ কুমার গুপ্তের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির খবর পেয়েই, গ্রেফতার এড়াতে ওইদিনই তড়িগড়ি করে রাগীব আলীর তার ছেলে আবদুল হাই, ছেলের স্ত্রী সাদিকা জান্নাত এবং জামিলুর রহমান, সাঈদ আহমদ, কামরুল হাসান ও জাহিদুল ইসলাম নামক চার ব্যক্তিসহ ভারতে পালিয়ে যান। সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে, কুশিয়ারা নদী পার হয়ে ভারতে পলায়ন করেন রাগীব আলী।
তবে রাগীব আলী ভারতে পালিয়েই থামছেন না! সূত্রের খবরানুযায়ী, ভারত থেকে যুক্তরাজ্যে যেতে পারেন রাগীব আলী।
সূত্র জানায়, রাগীব আলী বর্তমানে ভারতের শিলচরে তার ছেলে আবদুল হাইয়ের স্ত্রী সাদিকা জান্নাতের বাবার বাড়িতে আছেন। তবে বেশিদিন সেখানে অবস্থান করাটা নিরাপদ মনে করছেন না তিনি। তার ধারণা, ভারত বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্র। এজন্য গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকায় ভারতীয় পুলিশের সহযোগিতায় তাকে (রাগীব আলী) সেখান থেকে গ্রেফতার করে দেশে আনা হতে পারে। এজন্য যতো দ্রুত সম্ভব তিনি যুক্তরাজ্যে যেতে চান।
সূত্র আরো জানায়, যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব রয়েছে রাগীব আলী ও তার ছেলের। এজন্য তারা সেখানেই তাদের গন্তব্য ঠিক করেছেন। তাদের ধারণা, যুক্তরাজ্যে চলে যেতে পারলে বাংলাদেশের পুলিশ চাইলেও সেখান থেকে সহজে তাদের দেশে ফেরত আনতে পারবে না। তবে শেষমুহুর্তে যুক্তরাজ্য ছাড়া অন্য দেশেও যাওয়ার মনস্থির করতে পারেন রাগীব আলী।
এদিকে রাগীব আলীর ভারত পালিয়ে যাওয়া নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠছে। রাগীব আলীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির ‘দেড় ঘন্টার মধ্যে’ বিষয়টি জকিগঞ্জ কাস্টমসকে জানানো হয়েছিল বলে মন্তব্য সিলেটের পাবলিক প্রসিকিউটর মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের। তবে এ বিষয়ে ‘কিছুই জানেন না’ বলে মন্তব্য জকিগঞ্জ কাস্টমসের ইমিগ্রেশন অফিসার মোশারফ হোসেনের।
তিনি বলেন, ‘রাগীব আলীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির বিষয়টি আমরা জানতাম না।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রাগীব আলীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে পাবলিক প্রসিকিউটরের দেয়া তথ্যের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।’
প্রসঙ্গত, ৪২২ দশমিক ৯৬ একর জায়গার উপর তারাপুর চা বাগান পুরোটাই দেবোত্তর সম্পত্তি। আশির দশকে জালিয়াতির মাধ্যমে এটি দখলে নেন রাগীব আলী। এ নিয়ে চলা মামলার প্রেক্ষিতে আদালতে একটি রিট পিটিশনের ভিত্তিতে গত ১৯ জানুয়ারি তারাপুরে রাগীব আলীর দখলদারিত্বকে অবৈধ ঘোষণা করেন আপিল বিভাগ।