সিলেট থেকে শুরু হলো বসুন্ধরা গ্রুপ’র ‘কুরআনের নূর’ প্রতিযোগিতার অডিশন
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ নভেম্বর ২০২৩, ৫:৪১ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক ::পূণ্যভূমি সিলেট থেকেই শুরু হলো আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন বিষয়ক মেগা রিয়েলিটি শো ও প্রতিযোগিতা ‘কুরআনের নূর পাওয়ার্ড বাই বসুন্ধরা গ্রুপ’র দ্বিতীয় আসরের অডিশন। এতে অংশ নিয়েছে সিলেট বিভাগের অন্তত পাঁচ শতাধিক হাফেজ।
দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের সহযোগিতায় এ আয়োজনে দেশসেরা অনূর্ধ্ব-১৬ বছর বয়সী পবিত্র কুরআনের হাফেজদের সম্মাননা ও পুরস্কার দেওয়া হবে।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সকাল ৮টায় সিলেটের জামেয়া মাদানিয়া ইসলামিয়া কাজিরবাজার মাদরাসা প্রাঙ্গণে প্রতিযোগিতার রেজিস্ট্রেশন পর্ব শুরু হয়। তার আগে থেকে খুদে হাফেজদের মিলনমেলায় পরিণত হয় মাদরাসা প্রাঙ্গণ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের কুরআনে হাফেজদের উৎসাহ দিতেই এই আয়োজন। দেশসেরা হাফেজদের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছেন তারা। আর এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে চায় খুদে হাফেজরা।
এখানকার প্রতিযোগীদের প্রত্যাশা, সিলেটের সেরা থেকে দেশসেরা হয়ে বিশ্বে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করবে তারা। এর মাধ্যমে ইসলামের খেদমতের পাশাপাশি দেশের মুখও উজ্জ্বল করতে চায় তারা। আর এমন সুযোগ করে দেওয়ার জন্য বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা তাদের।
কুরআন মুখস্থ, তাজবিদের অনুসরণ, কণ্ঠের মাধুর্যতা—এ বিষয়গুলিকে প্রাধান্য দিয়েই সেরা হাফেজ নির্বাচন করছেন বিচারকেরা।
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম শায়খুল হাদিস মুফতি মুহিব্বুল্লাহিল বাকী আন নদভী প্রতিযোগিতার প্রধান বিচারকের দায়িত্ব পালন করছেন।
আয়োজকরা জানান, এবারের কুরআনের নূর প্রতিযোগিতায় জাতীয় পর্যায়ের প্রথম বিজয়ী পাবে ১০ লাখ টাকা ও সম্মাননা। দ্বিতীয় বিজয়ী পাবে সাত লাখ টাকা ও সম্মাননা। তৃতীয় পুরস্কার পাঁচ লাখ টাকা ও সম্মাননা। চতুর্থ ও পঞ্চম পুরস্কার দুই লাখ টাকা করে এবং সম্মাননা। এছাড়া ষষ্ঠ থেকে অষ্টম স্থান অর্জনকারী বাকি তিনজন পাবে এক লাখ টাকা করে আর্থিক পুরস্কার ও সম্মাননা। এবারও জাতীয় পর্যায়ের আট বিজয়ী, তাদের পরিবার ও ওস্তাদকে ওমরাহ পালনের জন্য সৌদি আরব পাঠানো হবে।
অন্যদিকে প্রতিযোগিতার আন্তর্জাতিক পর্যায়ের প্রথম বিজয়ী পাবে ১৫ লাখ টাকা ও সম্মাননা। দ্বিতীয় বিজয়ী পাবে ১০ লাখ টাকা ও সম্মাননা এবং তৃতীয় বিজয়ী পাবে পাঁচ লাখ টাকা ও সম্মাননা।
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ মুসল্লি কমিটির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মানিক বলেন, গত বছর দেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর সাহেবের সঙ্গে দেখা করি। তখন টিভিতে একটি রিয়েলিটি শো চলছিল। ওই সময় আমরা কুরআন প্রতিযোগিতার আয়োজনের কথা বলতেই তিনি তাৎক্ষণিকভাবে সেটি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত দিয়ে দেন। ফলে ওই বছর থেকেই এ প্রতিযোগিতা শুরু হয়। তবে সেবার ছোট পরিসরে করলেও এবার বড় পরিসরে আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, পবিত্র কুরআনের পাখিদের সহযোগিতা করা। একটা ছেলে জিপিএ-৫ পেলে পুরস্কৃত হয়। তাহলে আমাদের কুরআনের পাখিরা পাবে না কেন? গত বছর আমরা সফলভাবে অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে পেরেছি। এ বছরও আমরা শুরু করেছি। এবার ব্যতিক্রম হচ্ছে, গতবার ছিল কেবল জাতীয় পর্যায়ে, এবার একটা জাতীয় পর্যায় হবে, একটা হবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ১৫টি দেশকে আমন্ত্রণ করেছি। এসব দেশ থেকে যতজন পাই, তাদের নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কুরআনের নূর প্রতিযোগিতা হবে। আর দেশে প্রতিযোগীদের মধ্যে যারা জাতীয় পর্যায়ে উন্নীত হবে, তারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে।
সিলেট অঞ্চলের অডিশন সকাল ৯টায় শুরু হয়। এতে অংশ নিয়েছে সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের পাঁচ শতাধিক প্রতিযোগী।
অনুষ্ঠানে শুরুতেই বিভিন্ন স্থান থেকে আগত প্রতিযোগীদের কার্ড ও ব্যাজ পরিধান করিয়ে দেওয়া হয়। এরপর প্রতিযোগীরা একে একে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করে। পরে সবাইকে সারিবদ্ধভাবে বসিয়ে সকালের নাস্তা সরবরাহ করেন আয়োজকরা। এরপর ক্রমান্বয়ে শুরু হয় প্রতিযোগিতা। তারপর প্রতিযোগীদের পাঁচটি ভাগে ভাগ করে যাচাই-বাছাই করা হয়।
প্রথম পর্বের অধিবেশন শেষে জুমার নামাজের বিরতি দিয়ে বেলা ২টা থেকে দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়। দ্বিতীয়ার্ধের আয়োজন বিকেলেই শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।