ক্ষনিক: চৌধুরী মাহবুব পলাশ’র অণুগল্প
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১:০৫ পূর্বাহ্ণ
চৌধুরী মাহবুব পলাশ:
এটা কি তোমার বেডরুম ? এইভাবে ঘুমাচ্ছ কেন ? ঘুমাচ্ছিলাম। কিন্তু এইধরনের প্রশ্ন সকাল ৭ টায় কে করবে ? চোখ মেলে তাকিয়ে দেখি একজন অপ্সরীকে। বিরক্তি মাখা চেহারা, কাধে একটা ট্রাভেল ব্যাগ, চোখে চশমা পরিহিতা একজন টিনেজার। দামী এক পারফিউমের গন্ধ নাকে ভেসে আসতে লাগলো। বুঝতে পারলাম যে সপ্নযোগে কেউ আমাকে এইসব কথা বলছে না। চোখ ডলতে লাগলাম। – কি আশ্চর্য !! এইভাবে কেন ঘুমাচ্ছ ? পাশের সীটটা আমার। এরপর যা ঘটল, তা ভুলার মত নয়। আমাকে ঠেলে- ঠুলে ধাক্কা দিয়ে মেয়েটা জানালার পাশে গিয়ে বসলো। কাধের ব্যাগটা খুলে উপরে গুছিয়ে রাখল। পুরোপুরি ঘুম ভাঙ্গলো আমার। সোজা হয়ে বসলাম। তাকিয়ে আছি মেয়েটার দিকে। চারপাশে তাকিয়ে দেখি সবাই ঘুমাচ্ছে। বাইরে হাল্কা বৃষ্টি প্রকৃতি নব রূপে সেজেছে। বৃষ্টির চাদরে আবৃত ভোর। একটা কথা বলা পাখি আমার পাশের সীটে। ভাগ্য অনুকূলে। কানে হেডফোন লাগিয়ে খুব সুন্দর করে মেয়েটা মাথা দোলাচ্ছে। তার দুলুনির তালে মন্ত্রমুগ্ধ হচ্ছি। কিন্তু অবাক করা বিষয় হলো মেয়েটিকে আমি চিনি না অথচ প্রথম কথাতেই
আমাকে তুমি করে সম্বোধন করলো। ভাব জমানোর চেষ্টা করব কিনা, ভাবতে লাগলাম। ঘুম থেকে উঠার পর একটা মানুষকে সবচেয়ে বেশি বিধ্বস্ত মনে হয় (আমার ধারণা)। তাই নিজেকে গুছিয়ে নিলাম। জোরে কেশে নিলাম। মেয়েটা তাকালো আমার দিকে।
একটা হাসি দিয়ে পরিস্থিতিটা কে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলাম। – আমি কল্প।ঢাকা যাচ্ছি ব্যবসার কাজে। কোনো ভাবান্তর দেখলাম
না মেয়েটার মধ্যে। ১৭ সেকেন্ড পর ঠোট দুইটা নড়ে উঠলো। সেই আগের মতই বিরক্তিমাখা চোখ দুইটা আমার চোখে পড়ল। অস্ফুট
স্বরে বলল…… – আমি অরণী। আমিও ঢাকা যাচ্ছি। এরপর কেটে যাচ্ছে নিষ্পাপ কত মুহূর্ত।