নবীগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতা হত্যা মামলার আসামী হাবিব পেলেন নৌকা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ অক্টোবর ২০২১, ৬:৪৯ অপরাহ্ণ
নবীগঞ্জ প্রতিনিধি :
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে চেয়ায়ম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেন হত্যা,জালিয়াতি,ইউএনওকে লাঞ্চিত করাসহ একাধিক মামলার আসামী হাবিবুর রহমান হাবিব।
মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থীদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়।
২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে বিজয়ী বর্তমান চেয়ারম্যান জাবেদুল আলম সাজুকে বাদ দিয়ে নবীগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে হাবিবুর রহমান হাবিবকে মনোনয়ন দেয়ায় ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা সমালোচনা ঝড় উঠেছে।
হাবিবুর রহমান হাবিবের নেতৃত্বে ২০১৪ সালে ৩ মার্চ নবীগঞ্জ উপজেলার মেধাবী ছাত্রলীগ নেতা নেভেন চৌধুরী কুপিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে হত্যা করা হয়। ছাত্রলীগ নেতা হেভেন হত্যার মামলার প্রধান আসামী হাবিবুর রহমান হাবিব। মামলাটি বিচারাধীনের শেষ পর্যায়ে আছে।
২০১০ সালের ৭ মার্চ সকাল ১০ টায় হাবিবুর রহমান হাবিব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে সরকারী জলমহালের ইজারা আদায়ে বাঁধা সৃষ্টি করে। কাগজ পত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়। তৎক্ষালিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বর্তমানে সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের উপ-সচিব সুলতানা ইয়াসমীনকে জাত বংশ ইজ্জতে আঘাত করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। জলমহাল ইজারা কার্য গ্রহন করিলে রামদা দিয়ে টুকরো টুকরো করার হুমকি দেয়। এঘটনায় হাবিবের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। হাবিবুর রহমান হাবিবের বড় ভাই নবীগঞ্জ উপজেলা যুবদলের বড় মাপের নেতা জিতু মিয়া সেন্টু বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক এমপি শেখ সুজাত মিয়ার সহচর। এ সুবাধে দলীয় প্রভাব কাটিয়ে হাবিবুর রহমান হাবিব লন্ডন প্রবাসী শেখ আব্দুল গফুরের নবীগঞ্জ শহরস্থ বাসা, শেরপুর রোডের ব্যবসা প্রতিষ্টানসহ সহায় সম্বল দখল করে নেয়া, জাল দলিল সৃষ্টি করে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে শেখ আব্দুল গফুরের জমি বিক্রির ও অভিযোগ রয়েছে হাবিবুর রহমান হাবিবের বিরুদ্ধে। বিগত ২০১৫ সালের পৌর নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করে হাবিবুর রহমান হাবিব। হাবিবুর রহমান হাবিব জালিয়াতি মামলা (সিআর ৬৩/২১) এর ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীও বটে। বর্তমানে ফেরারি আসামী হিসেবে হাবিব পলাতক রয়েছে।
ওই মামলার বাদী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সোহা এন্টারপ্রাইজ এর কাছে নবীগঞ্জের বিবিয়ানা বিদ্যুৎ প্ল্যান্টের পুরাতন কন্টেইনার বিক্রির জন্য সাথে হাবিবুর রহমান হাবিব চুক্তি করে এবং সেখানে টেন্ডার দেয়ার জন্য ২০ লাখ টাকা আনেন। নিজেকে এমপির লোক এবং বড় নেতা হিসাবে পরিচয় দেয়ায় সরল বিশ্বাসে আমি তাকে টাকা দেই। কিন্তু পরে সে কোন মালও দেয়নি এবং টাকাও ফেরত দেয়নি। এক পর্যায়ে সে লেনদের অস্বীকার করে। আমি নিরুপায় হয়ে হবিগঞ্জের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দকে বিষয়টি জানালে তারও কোন প্রতিকার দিতে পারেননি। পরে আমি ব্রাক্ষণবাড়ীয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রতারণার মামলা দায়ের করি। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য আশুগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনার সত্যতা পেয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরে বিজ্ঞ আদালত হাবিবুর রহমান হাবিবের নামে সমন ইস্যু করলেও সে আদালতে হাজির না হলে বিজ্ঞ আদালতে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যু করেন’।
এদিকে হাবিবুর রহমান হাবিবের মনোনয়ন বাতিল চেয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন ২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে বিজয়ী বর্তমান চেয়ারম্যান জাবেদুল আলম চৌধুরী সাজু।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারন সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরী বলেন, গ্রেফতারী পরোয়ানার বিষয়টি আমারা আগে অবগত হলে আমরা প্রার্থীর তালিকা থেকে হাবিবের নাম বাদ দিতাম।
এবিষয়ে জানতে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।