সিলেটে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে শ্রদ্ধা জানাতে যায়নি কেউ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ আগস্ট ২০২৪, ৮:৩৯ অপরাহ্ণ
সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশাল প্রতিকৃতি এখন সাদা কাপড়ে ঢাকা। শোকাবহ ১৫ আগস্টে আজ (বৃহস্পতিবার) কেউ শোক জানাতেও যায়নি এখানেও। যদিও নির্মাণের পর থেকে প্রতিবছর ১৫ আগস্টে এই শ্রদ্ধা নিবেদনের ভিড় লেগে যেতো।
২০২০ সালের ১৯ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর এই র উদ্বোধন করেন তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এরপর থেকে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও মৃত্যুবার্ষিকীতে এখানেই ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতেন সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ । তবে এবার পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকীতে এই ম্যুারলে কেউ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাননি। এমনকি সিলেট আওয়ামী লীগের কোনো নেতা কর্মীও বঙ্গবন্ধুর মুর্যালে ফুল দিয়ে যাননি।
বৃহস্পতিবার ( ১৫ আগস্ট) সকাল ১০টায় সিলেট নগরীর বন্দরবাজার এলাকাস্থ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে ছিল সুনশান নিরবতা। বর্তমান অর্ন্তবর্তিকালীন সরকার জাতীয় শোক দিবসের ছুটি বাতিল করার কারণে বৃহস্পতিবার এখানে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, সিলেট বিভাগীয় প্রশাসন, জেলা প্রশাসন, পুলিশ রেঞ্জ, মেট্রোপলিটন পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন, সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের কেউ এই ম্যুরালে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসেননি। এমনকি বঙ্গবন্ধুর ৪৯তম শাহাদৎ বার্ষিকীতে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মীও বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসেননি।
নগরীর বন্দরবাজার এলাকার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অপর প্রান্তে সিলেট জেলা পরিষদের কার্যালয়। এই কার্যালয়ের সামনেও বঙ্গবন্ধুর একটি ম্যুরাল রয়েছে। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান , সদস্যসহ অনেকে বঙ্গবন্ধুর এই ম্যুরালে শ্রদ্ধা নিবেদন করতেন। কিন্তু এবারের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানেরে এই ম্যুরালটিও সাদা কাপড়ে ঢাকা ছিল।
৫ আগস্ট গণ অভ্যুথানের পর থেকেই আতামগোপনে রয়েছেন সিলেটের জেলা ও জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের বেশিরভাগ নেতাকর্মী। এবার১৫ আগস্ট সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শুধুমাত্র দোয়া মাহফিল ও শিরণি বিতরণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মজির উদ্দিন এক ক্ষুদেবার্তায় দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলা হয়, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে সবাই নিরাপদ থাকবেন, সংগঠনে একে অন্যের প্রতি যোগাযোগ, সহমর্মিতা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বাজায় রেখে এই দুঃসময়কে মোকাবিলা করার জন্য ধৈর্য ও ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। তাছাড়া এই দুঃসময়ে আমাদের যারা শারীরিকভাবে আক্রান্ত হয়েছেন এবং যাদের বাড়িঘর, দোকানপাট ইত্যাদি পুড়েছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এসবের তালিকা করতে হবে এবং প্রমাণ হিসাবে ছবি তুলে রাখতে হবে। ইনশাআল্লাহ কেটে যাবে এই অমানিশা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলায়, জননেত্রী শেখ হাসিনার সঠিক নির্দেশনায় আওয়ামী লীগ আবারো ঘুরে দাঁড়াবে এই প্রত্যাশা রইলো।’
জেলা ও মহানগর আ.লীগের এই বার্তায় নেতাকর্মীদের হিংসাত্মক তৎপরতা থেকে বিরত থাকতে আরও বলা হয়, ‘বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, সবাইকে নিরাপদ থাকতে হবে এবং এই সংকটময় মুহূর্তে কোনো হিংসাত্মক তৎপরতায় যেন আমরা জড়িয়ে না পরি, সে দিকেও লক্ষ্য রাখা জরুরি।’