পাগলিটা মা হলেন, বাবা হলো না কেউ!
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:২৫:২১,অপরাহ্ন ২৩ জানুয়ারি ২০২৩
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
ফুটফুটে নিষ্পাপ ছেলেশিশুটি হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে মিটিমিটি হাসছে। রবিবার দুপুরে তার জন্ম হয়। শিশুটি জন্ম নিয়েছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুর মুক্তিযোদ্ধা চত্ত্বর এরাকায় রাস্তার পাশে। তাও আবার নাম পরিচয় বিহীন এক পাগলির গর্ভে।
সকালে সন্তান সম্ভবা এক পাগলি মায়ের প্রসববেদনার গগনবিদারী চিৎকার ভারি করে তুলছিল জগদীশপুর মুক্তিযুদ্ধা চত্ত্বর এলাকা থেকে চিৎকারের শব্দ শুনে ছুটে গিয়েছিলেন কিছু স্থানীয় মহৎ ব্যক্তি। এটা নির্মম জীবন বাস্তবতায় এক ফুটফুটে মানবশিশুর পৃথিবীতে আসার গল্প, যা ফেসবুকে লিখেছেন নোয়াপাড়া সৈয়দ সইদ উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজ এর সহকারী শিক্ষক হাবিবুর রহমান তার ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসের সূত্র ধরেই জানা গেল গল্পের বিষয়বস্তু এখন মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
রোববার (২২ জানুয়ারী) সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা মাধবপুর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মনজুর আহসান কে ফোনে জানান জেলার মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুর মুক্তিযোদ্ধা চত্ত্বর এলাকায় সন্তান সম্ভবা এক পাগলি মায়ের প্রসববেদনার গগনবিদারী চিৎকারের খবর ।
খবর পেয়ে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মনজুর আহসান মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে নার্স ও এম্বোলান্স সহ এসে মা ও ছেলেকে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
এসময় ঢাকা থেকে হবিগঞ্জ যাওয়ার পথে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের যুগ্ন সচিব জাকিয়া পারভীন, হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. নুরুল হক,সহকারী পরিচালক ডা. রওশন জাহান এবং আখতার জাহান খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে নেমে মা ও নবজাতকের খবর নেন।
স্থানীয়দের মতে,সে প্রায় কয়েক দিন ধরে মানসিক অসুস্থ অবস্থায় জগদীশপুর এলাকায় ঘোরাঘুরি করতেন। প্রসববেদনার চিৎকার শুনে স্থানীয়রা উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মনজুর আহসান কে সংবাদ দিলে তিনি নবজাতকসহ মা কে উদ্ধার করে মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। বর্তমানে মা ও শিশু দুজনেই সুস্থ আছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইশতিয়াক আল মামুন বলেন,খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছি তাৎক্ষনিক ভাবে জগদীশপুর ইউনিয়নের স্বাস্থ্য কর্মীরা নব জাতক ও মা কে সেবার ব্যবস্থা করেছে।
এর মধ্যেই খবর পেয়ে মাধবপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. শাহজাহান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুর আহসান, মাধবপুর থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক,পুলিশ পরিদর্শক আতিকুল ইসলাম,শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান,সমাজ সেবা কর্মকর্তা আশরাফ আলী নবজাতকসহ পাগলিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে দেখে গেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুর আহসান বলেন নবজাতকের মা যেহেতু মানসিক ভারসাম্যহীন এবং বাবার পরিচয় নেই সেহেতু তার লালন-পালনের জন্যে সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে শিশুটির ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা হবে।