সিলেট জেলা ও মহানগর যুবলীগের সম্মেলন : অর্ধশত প্রার্থীর দৌড়-ঝাপ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ জুলাই ২০১৯, ২:৪৯ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
সিলেট জেলা ও মহানগর যুবলীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দিপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পদ প্রার্থীরাও সিলেটের সর্বত্র ছুটে বেড়াচ্ছেন কাউন্সিলরদের মন জয়ের আশায়। শুভেচ্ছা বার্তার পাশাপাশি তাদের কন্ঠে রয়েছে প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি। এবার নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে ভোটাভুটির মাধ্যমে। সম্মেলনের দিনক্ষণ নির্ধারণের সঙ্গে সঙ্গে ভোটে নেতৃত্ব নির্বাচন করার বিষয়টি চূড়ান্ত করেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। ২৭ জুলাই মহানগর যুবলীগের সম্মেলন আর জেলার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে ২৯ জুলাই।
সিলেট নগরের কেন্দ্রস্থলের রেজিস্টারি মাঠে সম্মেলনের প্রথম পর্ব শেষে রিকাবীবাজারের কবি নজরুল মিলনায়তনে হবে কাউন্সিল অধিবেশন। সংগঠনের শীর্ষ পদপ্রত্যাশী একাধিক হলে এ অধিবেশনে কাউন্সিলরা গোপন ব্যালটে ভোট দিয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করবেন। জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শামীম আহমদ সুরমানিউজ টুয়েন্টিফোরকে জানান, জেলা ও মহানগরের সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নেতারা ব্যালট বাক্স নিয়ে আসবেন। মনোনীত কাউন্সিলররা নেতৃত্ব নির্বাচনে ঐকমত্য না হলে সরাসরি ভোট হবে।
মহানগর ও জেলা যুবলীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ভোটারদের মন পেতে প্রার্থীরা দৌড়-ঝাপ শুরু করেছেন। পুরো জেলা জুড়ে কাউন্সিলর থাকায় নেতা-কর্মীদের আনাগোনায় মুখরিত হয়ে উঠছে মফস্বল এলাকাও। প্রার্থীরা নিজ নিজ যোগ্যতা উল্লেখ করে ইতোমধ্যে লিফলেট ও পরিচিতি প্রকাশ করেছেন। যা নিয়ে তাদের সমর্থকদের মধ্যে চাঁপা প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।
১৯৯২ সালের পর জেলা যুবলীগের সম্মেলন হয় ২০০৩ সালে। তবে সেখানে আর ভোট হয়নি। সমঝোতার ভিত্তিতে ওই সম্মেলনে জগদীশ চন্দ্র দাসকে সভাপতি ও আজাদুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠন করা হয়। এরপর আর সম্মেলন হয়নি। ২০০৮ সালে এক-এগারোর পরিবর্তিত রাজনৈতিক অবস্থায় জগদীশ ও আজাদুর সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করার সময় দলীয় পদ ত্যাগ করেন। তখন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবু তাহের কারাবন্দী হলে বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্বে থাকা শামীম আহমদ নেতৃত্বের হাল ধরেন। তিনি প্রায় ১১ বছর ধরে এ পদে আছেন।
মহানগর যুবলীগে সম্মেলন হয়েছিল ২০০৫ সালে। সৈয়দ শামীম আহমদ ও আবদুর রহমানের নেতৃত্বাধীন কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হলে ২০১৪ সালে কেন্দ্রীয়ভাবে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। আলম খানকে আহ্বায়ক করে ১১ সদস্যবিশিষ্ট এ কমিটিকে তিন মাসের মধ্যে সম্মেলন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু পাঁচ বছরেও মহানগর সম্মেলন হয়নি। সম্মেলন প্রস্তুতিতে থাকা যুবলীগের কেন্দ্রীয় সূত্র জানায়, মহানগরের সম্মেলনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনে কাউন্সিলরা ভোট দেবেন। নগরের ২৭টি ওয়ার্ডে ১৫ জন করে কাউন্সিলর ভোটার হিসেবে গণ্য হবেন। অন্যদিকে জেলায় বিভিন্ন উপজেলা কমিটিতে ২৮৩ জন কাউন্সিলর তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
১৯৯২ সালে সিলেট যুবলীগের সম্মেলনে প্রথমবারের মতো ভোটাভুটির মাধ্যমে গোলাম রব্বানী সভাপতি ও বিজিত চৌধুরী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। বিজিত চৌধুরী বর্তমানে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক।
জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শামীম আহমদ ও মহানগরের আহ্বায়ক আলম খান দুজনই সভাপতি পদে প্রার্থী হবেন বলে সুরমানিউজ টুয়েন্টিফোরকে জানিয়েছেন। তাঁদের প্রতিদ্বন্দ্বী আাছেন আরও অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী। শামীম বলেন, ‘দীর্ঘ ১১ বছর কঠিন সময়ে যুবলীগের হাল ধরে রাখার মূল্যায়ন হিসেবে আমি সভাপতি নির্বাচিত হব বলে মনে করছি।’ আলম খান বলেন, ‘যুবলীগকে আদর্শিক সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার প্রয়াস ছিল আমার। বিগত দিনে মহানগর যুবলীগ নিয়ে কোনো ধরনের বদনাম ছিল না। এ চেষ্টায় সফল বলে আমি কাউন্সিলরদের ভোট প্রত্যাশী।’