বালাগঞ্জে কৃষি জমি নষ্টের পথে, ফসল উৎপাদনে বিপর্যয়ের আশঙ্কা
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ মার্চ ২০২১, ১০:৩২ অপরাহ্ণ
জাগির হোসেন, বালাগঞ্জ:
সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার নানান স্থানে নিচু জমি ভরাট, বাসা-বাড়ি তৈরীতে, ইটভাটায় ইট তৈরিসহ নানাবিধ কাজে ব্যবহারের জন্য অবাদে বিক্রি করা হচ্ছে ধানিজমির মাটি। শীতের এই সময়ে গৃহনির্মাণ, ইট তৈরিসহ নানা ধরনের কাজ বেড়ে যাওয়ায় জমে উঠেছে জমির মাটি বেচাকেনার ব্যবসা। এতে ভবিষ্যতে এলাকার ফসল উৎপাদনে বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা।
সরেজমিনে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, শীত মৌসুম শুরুর সঙ্গে সঙ্গে ফসলি জমির মাটি বিক্রি শুরু হয়েছে। আবাদি জমির ওপর থেকে এক থেকে দুই ফুট গভীর করে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। কৃষকদের কাছ থেকে এ মাটি কিনে একশ্রেণির ব্যবসায়ী এক্সেলেটর, তা ট্রাক্টর, ট্রাক ও ট্রলিতে করে নিচু জমি ভরাটের কাজে নিয়ে যাচ্ছেন। সাধারণত অভাবী কৃষকেরা এ মাটি বিক্রি করছেন বলে জানা গেছে।
মাটি কাটা শ্রমিকেরা বলেন, তাঁরা শীত থেকে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন জনের ধানি জমির ওপরের স্তরের দুই ফুট করে কেটে নিচ্ছেন। এই মাটির জন্য জমির মালিককে টাকা দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থা উপজেলার প্রায় সব ইউনিয়নে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন মাটি ক্রেতা বলেন, ‘আমরা কৃষকদের কাছ থেকে নগদ টাকায় মাটি কিনে নিচ্ছি। পরে তা শ্রমিক দিয়ে বা এক্সেলেটর মেশিন, ট্রাক, ট্রাক্টর ও ট্রলিতে তুলে নিয়ে যাই।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ধানি জমির মাটি বিক্রিকারী এক কৃষক বলেন, নগদ টাকার খুব দরকার ছিল। তাই জমির ক্ষতি হচ্ছে বুঝেও মাটি বিক্রয় করছেন।
উপজেলা কৃষিবিদ সুমন মিয়া বলেন, জমির উবর্রতা শক্তি ওপর থেকে গভীরে ১৫ থেকে ২০ ইঞ্চির মধ্যে থাকে। তাই ওপরের স্তরের মাটি সরিয়ে ফেলায় জমির উবর্রতা শক্তি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এসব জমির উর্বরতা শক্তি আগের মতো হতে কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ বছর লাগবে। তিনি আরও বলেন, ‘স্থানীয় কৃষকদের মাটি বিক্রির ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বারবার সচেতন করা হলেও তাঁরা আমাদের কথা শুনছেন না। নগদ টাকার আশায় তাঁরা মাটি বিক্রি করছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে একসময় ফসল উৎপাদন বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে। পরিশেষে কৃষি কর্মকর্তা উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা কর্মীর সহযোগিতায় ফসলি জমি বিনষ্টের হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব।