ধরমপাশায় ২১টি প্রতিষ্ঠানের ফল বিপর্যয়, ব্যাখ্যা চেয়ে ইউএনওর চিঠি
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ মে ২০১৯, ২:৫৪ অপরাহ্ণ
ধরমপাশা প্রতিনিধি :
চলতি বছরে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষায় সব কটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফল বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেছে সুনামগঞ্জের ধরমপাশা উপজেলায়। উপজেলার ২১টি প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের কাছে এর কারণ ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান।
ইউএনওর স্বাক্ষরিত এ চিঠি গত বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানগুলোতে পৌঁছেছে। চিঠি প্রাপ্তির তিন দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের ২১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ১৭টি বিদ্যালয় ও ৪টি মাদ্রাসা। ৬ মে এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশিত হয়। সিলেট বোর্ডে পাসের হার ছিল ৭০.৮৩ এবং মাদ্রাসায় ছিল ৮০.০৩ ভাগ। এখানকার একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বোর্ডের পাসের হারকে অতিক্রম করতে পারেনি। বরং প্রতিষ্ঠানগুলোর পাসের হার বোর্ডের চেয়ে অনেক নিচে।
তথ্য নিশ্চিত করে বাদশাগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আলাল উদ্দিন চিঠি পাওয়ার বলেন, স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ৫৭ জনকে এলাকার কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তির সুপারিশের কারণে ফরম পূরণ করতে দেওয়া হয়। এই ৫৭ জনের মধ্যে মাত্র পাঁচজন পাস করেছে। স্কুলে পাসের হার ৫৮ ভাগ। ২০১৭ সালে ফসলডুবির ঘটনাও ফল বিপর্যয়ের জন্য দায়ী।
গলহা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিধান চন্দ্র তালুকদার বলেন, শিক্ষার্থীদের আসা-যাওয়া করার জন্য বর্ষাকালে নৌকার কোনো সুব্যবস্থা নেই। ফলে অনেক শিক্ষার্থীই বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকে। এ ছাড়া ২০১৭ সালে ফসলডুবির সময় অনেক শিক্ষার্থীই এলাকা ছেড়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে জীবনযুদ্ধে টিকে থাকার জন্য কাজের সন্ধানে অন্য এলাকায় চলে গিয়েছিল। এসব কারণেই ফল খারাপ হয়েছে। তবে আগামী দিনে ফল ভালো হবে বলে তিনি আশাবাদী।
জয়শ্রী উচ্চবিদ্যালয়ে পাসের হার ৩৭ শতাংশ। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ ফরিদ আহমেদ বলেন, পাশের একটি ‘আনরেজিস্টার্ড’ বিদ্যালয় থেকে এই বিদ্যালয়ে নিবন্ধন করে ২৪ জন এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। এর মধ্যে মাত্র চারজন পাস করেছে। ফল বিপর্যয়ের এটি অন্যতম কারণ।
খয়েরদির আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ শেখ সাইদুর রহমান বলেন, সব প্রতিষ্ঠানেরই এবার ফল খারাপ হয়েছে। শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি না নেওয়ার কারণেই এমনটি হয়েছে।
ইউএনও মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান বলেন, এটি হাওরবেষ্টিত উপজেলা। কী কী কারণে এই উপজেলায় এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষায় ফল বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেছে, সেই কারণগুলো ব্যাখ্যা করে লিখিতভাবে জানানোর জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী সময়ে ফল ভালো করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।