হাকালুকি হাওরে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাকে ঝাকে ইলিশ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ আগস্ট ২০১৯, ৬:২২ অপরাহ্ণ
স্বপন কুমার দেব :
দেশের সবচেয়ে বড় মিঠা পানির বিশাল জলরাশি সম্ভার হচ্ছে হাকালুকি হাওর। এবার এ হাওরে জেলেদের ফেলা জালে ধরা পড়ছে বড় বড় রুপালি ইলিশ। সাগর বা নদীর মাছ ইলিশ হলেও বর্ষা মৌসুমে হাকালুকিতে ছোট আকারের ইলিশ ধরা পড়ে। তবে এবছর বেশ বড় আকারের ইলিশ ধরা পড়ছে হাওরে।
মৎস্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের বিভিন্ন নদী ও হাওরে মিঠা পানিতে ইলিশের আবাসস্থল গড়ে উঠেছে। এ কারণে হাকালুকি হাওরেও ইলিশ মাছ পাওয়া যাচ্ছে। হাকালুকি সংলগ্ন ফেঞ্চুগঞ্জের কুশিয়ারা নদীতে যুগ যুগ ধওে ছোটবড় আকারের ইলিশ পাওয়া গেলেও মাছের স্বাদ ততটা ভাল নয় বলে স্থানীয় লোকজন জানান। তবে চলতি বছরে আগের বছরের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে বেশি ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। এত ইলিশ একসঙ্গে দেখে অবাক হাওর পাড়ের জেলেরা। হাকালুকি হাওরে প্রতিদিন ৫০-৬০টি জাল দিয়ে মাছ ধরছে জেলেরা। প্রতিটি জালে ২৫-৩০টি ইলিশ উঠে আসে। তবে জেলেরা ইলিশ ধরার কথা স্বীকার করতে চান না । তাদের ভয় ইলিশের কথা বেশি প্রচার হলে মাছ ধরা বন্ধ করে দিতে পারে প্রশাসন।
জানা যায়, হাকালুকির গৌড়কুড়ি বিলে জেলেদের জালে প্রতি টানে প্রায় ২৫- ৩০টি রুপালি ইলিশ জালে উঠে আসছে। এর মধ্যে ৩০০ থেকে ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ রয়েছে। এসব ইলিশ আশপাশের বাজারগুলোতে পাওয়া যায়। আকারভেদে এসব ইলিশ হাজার টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।
স্থানীয় মৎস্য বিভাগ সূত্র জানায়, গত কয়েক বছর হাকালুকিতে ইলিশ ধরা পড়লেও এ বছরের মতো এত বেশি ইলিশ আগে ধরা পড়েনি। কুলাউড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ জানান, তিনটি কারণে হাকালুকি হাওরে ইলিশ বেড়েছে। প্রথম কারণ হচ্ছে, যে নদীগুলোতে ইলিশ পাওয়া যায় তার সঙ্গে যোগসূত্র আছে পদ্মা-মেঘনার। এসব নদীর সঙ্গে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর যোগাযোগ রয়েছে। সেহেতু ইলিশের প্রজনন মৌসুমে পানি বেশি ছিল সেজন্য সুরমা- কুশিয়ারা নদী হয়ে হাকালুকিতে ঢুকেছে ইলিশ মাছ। দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে বিগত কয়েক বছর ধরে সরকার ইলিশ রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নিয়েছে সেজন্য বেড়েছে ইলিশ। ইলিশ বেড়েছে বলেই হাকালুকিতে ইলিশ মিলছে। তৃতীয় কারণ হচ্ছে, গত কয়েক বছর ধরে সাফল্য ধরে রেখেছে মৎস্য বিভাগ। ফলে হাকালুকিতে প্রতি বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি মাছ উৎপাদন হচ্ছে। আর সেকারণে হাকালুকি হাওরেও ধরা পড়ছে বড় আকারের ইলিশ।